বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, “এদেশ থেকে ইসলাম, ইসলামী আদর্শ, রাসূল (সা:) এর সীরাত মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। দ্বীনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার পাশাপাশি সমাজের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। রাসূল (সা:) সীরাত অনুসরণ না করার কারণে অন্যায়, পাপাচার, জুলুম, দুর্নীতি, লুটপাট ছড়িয়ে পড়েছে। এই লুটেরাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। রাসূল (সা:) এর সিরাত বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
১৪ জুলাই রোববার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত সীরাতুন্নবী (সা:) পাঠ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, ড. আবদুল মান্নানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “যে দেশের শতকরা ৯০ ভাগের বেশী মানুষ ইসলামী আদর্শে বিশস করে, কুরআনে বিশ্বাস করে, এশার নামাজ পড়ে দিনের কাজ শেষ করে আর ফজর পড়ে দিনের কাজ শুরু করে, সেই দেশ থেকে ইসলাম, ইসলামী আদর্শ, রাসূল (সা:) এর সীরাত মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। একের পর এক ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে কুরআনের মাধ্যমে মানবজাতির জন্য ম্যাসেজ দেয়া হয়েছে। তা হলো রাসূল (সা:) এর জীবনেই রয়েছে, মানব জাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। রাসূল (সা:) এর জীবনী ভালোভাবে উপলব্দি করতে হবে। কেন আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সা:) কে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তা জানতে হবে।
রাসূল (সা:) কে দুনিয়ায় পাঠানোই হয়েছে দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য। সংগ্রাম করে এই দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যারা এই দ্বীনকে অপছন্দ করবে তারাই এর বাধা হয়ে দাঁড়ায়। দ্বীনকে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে যাদের অশ্বস্তি হয়, তারা কখনই ইসলাম বা মুসলমানের বন্ধু হতে পারে না। দ্বীনকে বিজয়ী করা ছাড়া সীরাত আলোচনা অর্থহীন। রাসূল (সা:) এর সঙ্গী সাথীরা কেউ দ্বীনকে বিজয়ী করার চেষ্টার বাইরে জীবনযাপন করেননি। সীরাত পাঠ করতে হবে। এই আলোচনা ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। এতে বাধা আসতে পারে। জুলুম নির্যাতনের স্বীকার হতে হবে।”
তিনি বলেন, “রাসূল (সা:) এর জীবনী আলোচনার সময় তার সংগ্রামী জীবন বাদ দিলে সেই আলোচনা পূর্ণাঙ্গ হবে না। রাসূল (সা:) যেমন একজন দায়ী ছিলেন, তেমনি সেখানে রাষ্ট্র প্রধানও ছিলেন। রাসূল (সা:) তার কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখিন হয়েছিলেন। শিয়াবে আবু তালেবে বন্দী জীবন কাটিয়েছিলেন। তায়েফে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিলেন। যদি বাধাই না আসে তাহলে কীসের দাওয়াত? এ কাজ করতে গিয়ে যুগে যুগে বাধা এসেছে, বাধা আসবে।”
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “বিশ্ব মানবতার জন্য রহমত হিসেবে আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সা:) কে পাঠিয়েছেন। ইসলামকে উপলব্ধি করতে হলে, কুরআনকে উপলব্ধি করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনকে বুঝতে হলে কুরআন অধ্যয়নের পাশাপাশি রাসূল (সা:) এর সিরাত অধ্যয়ন করতে হবে।”
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, “সমাজ এমন একটা জায়গায় এসে দাড়িয়েছে, যেখানে আদৌ জ্ঞানের প্রয়োজন আছে কিনা সেটা প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে। যেভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে, সেখানে পড়াশুনার প্রয়োজনীয়তা গৌণ হয়ে দাড়িয়েছে। রাষ্ট্রীয় কাঠামো সেই ভাবে তৈরি করা হচ্ছে। আসলে কী জাতি এমন স্বাধীনতা চেয়েছিল? আমরা এমন রাষ্ট্র কী চেয়েছিলাম?
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতা ২০২৩ এর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।