সুপ্রীম কোর্টের রায় ও সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী, জাতীয় সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যে সব হুমকি-ধমকি, উস্কানীমূলক এবং আদালত অবমাননাকর মন্তব্য ছুঁড়ে দিচ্ছেন তার নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২৩ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সুপ্রীম কোর্টের রায় ও সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী, জাতীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যে সব হুমকি-ধমকি, উস্কানীমূলক, আদালত অবমাননাকর, অসৌজন্যমূলক এবং অশালীন মন্তব্য ছুঁড়ে দিচ্ছেন তা সম্পূর্ণ অন্যায়, অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত। তারা উস্কানীমূলক, বিষোদগারপূর্ণ ও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বক্তব্য দিয়ে শুধু আদালত অবমাননাই করছেন না, দেশের সংবিধানও লংঘন করছেন।
সংবিধান হলো দেশের সর্বোচ্চ আইন। আর সংবিধানের অভিভাবক হলো সুপ্রীম কোর্ট। সুপ্রীম কোর্টই হলো দেশের আইন ও সংবিধানের ব্যাখ্যা প্রদান এবং রায় প্রদানের যথাযথ কর্তৃপক্ষ। সুপ্রীম কোর্টের রায়ই চূড়ান্ত। সুপ্রীম কোর্টের কোন রায়ের ব্যাপারে সংক্ষুব্ধ পক্ষ রিভিউ আবেদন করতে পারেন। তবে সুপ্রীম কোর্ট রিভিউ আবেদনে যে রায় দিবেন, তাই চূড়ান্ত। সরকারী দলের নেতারা আইনের পথে না গিয়ে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের সময়-তারিখ বেধে দিয়ে অন্যায় আবদার জানিয়েছে। এ ধরনের কোন আচরণ কী কোন সভ্য, গণতান্ত্রিক দেশে চিন্তা করা যায়? সরকারী দলের নেতৃবৃন্দ যেভাবে আদালতের রায় এবং প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে আদালতের প্রতি জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হতে পারে। এতে দেশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।
সুপ্রীম কোর্টের রায় ও প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে উত্তেজনাকর, উস্কানীমূলক, অশালীন ও আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে মন্ত্রীগণ সংবিধান রক্ষার যে শপথ গ্রহণ করেছেন, তা ভংগ করছেন। সরকারই যদি আদালত অবমাননা করেন ও দেশের সংবিধান লংঘন করেন তাহলে এগুলো রক্ষা করবেন কে?
আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে এবং ভোট প্রদান ছাড়াই প্রহসনের নির্বাচন করে অনির্বাচিত লোকদের জাতীয় সংসদ সদস্য ঘোষণা করে সংসদীয় ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দিয়েছে।
বর্তমান সরকার একের পর এক সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে এখন বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সরকারের এ ষড়যন্ত্রের পরিণতি হবে মারাত্মক। এ সব বেআইনী, অযৌক্তিক ও উস্কানীমূলক তৎপরতা থেকে সরে এসে শুভবুদ্ধির পরিচয় দেয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”