৫ ডিসেম্বর ২০২১, রবিবার, ৮:০২

স্বৈরাচার পতন দিবস’ উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর বিবৃতি

দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেশবাসীর প্রতি আহবান

-মাওলানা এটিএম মা’ছুম

‘৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ৫ ডিসেম্বর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর দেশের ছাত্র জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসনের পতন হয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলসমূহ ঐকমত্য পোষণ করেন। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়। ১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। জনগণের আন্দোলনের ফলে ১৯৯৬ সালে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। দেশে গণতন্ত্রের একটি পরিবেশ তৈরী হয়।

২০১১ সালে বর্তমান ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী সরকার দলীয় স্বার্থে নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার উদ্দেশ্যে আদালতের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। অথচ দেশের সর্বাচ্চ আদালতে প্রায় সকল এমিকাস কিউরি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে তাদের অভিমত তুলে ধরেন। সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্য গঠিত কমিটির প্রায় সকল সদস্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। সকলের মতামত অগ্রাহ্য করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। ফলে দেশে এক দলীয় স্বৈরশাসনের সূচনা হয়। জনগণের ভেটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। মানুষ এখন নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে- যা গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত। দেশ কার্যত আবার ৯০ পূর্ববর্তী পরিবেশে ফিরে গিয়েছে। এমনকি পরিস্থিতি তার চেয়েও ভয়াবহ।

দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ভোটাধিকার ও মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”