১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার, ৭:৫৫

নির্বাচনের নামে প্রহসন বন্ধ করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান

নির্বাচনের নামে প্রহসন বন্ধ করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ১ ফেব্রুয়ারি প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “আজ ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও একটি নজীরবিহীন প্রহসনের দৃশ্য জাতি প্রত্যক্ষ করল। স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের দৃশ্য দেখে বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, ‘এ ধরনের নির্বাচন দেখতে চাইনি।’

প্রকৃতপক্ষে ভোট কেন্দ্র দখল, সরকার বিরোধী প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দেয়া, ব্যাপক জাল ভোট প্রদান, বেশ কিছু জায়গায় ভোটারদেরকে ভোট প্রদানে বাধা ও ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে আজকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভোট কেন্দ্রগুলোর যে দৃশ্য প্রচারিত হয়েছে তাতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, জনগণ ভোট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচন ব্যবস্থায় ব্যাপক অনিয়ম ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় জনগণ ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। বিগত ১০ বছর যাবত নির্বাচন নিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন জনগণের সাথে যে খেলা খেলে যাচ্ছে তাতে জনগণের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে আর কোনো আগ্রহ নেই। এ ধরনের পরিস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়।

ভোটারগণ ধরেই নিয়েছিল দেশে আরো একটি প্রহসনের একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই তারা ব্যাপকভাবে ভোট প্রদানে বিরত থাকে। মূলত দেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে বর্তমান সরকার এবং তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছে।

জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার পরিবেশ রক্ষার দাবিতে জামায়াতে ইসলামী আহ্বান জানিয়ে এসেছে। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ হবে না আশঙ্কা করেই জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। আজকের নির্বাচনে জামায়াতের সে আশঙ্কাই যথার্থ প্রমাণিত হল।

সরকার দলীয় কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে, বর্তমান সরকারের অধীনে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় জনগণ ভোট দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছে না। যদি তাই হয় তাহলে উন্নত বিশ্বের জনগণ ব্যাপকভাবে ভোট প্রদান করত না। মূলত এই কথা বলে সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার হাস্যকর কৌশল নিয়েছে।

তাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে এনে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে জনগণ এবং সকল বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।”