৮ আগস্ট ২০২০, শনিবার, ৮:৪০

বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ৮ আগস্ট ২০২০ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,

“৪৬০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করায় ভারতের মুসলমানসহ মুসলিম উম্মাহ গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন। যারা দাবি করেছেন ‘বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির ছিল’ তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। ঐ স্থানে খনন কাজ করে মন্দিরের কোনো চিহ্ন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ববিদরা ঐ স্থানে মন্দিরের কোনো নিদর্শন আবিষ্কার করতে পারেননি। বাবরি মসজিদ বিষয়ক মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তাদের প্রদত্ত রায়ে মেনে নিয়েছেন যে, ‘পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের রিপোর্টে কোনোভাবেই প্রমাণ হচ্ছে না যে, একটা মন্দিরকে ভেঙে ওখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল।’

সুপ্রিম কোর্টের যে রায়কে ভিত্তি ধরে বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণ করা হচ্ছে তা একটি বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ রায়। ভারতের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং কোলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিসহ একাধিক বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তাদের বক্তব্যে বলেছেন যে, ‘ইতিহাস পুনর্নির্মাণ করা আদালতের কাজ নয়। আদালত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় অকাট্য প্রমাণ এবং প্রামাণ্য নথিপত্রের ভিত্তিতে। বাবরি মসজিদ যেখানে ছিল সেই জমিতে মন্দির তৈরির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট কোনো অকাট্য প্রমাণ ও প্রামাণ্য নথিপত্রের ভিত্তিতে দেয়নি। এই রায় আইন ও সংবিধানের ভিত্তিতে দেয়া হয়নি।’

শুধু ভারত নয়, সারাবিশ্বের বিচার বিভাগের ইতিহাসে একটি ন্যায়ভ্রষ্ট ও প্রশ্নবিদ্ধ রায়কে ব্যবহার করে মন্দির বানানোর এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি উগ্র-সাম্প্রদায়িক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। আমরা আশা করি, ভারত সরকার জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত ধর্মীয় ও মানবাধিকার সনদ এবং ভারতীয় মুসলমান ও মুসলিম উম্মাহর অনুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকবেন।”