মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চলমান বোর্ড অব ট্রাস্ট ভেঙে দিয়ে নতুন বোর্ড অব ট্রাস্ট পুনর্গঠন এবং জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে যে সব কথা-বার্তা বলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ৮ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমাদের জানা মতে, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনির্দিষ্ট পাঠ্যসূচি অনুয়ায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে বলেই আমরা জানি। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের নানা অভিযোগ থাকলেও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, অভিভাবক, শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে কোনো অভিযোগ বা আপত্তি উত্থাপিত হয়নি। মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অত্যন্ত সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসা অবস্থায় আকর্ষিকভাবে ৮ সেপ্টেম্বর সম্পূর্ণ অন্যায়, অযৌক্তিক ও অবৈধভাবে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-এর চলমান বোর্ড অব ট্রাস্ট ভেঙে দিয়ে নতুন বোর্ড অব ট্রাস্ট পুনর্গঠন করা হয়। যা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং আইনগত এখতিয়ার বহির্ভূত।
চিরাচরিত বদঅভ্যাস অনুযায়ী সরকারের জারী করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ‘উগ্রবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী ও জামায়াত-শিবিরের উচ্চ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় নীতি নির্ধারকদের যোগাযোগ রয়েছে’ এবং ‘ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক কাজে লিপ্ত করা হয়’ ইত্যাদি ভাষা ব্যবহার করে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে অযাচিতভাবে টেনে আনা হয়েছে, যা সরকারের একটি অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়া আর কিছুই নয়।
আমাদের জানামতে, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে কখনো কোনো বেআইনী তৎপরতার অভিযোগ উত্থাপন বা তা প্রমাণিত হয়নি। প্রজ্ঞাপনে জামায়াত-শিবিরের তৎপরতা এবং সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের যে সব কথা বলা হয়েছে, তা সর্বৈব মিথ্যা।
আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, চরমপন্থা বা উগ্রবাদের সাথে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়টি দখল করার জন্য এ ধরনের বক্তব্যের অবতারণা করা হয়েছে।
সরকার দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখলের যে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে মানারাত ইউনিভার্সিটি দখল তার ধারাবাহিকতা মাত্র। এটি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের নামান্তর। আমরা এই একপেশে অন্যায়, অবৈধ ও আইনগত এখতিয়ার বহির্ভূত পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।”