২৪ জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার

চকবাজার-বংশাল জোনের বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত

যারাই ফ্যাসিবাদের সাথে জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে

-মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জুলুম নির্যাতন মোকাবেলা করে সঠিক ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে সব সময়ে আমরা মহান আল্লাহর সাহায্য পেয়েছি। ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সকল ধরনের ষড়যন্ত্র চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যাবে। কোনো ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার করে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে শেষ করা যাবে না ইনশাআল্লাহ। সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা একথা এক বাক্যে শিকার করেন শহীদ মতিউর রহমান নিজামীর মত পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে আর কেউ ছিলেন না। তারপরও তাঁকে ফাঁসি দিয়ে শহীদ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল জামায়াতের নেতৃত্ব শেষ করার মাধ্যমে পুরো সংগঠনকে শেষ করে দেওয়া যাবে। কিন্তু না; তা হয়নি বরং জামায়াতে ইসলামী বর্তমান বাংলাদেশে সবচেয়ে সু-শৃঙ্খল ও সুগঠিত রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে জনগণের আস্থার প্রতিক হিসেবে আজ দাঁড়িয়ে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ।”

২৪ জানুয়ারি জুমাবার ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের চকবাজার-বংশাল জোনের উদ্যোগে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স হলে বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চকবাজার-বংশাল জোন পরিচালক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলাওয়ার হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন চকবাজার-বংশাল জোনের সহকারী পরিচালক এস.এম. আহসান উল্লাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও বংশাল দক্ষিণ থানা আমীর মাহবুবুল আলম ভুঁইয়া, কোতয়ালী থানা আমীর মাওলানা মতিউর রহমান, চকবাজার দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা আনিসুর রহমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে কিছুদিন পূর্বেও যারা জুলুম চালিয়েছে তারা আজ অন্ধকারে পালিয়ে গেছে। তাদেরকে কেউ পালাতে বাধ্য করেনি তবুও ফ্যাসিবাদের সেসব দোসরেরা ক্ষমতাধর দাবি করা ব্যক্তিরা পালিয়ে গেছে। সূর্য্যরে আলোতে এখন আর তাদের খুঁজেও পায়না দেশের মানুষ। যারা বিদেশের মাটিতেও বাড়িঘর তৈরি করেছে তারাও আজ সেখানে থাকে না জনগণের ভয়ে লজ্জায়। দুনিয়ায় এসব রাজনীতি করে তাহলে তাদের কি লাভ হয়েছে! যুগে যুগে যারাই জনগণের উপরে জুলুম করেছে তাদের শেষ পরিণতি খুবই লজ্জাজনক হয়েছে এটাই বাস্তব।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “যে ট্রাইবুন্যালে জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আজ সেই ট্রাইবুন্যালেই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিচারের সম্মুখিন হতে হয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ ও পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র এদেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করতেই জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ১নং হতে ১১নং পর্যন্ত শীর্ষ নেতাদের উপরে জুলুম চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন সাঁজানো স্বাক্ষী এনে প্রহসনের রায় দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ দেখেছে জনগণ। আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, বিচারের রায় অন্য স্থান থেকে লিখে নিয়ে এসে তা কার্যকর করা ছিল, যা ইতিহাসের চরম নিষ্ঠুরতা।

অন্তবর্তী সরকারের কাছে আহবান জানাই, যারাই এসব জুলুম অন্যায়ের সাথে জড়িত ছিল, যারাই ফ্যাসিবাদের সাথে জড়িত, তারা বাংলাদেশে থাকুক কিংবা বিদেশে থাকুক তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে নিয়ে এসে ট্রাইবুন্যালে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এখনো যারা সরকারের ভিতরে বাহিরে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে রয়েছে তাদেরকেও দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। গোজামিলের ভোটার তালিকা সবার আগে সংশোধন করতে হবে, ভুয়া সব ভোটার বাদ দিতে হবে। যারা আয়নাঘর তৈরি করে খুন এবং গুমের রাজনীতি চালু করে বাংলাদেশের মানুষের উপরে জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছিল তাদের ক্ষমা নেই। আজকে বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের জাগরণ শুরু হয়েছে। আমাদের ঐক্য হবে আরও সুদৃঢ়। মনে রাখবেন ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণতি কোনোদিনই ভালো হয় না, এটাই মহান আল্লাহর ওয়াদা।”