বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন এবং সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ.ন.ম. শামসুল ইসলাম আজ ১০ মে, প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বাংলাদেশের জনগণের নিকট প্রিয় একটি নাম। বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার অর্জন ও বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতি চালুর ক্ষেত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন।
গত ২০১৬ সালের ১১ মে রাত ১২টা ১০ মিঃ সরকার সাজানো মিথ্যা মামলায় বায়বীয় অভিযোগে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে।
চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক কৃষি ও শিল্প মন্ত্রী হিসেবে তিনি যে দক্ষতা, সততা স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছেন তা বাংলাদেশের জনগণ কখনো ভুলবে না। তিনি ইসলামী আন্দোলনের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের নিকট ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্য সারা জীবন পরিশ্রম করেছেন। বর্তমান সরকার এ রকম একজন সৎ, আল্লাহভীরু ও দেশপ্রেমিক দক্ষ জাতীয় নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করায় জাতি গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত।
শহীদ মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে পারেনি। তাকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করার পূর্বে কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় তার সাথে যে নিকৃষ্ট আচরণ ও অবিচার করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণ ভিক্ষা চাননি। কারণ প্রাণের মালিক একমাত্র আল্লাহ।
শহীদ মাওলানা নিজামীকে হত্যা করে যারা জামায়াতকে নেতৃত্ব শূন্য করার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের সে স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে না। তার প্রতি ফোঁটা রক্ত এ দেশের ইসলামী ও গণতন্ত্রমনা জনগণকে উজ্জীবিত করবে, ইনশাআল্লাহ। সরকার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যা করে যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে তা বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
শহীদ মাওলানা নিজামী এখন আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তিনি যে, ইসলামী আদর্শের জন্য জীবন দিয়েছেন তা শ্বাশত ও চিরন্তন। এ আদর্শ কায়েমের জন্যই তিনি সারাটা জীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। তার দেখানো পথে ইসলামী সমাজ কায়েমের আন্দোলনকে যদি আমরা সফল করতে পারি তাহলেই তার প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে।
তাই আসুন, শহীদ মাওলানা নিজামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমরা শপথ গ্রহণ করি যে, এ দেশে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ।
আমি মাওলানা নিজামীর শাহাদাত কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমীন॥”
