রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও অঞ্চল সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের ব্যবস্থাপনায় জেলা ও মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্যদের নিয়ে ২৫ মার্চ দিনব্যাপী ভার্চুয়ালি এক শিক্ষাশিবির অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক আজিজুর রহমান সরকার।
শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ.টি.এম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মাওলানা এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধীদলের শত শত নেতাকর্মীকে কারাগারে আটক রেখেছে। আমীরে জামায়াতসহ সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সকলকে সম্মিলিতভাবে এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে হঠাতে হবে। সরকার পতনের আন্দোলন ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে গণমানুষের স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ নেয়ার জন্য জামায়াত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ। নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না জামায়াত। সরকারের নিকট আমাদের দাবি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ময়দানে আমাদের আরো তৎপর ও গণমুখী হতে হবে। দায়িত্ব পালনে অধিক সচেতন ও সময় দানে আরো পরিকল্পিত হতে হবে। ময়দানের চাহিদার আলোকে কাজের মান বাড়াতে হবে এবং সময় দিতে হবে। আমাদের কাজগুলো আরো যুগোপযোগী এবং পরিকল্পিত হওয়া দরকার। দায়িত্বশীলগণকে কাজ নিয়ে আরো ভাবতে হবে এবং সেই আলোকে পরিকল্পনা গ্রহণ করে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের শপথের হক সঠিকভাবে আদায় করা দরকার। সঠিক লক্ষ্যপানে ছুটে চলার জন্য আমাদের আরো সক্রিয় হওয়া দরকার। সদস্য (রুকন) হওয়ার পর একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে ছুটতে হবে। আমাদের জীবন-যাপনেও আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। একজন মুমিনের দুইদিন সমান হবে না বরং আজকের দিনটি গতকালের চেয়ে আরো উত্তম হতে হবে।
বিশেষ অতিথি ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ.টি.এম মাছুম বলেন, রাসূল (সা) কোনো কাজ একা একা করেননি, সাহাবিদের সাথে নিয়ে করেছেন। আমাদের উদ্দেশ্য আল্লাহর জমিনে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। পবিত্র কুরআন মাজিদে ইকামাতে দ্বীনের কাজ জান ও মাল দিয়ে করতে বলা হয়েছে। আমাদেরকে শিরক মুক্ত জীবন-যাপন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সংগঠন পরিচালনায় আমাদের আরো উচ্চমানে অবস্থান করতে হবে। ইউনিট পর্যন্ত কাজকে সক্রিয় করতে হবে। সকল সেক্টরকে সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে। কাজের সঠিক পর্যালোচনা করে পেশ করতে হবে। কাজের মধ্যে ভারসাম্য নিয়ে আসতে হবে। সালাতের সময় অনুযায়ী কাজ সাজিয়ে নিতে হবে। এতে আল্লাহ পাক বহু সংখ্যক বিরোধী শক্তির মোকাবিলায় আমাদের বিজয় দান করবেন, ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথি মাওলানা এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, প্রশিক্ষিত দাঈর মাধ্যমে দাওয়াতি কাজের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে। ইসলাম সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা দূর করতে হবে। দাঈকে সমাজের নিকট ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। সময়োপযোগী করে ইসলামকে জনসাধারণের নিকট উপস্থাপন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কুরআন শুধু তেলাওয়াত ও বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তা বাস্তবায়ন করে সমাজের সুফল নিয়ে আসতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের নিজেদের চারিত্রিক দাওয়াতের মাধ্যমেই মানুষকে ইসলামের দিকে নিয়ে আসতে হবে। মার্জিত ভাষায় ও নৈতিকভাবে দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। আমাদেরকে মানব সেবার মাধ্যমে মানুষকে দাওয়াত দিতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা দাওয়াতি কাজের একটি অন্যতম মাধ্যম। জনসমর্থন আছে বলেই আমাদের প্রতিনিধিগণ নির্বাচিত হন।
শিক্ষাশিবিরে আরো উপস্থিত ছিলেন অঞ্চল টিম সদস্য ও জেলা আমীরবৃন্দ।