২৫ জানুয়ারি ২০২৫, শনিবার

দাউদকান্দি ও দেবিদ্বার উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলন

আগামী নির্বাচন হবে ইসলামী দলগুলোর ঐক্যের ভিত্তিতে

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে ইসলামী দলগুলোর ঐক্যের ভিত্তিতে। ইতোমধ্যে অন্যান্য ইসলামী দল সমূহের সাথে আমাদের আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সর্বগ্রহণযোগ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে হত্যা করেছে। ২০১৪ সালে একতরফা, ২০১৮ সালে রাতের ভোট ও ২০২৪ সালে নিজেরা নিজেরা আমি ও ডামি নির্বাচন করেছে। বিগত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ভোটকে আমেজহীন করা হয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিরোধী শক্তিকে গুম-খুন মিথ্যা মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা করেছে। কিন্ত তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। দেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে খুনি হাসিনা’র পতন হয়েছে।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) কুমিল্লার দেবিদ্বার রেয়াজউদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ও দাউদকান্দি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

উপজেলা আমির অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল মতিন, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শহীদ, জামায়াতে ইসলামী ইউরোপ-এর মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরও বলেন, নিজেদের অপকর্মের কারণে জনরোষে পড়ে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘যারা আল্লাহর আইন অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে না, তারা কাফের, ফাসেক ও জালেম।’ তাই আগামীতে ইসলামপন্থিদের পক্ষে থাকতে হবে। বিগত স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিলো ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং বৈষম্যমূলক দেশ গড়া। কিন্ত মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে এক দলীয় শাসন কায়েম করে আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়, চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকীগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, যৌক্তিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। তিনি আরও বলেন, দেশে আর ফ্যাসিজম কায়েম করতে দেয়া হবে না। জামায়াত ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। বরং ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করছে। একটি রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা জামায়াতকে ধর্ম ব্যবসায়ী ও রগ কাটা বলে অভিহিত করছে। এসব মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে জামাায়াতের অগ্রযাত্রা ঠেকানো যাবে না। তিপ্পান্ন বছরের মধ্যে ২৪ বছর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে ও বিএনপি শাসন করেছে ১৩ বছর। বিগত সরকার ২৮ লাখ কোটি টাকা ঋণ রেখে গেছে। জামায়াতের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ৯৬ হাজার নেতাকর্মীকে রিমান্ডে নিয়েছে। জামায়াত নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দিলেও তারা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। তিনি বলেন, কাদের মোল্লাকে ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে বিচারিক হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এদেশের মানুষ সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছে। তা কোনোভাবে নস্যাৎ করতে দেয়া হবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাঈদী সাহেবসহ জামায়াত নেতাদের বিচারের নামে প্রহসন করা হয়েছে। চার শীর্ষ নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর সাঈদী সাহেবকে আমৃত্যু কারাগারের নামে তার প্রতি চরম জুলুম করা হয়েছে।

দেবিদ্বার পৌর আমীর ফেরদৌস আহম্মেদ এর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি লোকমান হাকিম ভুইঁয়া, অধ্যাপক মুফতি আমিনুল ইসলাম, উত্তর জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সানাউল্লাহ রাসেল।

এদিকে দাউদকান্দি উপজেলা আমীর মনিরুজ্জামান বাহলুল এর সভাপতিত্বে সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান ও পৌর সেক্রেটারি শাহজাহান তালুকদারের পরিচালনায় কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আলমগীর সরকার, জেলা জামায়াত নেতা খন্দকার আবুল বাশার, ইঞ্জিনিয়ার শামীম সরকার বিজ্ঞ, মাওলানা মোশাররফ হোসেন, আবুল কাশেম প্রধানীয়া, এডভোকেট মোখলেসুর রহমান, রেজাউল হক ও মোঃ ছবির হোসেন প্রমুখ।