৯ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৮:১৮

ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করায় গভীর উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা প্রকাশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশের মাধ্যমে অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল

সম্পাদক পরিষদের আপত্তি, জাতীয় সংসদের ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন মহলের আপত্তি, সুশীল সমাজের আপত্তি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে আপত্তি ও উদ্বেগ উপেক্ষা করে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করায় গভীর উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ৯ অক্টোবর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “জনগণের ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় আসা গণবিচ্ছিন্ন সরকার স্বাধীনভাবে মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ করল এবং প্রেসিডেণ্ট সেই বিলে সই করার মাধ্যমে তিনি নিজেকে কালো আইনের সাথে সম্পৃক্ত করলেন, যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রেসিডেণ্ট তার সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ না করে জাতিকে হতাশ করলেন।

আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার উদ্দেশ্যেই তড়িঘড়ি করে এ আইন পাশ করলো। এমনকি মন্ত্রি পরিষদের বৈঠকেও এই বিলটি নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। তিনজন মন্ত্রী সম্পাদক পরিষদের সাথে আলোচনা করে বিলটি সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দিলেও তারা এ নিয়ে আর আলোচনা করেননি।

এ আইনে পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ হলে ওয়ারেণ্ট ছাড়াই যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে। আওয়ামী লীগ সরকার এ আইন পাশের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করলো। সাংবাদিকদের পক্ষে অনুসন্ধানী সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা আর সম্ভব হবে না। এর ফলে স্বাধীন মত প্রকাশের পথ রুদ্ধ করা হল। এ কালো আইনের মাধ্যমে অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী কোন সরকার স্বাধীনভাবে মত প্রকাশে এভাবে বাধা দিতে পারে না।

আমি বাংলাদেশের গণ মাধ্যমের নেতা-কর্মী ও জনসাধারণকে এই কালো আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি। সেই সাথে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং জনমতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এ কালো আইন অবিলম্বে বাতিল করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”