১৫ অক্টোবর ২০১৬, শনিবার, ৫:৫৭

সরকারের কথিত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ব্যাপক দুর্নীতির খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

সরকারের কথিত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে সরকারী দলের নেতা-কর্মী, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপক দুর্নীতির খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ ১৫ অক্টোবর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকারের কথিত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে সরকারী দলের নেতা-কর্মী, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে ১০ টাকা কেজি দরের চালের হকদার প্রকৃত গরীব লোকেরা বঞ্চিত হচ্ছে।

কথিত ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির খবর জাতীয় দৈনিকসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরেও সরকার দুর্নীতি বন্ধের জন্য কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে দেখা যাচ্ছে যে, ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণের জন্য যে তালিকা করা হয়েছে তাতে বেশির ভাগই জায়গা করে নিয়েছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী, জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়-স্বজন, স্বচ্ছল, কর্মক্ষম ব্যক্তি, এমনকি সরকারী চাকুরীজীবীরাও। তালিকায় এমন অনেক নাম রয়েছে যাদের বাস্তবে কোন অস্তিত্বই নেই। সেই সব নামের চাল তুলে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভাগ-বাটোয়ারা করে লুটেপুটে খাচ্ছে। আর প্রকৃত গরীব লোকেরা তাদের নাম তালিকাভূক্ত করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের পেছনে পেছনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তারা হালে পানি পাচ্ছে না। চাল পাইয়ে দেয়ার নাম করে বহু লোকদের কাছ থেকে চাঁদা ও ঘুষ নেয়া হচ্ছে।

চাল বিক্রয়ে ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে অনেক কম দেয়া হচ্ছে। কার্ডধারী ব্যক্তিদের চাল না দিয়ে তা কালো বাজারে ও খোলা বাজারে বিক্রয় করে দেয়া হচ্ছে। চালের ডিলার নিয়োগের ক্ষেত্রেও ঘুষ-দুর্নীতি-দলপ্রীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। চাল বিতরণের ক্ষেত্রে বিধবা, তালাক প্রাপ্তা, স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা, হতদরিদ্র ও দুস্থ শিশুদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্ড দেয়ার জন্য তালিকাভূক্ত করার কথা থাকলেও তারা অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। ফলে সরকারের এ কর্মসূচি দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সরকার ও সরকারী দলের লুটপাট এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করে প্রকৃত হকদারের কাছে এ চাল পৌঁছে দিতে সরকারকে বাধ্য করার জন্য আমরা সচেতন মহল, সংবাদ মাধ্যম এবং ভূক্ত ভোগী জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”