বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “সমাজ ও রাষ্ট্রের পরিবর্তনে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির বিকল্প নেই। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংগঠনের ভিশন’৪৮ বাস্তবায়নে স্থানীয় নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর শহীদ নেতৃবৃন্দ তাদের জীবদ্দশায় সংগঠন পরিচালনায় যে অনন্য নজির রেখে গেছেন তা যুগ যুগ ধরে আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে। দুর্নীতি যখন সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে সেই অবস্থাতেও দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। জামায়াত নেতৃবৃন্দ মন্ত্রী হয়েও রাষ্ট্রের সম্পদের আমানতদারিতার বিরল নজীর স্থাপন করেছে। তাই আমাদেরকে সাহাবায়ে কেরামের চরিত্র ও শহীদ নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে লিডারশীপ ট্রেনিং কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. কামাল হোসাইনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মোঃ শামছুর রহমান।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একদল সৎ ও দক্ষ লোকের প্রয়োজন। আজকের এই লিডারশীপ ট্রেনিং কর্মশালা সেই যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির একটা অংশ। প্রত্যাশিত ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের জন্য আপনাদেরকে আল্লাহর উপর ভরসা করে সাহসিকতার সাথে ময়দানে তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে। রাজধানী একটি রাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্র। যারা রাজধানীতে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে পারে তারাই দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুরো জাতিকে নেতৃত্ব দেয়। তাই ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নেতৃবৃন্দকে রাজধানীকে উত্তমভাবে আবাদ করতে হবে। এখানে ইসলামী আন্দোলনের ভিত্তিকে আরও মজবুত করতে হবে। নিজেদের যোগ্যতার সর্বোচ্চ উজাড় করে আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য ভূমিকা পালন করতে হবে।”
এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “জাতির বৃহৎ স্বার্থে আমাদের গণমুখী নেতৃত্ব তৈরির বিকল্প নেই। জামায়াত একটি গণমুখী কল্যাণকামী ও আদর্শিক রাজনৈতিক সংগঠন। এই আদর্শভিত্তিক আন্দোলনে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ক্ষমতা গ্রহণ লক্ষ্য নয় বরং লক্ষ্য একটাই- আদর্শের বিজয়, দ্বীন ইসলামের বিজয়। একইসাথে এই আন্দোলন গণমুখী আন্দোলন। এর জাগতিক লক্ষ্য দুনিয়ার সর্বস্তরের জনমানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করে আখেরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।”
অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল্লাহ বলেন, “আজকে বাংলাদেশের মানুষের ভোট প্রয়োগের ন্যায্য অধিকার হরণ করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজেদের চাতুরতা দিয়ে জনগণকে জিম্মি করে ফেলেছে। ফলে সর্বত্র সুবিধাভোগী, খোদাদ্রোহী শ্রেণীর প্রভাব প্রতিপত্তি ও দাপটের সামনে দেশের মানুষ বড্ড অসহায় হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য সৎ, যোগ্য ও খোদা ভীরু নেতৃত্বকে এগিয়ে আসতে হবে। যখন এই অ-সত্যের দাপট ভেঙ্গে যাবে তখন বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মত মানুষ আমাদের সমর্থন দিবে ইনশাআল্লাহ।”
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, “ইসলামী আদর্শ স্বয়ং একটি গণমুখী আদর্শ। ইসলামী আন্দোলনের বক্তব্য মজলুম ও ভুক্তভোগী জনমানুষের সুপ্ত ও অব্যক্ত ব্যথা বেদনারই অভিব্যক্তি। জনগণের কাছে আমাদের বক্তব্য আপোষহীন ও সার্থকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে তারা আমাদের পাশেই দাঁড়াবে।”
সভাপতির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, “জামায়াত কর্মী মানেই সমাজকর্মী- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আদর্শ সমাজ গঠনে আমাদেরকে নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই একটি সমৃদ্ধ দেশ ও জাতি গঠন করা সম্ভব। তাই মানবতার কল্যাণে, জনগণের পাশে থেকে সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে ময়দানে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু পাড়া-মহল্লায় নয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতিটি গলি, প্রত্যেক বিল্ডিং ও ফ্ল্যাটে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহবান পৌঁছে দিতে হবে। একইসাথে নিজের যোগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে দুনিয়ার মানুষের কল্যাণ ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যাবতীয় কর্মতৎপরতা বজায় রাখতে হবে।”