১২ আগস্ট ২০২৩, শনিবার, ১০:৫৫

চকরিয়ায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত

জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, সরকার দেশে জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। দেশের সর্বত্র অন্যায় ও অরাজকতা বিরাজ করছে। বিনাভোটে সরকার গঠন করে দেশের জনগণকে আজ চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালে তারা ভোটারবিহীন ও ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি দেশের শান্তিকামী জনগণ আর দেখতে চায় না। এ অন্যায় ও জুলুমের প্রতিবাদ করতে হবে; প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমানে সরকারের অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ভোট হলে দেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। তাই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) কক্সবাজার জেলা জামায়াতের ব্যানারে চকরিয়ার লক্ষ্যারচরে বন্যা দুর্গতদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শ‚রার সদস্য জাফর সাদেক ও জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ আল ফারুক।

তিনি আরো বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রে ও সমাজে আল্লাহর আইন চালু থাকতে হবে। জামায়াতে ইসলামী সেই কাজটি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াতের কর্মী মানে সমাজকর্মী। জামায়াতের কর্মীগণ সকল জুলুম-নির্যাতন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং নির্যাতিতের পক্ষে সব সময়ই ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা মানুষের জীবন ও মৃত্যু দিয়েছেন পরীক্ষার জন্য। আমাদের কাজ হলো ভাল কাজের মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়া। সেই চেষ্টায় আমাদেরকে নেক আমল করতে হবে।

তিনি বলেন, আল্লাহর নির্দেশিত ও রাসূল (সাঃ) এর দেখানো পথে আমাদেরকে চলতে হবে। মনগড়া জীবন পরিচালনায় পরকালীণ শান্তি বয়ে আনবে না। আমাদেরকে জাহান্নামের পথ থেকে বেঁচে জান্নাতের পথে জীবন গড়তে হবে। এই জন্য আমাদেরকে একতাবদ্ধ হয়ে আল্লাহর রশিকে ভালোভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে। এ দেশে কুরআনের আইন চালু করার জন্য জামায়াতে ইসলামী চেষ্টা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি সংসদ সদস্য থাকাকালে আল্লাহর রহমতে আমার প্রচেষ্টায় সালাতের ওয়াক্তে বিরতির ব্যবস্থা এবং কারো ইন্তিকালে এক মিনিট নীরবতা পালনের পরিবর্তে দোয়ার অনুষ্ঠান চালু হয়। এটি আমার নয়, জামায়াতে ইসলামীর অবদান।

তিনি দুর্গতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ভয়াবহ বন্যায় মানুষ আজ কতোটা অসহায় তার চিত্র বাস্তবে না দেখলে বুঝা যেতো না। দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো ঈমানী দায়িত্ব। সেই ঈমানী দায়িত্ব পালনে আপনাদের জন্য আমরা সামান্য উপহার নিয়ে এসেছি। এটা আপনাদের প্রতি কৃপা নয়। শুধু ভাই হিসেবে ভালোবাসার টানে আপনাদের পাশে এসেছি। এই সামান্য উপহারটুকু আপনারা গ্রহণ করলে আমরা মনে শান্তি পাবো। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন ভবিষ্যতেও বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

উপহার সামগ্রী বিতরণকালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস.এম লুৎফুর রহমান, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, জেলা যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর মাস্টার মুহাম্মদ মুছা, সাবেক আমীর মাওলানা ছাবের আহমদ, পৌর আমীর মো. আরিফুল কবিরসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।