১২ নভেম্বর ২০১৭, রবিবার, ৮:০২

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে সরকার কর্তৃক পদত্যাগে বাধ্য করার নজিরবিহীন ঘটনা ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি করল

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আজ ১২ নভেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে সরকার কর্তৃক পদত্যাগে বাধ্য করার নজিরবিহীন ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি করল। এ ঘটনার দ্বারা আবারও প্রমাণিত হল যে, দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা না থাকলে সেখানে স্বৈরশাসনের আবির্ভাব ঘটে। বর্তমান সরকার দেশে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। জনগণের নাগরিক অধিকার হরণ করেছে। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। সর্বশেষে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নস্যাত করে দিয়ে দেশকে একদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র চূড়ান্ত করেছে। দেশের এ অবস্থায় কারো পক্ষে চুপ করে বসে থাকা সম্ভব নয়।

বর্তমান সরকার এসকে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। আবার এ সরকারই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির বেশ কিছু সুস্পষ্ট অভিযোগ এনেছে। এতে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে যে, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার জন্যই কী বর্তমান সরকার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দুর্নীতিবাজ এসকে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল? দেশবাসী অবগত আছেন যে, সিনহার নেতৃত্বে দেশের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। স্বার্থ হাসিল শেষে তিনি সরকারের পূর্ণ আজ্ঞাবহ না হওয়ার কারণেই আবার তাকে অসম্মান করে বিদায় করা হল। এতেই কী প্রমাণিত হয় না যে, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার জন্যই তাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল? সরকারের এহেন আচরণ বিচার বিভাগের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। আমি সরকারের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।

জাতীয় স্বার্থেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা উচিত। প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণের যে কলঙ্কিত ইতিহাস সরকার সৃষ্টি করেছে তা চলতে থাকলে এর বিরুদ্ধে দেশবাসী রুখে দাঁড়াতে বাধ্য হবে।”