১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৭:৩৭

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আইনজীবী সমাজকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও ঢাকা-১৫ (মিরপুর-কাফরুল ) আসনের ২০ দলীয় জোট মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের আইনজীবী সমাজ বিভিন্ন জাতীয় ক্রান্তিকালে আমাদেরকে মূল্যবান দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের মুক্তিসংগ্রামেও আইনজীবী সমাজের ঐতিহাসিক ভূমিকা স্বাধীনতা অর্জনে সহায়ক হয়েছিল। সে অতীত গৌরবের ধারাবাহিকতায় আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আইনজীবী সমাজকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় আইনজীবী সমাজ সহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।

তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৫ আসনের নির্বাচনী কার্যক্রম বিষয়ে আইনজীবীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ সভাপতি এ্যাডভোকেট গোলাম রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মুহা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহকারি সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, এ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, এ্যাডভোকেট মাঈন উদ্দীন, এ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান, এ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও এ্যাডভোকেট রোকন রেজা শেখ সহ সুপ্রীমকোর্টম হাইকোর্ট ও জর্জকোর্টের বিপুল সংখ্যক আইনজীবী।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশ এক মহাক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। অবাধ গণতন্ত্র, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সর্বাত্মক মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু শাসক গোষ্ঠীর ব্যর্থতা, ক্ষমতালিপ্সা ও অহমিকার কারণে আমাদের স্বাধীনতা আজও পুরোপুরি অর্থবহ হয়ে উঠেনি। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আমাদের জাতীয় জীবনের বড় অর্জন। আমাদের মুক্তিসংগ্রামে দেশের আইনজীবী সমাজও অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। এমনকি বিরোধী দলের উপর সরকারের চলমান দলন-পীড়নেও আইনজীবীরা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং এখনও করছেন। আসলে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না থাকায় দেশের মানুষ আজ অধিকার বঞ্চিত। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এখন মৃতপ্রায়। তাই দেশ ও জাতিকে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে হলে আইনজীবী সমাজকে সাহসী ও সময়োপযোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আইনজীবী সহ সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষকে এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও বিরোধী দলগুলো এখন পর্যন্ত নির্বিঘ্নে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছে না বরং নানা ধরনের বাধা-প্রতিবন্ধকতা, হামলা, হামলা, মারধর ও গণগ্রেফতার সহ নানাবিধ প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত আছে বলে দাবি করেছেন। কিন্তু সরকারি দল নির্বিঘ্নে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালালেও বিরোধী দলকে সে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনার মি. মাহবুব তালুকদারের বক্তব্যে তা দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ পর্যন্ত বিরোধী দলের ১৪ জন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেকেই গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন। ঢাকা-১৫ আসনের সরকার দলীয় প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও বিষোদগার করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন । তিনি সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় নির্বাচন কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগ দাখিল-
ঢাকা- ১৫ নির্বাচনী আসনে ২০ দলীয় জোট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট লস্কর মো. তসলিম সাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র রাজধানীর শেগুনবাগিচাস্থ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে এ অভিযোগ দাখিল করেন এ্যাডভোকেট ইব্রাহীম খলিল, এ্যাডভোকেট তৌহিদ ও হাসান ইমাম। অভিযোগে বলা হয়, ‘গত ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় সেনপাড়া পর্বতা, মিরপুর-১০ থেকে প্রচারকর্মী জনাব আহসান উল্লাহ, পিতা-মো. শফিউল্লাহ, জনাব গোলাম রব্বানী, পিতা-সিরাজুল ইসলাম ও জনাব আনোয়ার হোসেন, পিতা-আইয়ুব আলীকে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। প্রচারকাজে বাধাদান করে নির্বিচারে গ্রেফতার বন্ধে আমরা ্ইতিপূর্বে আপনার কাছে কয়েকবার আবেদন করলেও এখনও গ্রেফতার অভিযান চলছে। অতএব সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে নির্বিঘ্নে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য নির্বিচারে গ্রেফতার বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিনীত অনুরোধ করছি।