৪ মে ২০২১, মঙ্গলবার, ১০:৫৬

২৫ জন রোজাদার এবং ৫ জন শ্রমিককে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া পৌর এলাকায় ৩ মে এক পারিবারিক ইফতার মাহফিল থেকে ২৫ জন রোজাদার এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নে মে দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান থেকে ৫ জন শ্রমিককে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ৪ মে এক বিবৃতি প্রদান করেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “পুলিশ ৩ মে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া পৌর এলাকার ব্যবসায়ী জনাব সাইফুল ইসলামের বাড়িতে অনুষ্ঠিত এক পারিবারিক ইফতার মাহফিল থেকে ২৫ জন রোজাদারকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৮জনকে বিস্ফোরক আইনে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে বাকীদের ছেড়ে দেয়া হয়। অপর দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত মে দিবসের আলোচনা সভা থেকে পুলিশ ৫ জন শ্রমিককে গ্রেফতার করে। এ আলোচনা সভা থেকে মটর সাইকেল ৫টি, অটোরিকশা ২টি, ইজিবাইক ৩টি, ব্যাটারি চালিত রিক্সা ভ্যান ২টি ও ৬টি মোবাইল পুলিশ জব্দ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা শাহিনুর আলম ও জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলামসহ ৩৭ জন কে আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে সদর থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। ৩ মে সন্ধ্যার পর শাহজাদপুর উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল খালেককে তাঁর বাসার সামনে থেকে গ্রেফতার করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ সব গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট ছিল না। তাদেরকে হয়রানির হীনউদ্দেশ্যেই অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কিছু দিন যাবত পুলিশ সারা দেশেই অভিযান চালিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করছে। সরকার মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। গোটা দেশ আজ এক বৃহৎ কারাগারে পরিণত হয়েছে। আমি পুলিশের এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশক চলছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম প্রধান এ দেশে রমজান মাসব্যাপী ধর্মীয় ভাব-গাম্ভির্যময় পরিবেশ বিরাজ করে। বহু বছর ধরে এ দেশে ইফতার মাহফিল হয়ে আসছে। বর্তমানে ইফতার মাহফিল বাংলাদেশের ধর্মীয়-সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, যা এ দেশের সংস্কৃতিরই অংশ। ইফতার মাহফিলে দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে আত্মশুদ্ধি লাভ করে। অথচ সরকার এমন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষকে গ্রেফতার করে চরম অন্যায় করেছে। বর্তমানে দেশে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সরকার সেই অপরাধীদের গ্রেফতার না করে উলটো সিয়াম পালনকারী ধর্মপ্রাণ মানুষকে গ্রেফতার করছে। শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এটি অনাকাক্সিক্ষত, অনভিপ্রেত ও খুবই দুঃখজনক। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে এ ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।

আমি গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

অপর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান পুলিশের এই অন্যায় গ্রেফতার অভিযানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।