২০ জানুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ৮:৪৪

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার বৈঠক অনুষ্ঠিত

অবিলম্বে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করার আহ্বান

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার এক বৈঠক ২০ জানুয়ারি সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত বলেন, “গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে মাত্র। এই নির্বাচনের ফল পূর্বনির্ধারিত ছিল। একদলীয় ডামি নির্বাচন করে মূলত এক ব্যক্তির পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করে আনা হয়েছে। দেশবাসীর পাশাপাশি আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ইতোপূর্বেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরও বলেন, গত ১৫ বছর যাবত এই সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। এই সরকারের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। বর্তমান সরকার অবৈধ। জনগণ এই সরকারকে ভোট দেয়নি। বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে একটি প্রহসন হয়েছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার সম্পর্কে সরকার যা বলছেন, তা অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। জনগণ যেখানে ভোট দিতেই যায়নি, সেখানে সরকারের ব্যক্ত করা ভোট প্রদানের হার মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়, বরং হাস্যকর। জাতিসঙ্ঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বলেছেন, বাংলাদেশের এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি। বিশ্বের ৬টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলেছেন, এই নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে যায়নি এবং তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনে কত ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত বলেন, জামায়াতসহ বিরোধীদলের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে ও ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন সকাল ১১টা পর্যন্ত কোনো ভোটার ভোটকেন্দ্রে যায়নি। জনগণ ভোট না দিয়ে বিরোধীদলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দেশের গণতন্ত্র প্রিয় মানুষ নিজেদের পছন্দের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সরকার জনগণের মতামতকে তোয়াক্কা না করে এবং ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদের কোনো বৈধতা নেই। আমরা এই নির্বাচন বাতিল করে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অবিলম্বে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, সরকার দীর্ঘ দিন যাবত আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিনকে কারাগারে আটক রেখেছে। নির্বাচনের আগে জামায়াতসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সাজানো মামলায় তাদেরকে দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে বিরোধীদলের সকল মামলা প্রত্যাহার করে আমীরে জামায়াতসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মী এবং আলেম-ওলামার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।”