৬ জুন ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৫:৫২

খুলনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান

ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে মানুষের আর কোন দুর্ভোগ থাকবেনা

-অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জামায়াতে ইসলামী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী এমনই একটি কল্যাণ রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েমে করতে চায়, যেখানে জনগণের সকল অধিকার ও প্রাপ্য তাদের নিকট পৌঁছে দেয়া হবে। ইসলামের সু-মহান আদর্শের ভিত্তিতে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে সাধারণ মানুষের আর কোন দুর্ভোগ থাকবেনা। সেই কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালনের আহবান জানাচ্ছি।”

৬ জুন ‘২৪ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের জালিয়াখালী, আখড়া ও চাদগড়ে ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, ডুমুরিয়া উপজেলা দক্ষিণের আমীর মাওলানা মোকতার হুসাইন, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমীর মাওলানা আবু ইউছুফ, ডুমুরিয়া উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মাওলানা মনিরুজ্জামানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “সারাদেশে চলছে দুর্নীতি, অর্থনৈতিক শোষণ ও জুলুম-নির্যাতন। আমাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের শত-শত নেতা-কর্মীদের খুন ও গুম করা হয়েছে। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে (রাহি.) মিথ্যা মামলায় আজীবন কারাদন্ড দিয়ে রেখে ক্ষ্যান্ত হয়নি। তাঁকে সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত ১৫ বছরের মধ্যে ৭ বছরই কারাগারে কাটিয়েছি। যার কারণে আপনাদের খেদমত করতে পারিনি। আপনাদের জন্য আমি কারাগারে বসে দোয়া করেছি। আমার পিতাসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে। আমি তাদের কাছে থাকতে পারিনি। আলহামদুলিল্লাহ এতকিছুর পরও আজ আপনাদের সাথে দেখা করতে পারায় আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।”

সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে একটি হিংসা ও বিদ্বেষমুক্ত সমাজ গঠনে তৎপর হই এবং সমাজের অবহেলিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসি। একে অপরের সুখানন্দ এবং দুঃখ-কষ্ট ভাগ করে নিই। বর্তমানে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য জীবিকা নির্বাহ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, আপনারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এখানে এসেছেন। আপনাদের জন্য বুক ভরে দোয়া করি। আপনারাও আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”

তিনি আরো বলেন, “দেশবাসী জানে, সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে গরীব মানুষের পাশে দাঁড়ানো জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহ্য। একটি দ্বীনি সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী মানুষের কল্যাণে সব সময় কাজ করে। গণমানুষের প্রিয় সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে আল্লাহ যেটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন, তাই নিয়ে আমরা সব ধরণের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। এ ভয়াল দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় কোনো সামর্থ্যবান ও বিবেকবান মানুষ বসে থাকতে পারেন না। আমীরে জামায়াতের নির্দেশনায় আমাদের নেতাকর্মীগণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উপহার সামগ্রী নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন।

জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে মানবতার কল্যাণ সাধন করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। এই ঈমানী দায়িত্ববোধ ও ইবাদতের অংশ হিসেবেই আমরা আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি।” তিনি আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসার জন্য সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সংস্থা এবং বিত্তশালী ও হৃদয়বান মানুষের প্রতি উদাত্ত্ব আহবান জানান।