১০ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার, ১:৪২

অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ

রাজধানীসহ দেশব্যাপী জামায়াতে ইসলামীর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালিত

কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে জেল গেইট থেকে পুনরায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, আওয়ামীলীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়ায় তারা রাজনীতির ভাষা হারিয়ে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় দেশ পরিচালনা করছে। হামলা, মামলা আর দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদের ওপর নির্যাতন করাই হল এখন বর্তমান সরকারের প্রধান কাজ। আদালত থেকে জামিনে মুক্তি লাভের পর সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে জেল গেইট থেকে পুনরায় গ্রেফতার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। তিনি অবিলম্বে সরকারকে এ ধরনের অন্যায়, অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক আচরণ পরিহার করার আহবান জানান। সকল প্রকার মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করে অধ্যাপক মুজিবুর রহমানসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেয়ার জোড় দাবি জানান।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ তিনি এ কথা বলেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শামছুর রহমান, কামাল হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য মতিউর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি শাফিউল আলম, ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি সোহেল রানা মিঠু, ছাত্রনেতা হাফিজ উদ্দিন রাসেল ইমাম প্রমুখ। মিছিলটি যাত্রাবাড়ী কুতুবখালি মোড় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

ড. হেলাল আরোও বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় স্বৈরাচারী আর বাকশালী ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাস করে। তারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনে কখনো বিশ্বাস করে না। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই সরকার দমন পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাই নন তিনি এদেশের একজন সম্মানিত ব্যক্তিও বটে। সরকার জামায়াত নেতৃবৃন্দের সকল মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা এখন অতীতের সকল স্বৈরাচারকে হার মানিয়েছে। তিনি সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, হামলা-মামলা আর গ্রেফতার নির্যাতন করে জামায়াতে ইসলামীর মতো একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দলকে শেষ করা যাবে না। তিনি সরকারের এ হীন মানসিকতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জনগণের ভাষা বোঝার আহ্বান জানান এবং অন্যথায় জনগণ স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলে তাদের রাজনীতির আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে।

ঢাকা মহানগরী উত্তর: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম বলেছেন, সরকার নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে জেলগেট থেকে আবারও গ্রেফতার করে প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ^াসী নয়। মূলত এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের আইন-আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করেছে। কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষী অতীতে জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে কোন স্বৈরাচারী শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি, আর কারো হবেও না। তিনি বর্ষীয়ান নায়েবে আমীরকে হয়রানি না কলে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় গণআন্দোলনের মাধ্যমে অধ্যাপক মুজিবসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসাবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর ১নং গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাইনিজের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরা সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, জিয়াউল হাসান, আব্দুল্লাহ জোবায়ের, সাইফুল কাদের, মঈন উদ্দিন, আশরাফুল আলম, আনোয়ারুল করিম, শফিউর রহমান, নাসির উদ্দীন ও আব্দুল মতিন খান, শিবিরের ঢাকা মহানগরীর পশ্চিম সভাপতি আব্দুল আলিম এবং সেক্রেটারি জোবায়ের প্রমুখ।

লস্কর তসলিম বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধবংস করে দিয়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লেও দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বেপরোয়া লুটপাট, চাঁদাবাজী ও দুর্নীতিতে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়েই স্থবিরতা নেমে এসেছে। এমতাবস্থায় জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্যই সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় শীর্ষনেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে জুলুম-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় বর্ষীয়ান আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদকে গ্রেফতার করে কথিত রিমান্ডের নামে হয়রানি চালিয়ে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি সরকারকে বিরাজনীতিকরণের পথ পরিহার করে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদসহ আটক সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারকে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার দেশের আর্থিক সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে। এ সরকারের আমলেই শেয়ারবাজার, হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ গ্রুপসহ দেশের অর্থনৈতিক সেক্টরে সাগর চুরির ঘটনা ঘটেছে। সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে ক্ষমতাসীনরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। অর্থনৈতিক সেক্টরে এসব বড় ধরনের কেলেঙ্কারীর পরও সরকার অপরাধীদের শাস্তির আওতায় না এনে বরং প্রকারান্তরে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। ফলে দেশের অর্থভান্ডারে শকুনীর শ্যান দৃষ্টি পড়েছে। সঙ্গত কারণে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। জনগণের আমানাতের টাকা উঠাতেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মূলত এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণেই এই ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

সিলেট মহানগর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ

সিলেট মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেছেন- আওয়ামী দুঃশাসনে দেশে মানবাধিকার লংঘনের মহোৎসব চলছে। ষড়যন্ত্রমুলক সকল মামলায় জামিন লাভের পরও জেলগেট থেকে জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ফের গ্রেফতার সম্পূর্ণ মানবাধিকার পরিপন্থী। এর মাধ্যমে সরকার নিজেই আইনের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে আইনের শাসনকে গলা টিপে হত্যা করছে। কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক আচরণ কল্পনাও করা যায় না। অবৈধ সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশে সংঘাত সৃষ্টি করতেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের উপর জুলুম নিপীড়ন চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীরকে ফের গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশের মুক্তিকামী জনতা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবীতে যখন স্বোচ্ছার। সকল দলের অংশ গ্রহণে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের দাবীতে গোটা জাতি যখন ঐক্যবদ্ধ। এমতাবস্থায় জাতীয় নেতাকে জামিন লাভের পর জেলগেট থেকে গ্রেফতার জাতির জন্য লজ্জাজনক। সকল ষড়যন্ত্র পরিহার করে অবিলম্বে জামায়াতের আমীর মকবুল আহমদ ও নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান সহ ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলায় কারান্তরীণ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।

আজ মঙ্গলবার জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসুচীর অংশ হিসেবে নায়েবে আমীরে জামায়াত সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে জামিন লাভের পর জেলগেট থেকে ফের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সিলেট মহানগর জামায়াত। মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন।

বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদ, সহকারী সেক্রেটারী মো: শাহজাহান আলী, জামায়াত নেতা হাফিজ মশাহিদ আহমদ, মু. আজিজুল ইসলাম, চৌধুরী আব্দুল বাছিত নাহির, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগরী সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সেক্রেটারী ফরিদ আহমদ প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন- হামলা, মামলা, জুলুম-নিপীড়ন চালিয়ে মুক্তিকামী জনতার আন্দোলন দমিয়ে রাখার সাধ্য কারো নেই।

প্রতিহিংসার রাজনীতির পথ পরিহার গণতন্ত্রের ও শান্তির পথে অবৈধ সরকারকে ফিরে আসতে হবে। এদেশে অতীতেও স্বৈরাচারীরা ঠিকে থাকতে পারে নি। আওয়ামীলীগও পারবেনা। অবিলম্বে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সহ ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় কারাগারে আটক সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন। অন্যথায় জনতার ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।

খুলনা মহানগরীঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান জামিনে মুক্তি লাভের পর রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা ফটকে পুনরায় অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার প্রতিবাদে খুলনায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূিচর অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নগরীতে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খুলনা মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি খান গোলাম রসুল, ইবনে ইসহাক, এম এম রহমান, হেলাল উদ্দীন, শামসুল ইসলাম, এম এ জামান, মো. জাবেদ, খান একরাম প্রমুখ।

বিক্ষোভ মিছিল উত্তর সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান-এর বিরুদ্ধে সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় আদালত থেকে জামিন লাভ করা সত্ত্বেও তাকে রাজশাহী জেলগেট থেকে পুনরায় অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে সরকার তাঁর প্রতি চরম অন্যায় আচরণ করেছে। সরকারের উচিত ছিল তাঁকে মুক্তি দিয়ে আইন ও আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। কিন্তু সরকার আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছে। নেতৃবৃন্দ সরকারের এহেন অন্যায় ও অমানবিক আচরণ বন্ধ করে অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।

ফেনী শহরঃ ফেনীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে কারাফটক থেকে অন্যায়ভাবে পুন:গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। ফেনী শহর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি ফেনী শহরের ট্রাংক রোড থেকে বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নীলফামারী শহরঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমানের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শহর জামায়াতে ইসলামী। সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট এলাকায় শহর আমীর হাফেজ আব্দুল মুনতাকিমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে বক্তব্য রাখেন, শহর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি শরফুদ্দিন খান, মো: মমিনুল ইসলাম।

এসময় শহর আমীর হাফেজ আব্দুল মুনতাকিম কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত আমীরের গ্রেফতারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ঘটনাকে আড়াল করতে জামায়াতের আমীরকে গ্রেফতার করেছে। অনতিবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানান তিনি।

গাজীপুর মহানগরীঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে জামিন লাভের পর ফের জেলগেট থেকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজীপুর মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সাইন বোর্ড এলাকায় এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি আফজাল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো: খায়রুল হাসান বলেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় আদালত থেকে জামিন লাভের পর পুনরায় জেলগেট থেকে গ্রেফতার আইনের শাসনের সুস্পষ্ট লংঘন। সরকারের এমন আচরণ চরম অন্যায়, অমানবিক এবং আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল। আমরা এই নেক্কারজনক গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অন্যানের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- জামায়াত নেতা আবু সিনা মামুন, এখলাছ উদ্দিন, আশরাফ আলী কাজল, মনির হোসাইন খান,হাফেজ আব্দুল মোতালিব, আবু তকি, মহিউদ্দিন এবং নগর শিবিরের সেক্রেটারি ফখরুল আলম সিফাত প্রমুখ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও জাতীয় সংসদের সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তির সময় হাই কোর্টের জামিন আদেশকে অমান্য করে ও আদালত অবমাননা করে পুলিশ তাঁকে পুনরায় গ্রেফতার করার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে জামায়াতে ইসলামী দেশব্যাপী বিক্ষোভ দিবস ঘোষণা করে।

কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ দিবস উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশে কোন গণতান্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই। আদালতের রায়কে অমান্য করে জেল গেইট থেকে পুন:গ্রেফতার আদালত অবমাননার শামিল। আওয়ামীলীগ সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য জামায়াত নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান।

জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রচার সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহর সভাপতিত্বে আগ্রাবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান, নগর জামায়াতের মজলিশে শূরার সদস্য এম.এফ.আজম, জামায়াত নেতা বেলায়েত হোসাইন, সরওয়ার জাহান সিরাজী, শিবির নেতা এস,এম, ইউসুফ, মোরশেদ ও রাইয়ান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

 বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে মুক্তি না দিয়ে রাজশাহী জেলগেট থেকে অন্যায়ভাবে পুনরায় গ্রেফতার করার ঘটনার প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে গতকাল রংপুর শহরে জামায়াতের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কোতওয়ালী থানা জামায়াতের সেক্রেটারি মশিউর রহমানের নেতৃত্বে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে

রাজশাহী মহানগরীঃ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমানকে অন্যায়ভাবে জেলগেট থেকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে দেশব্যাপী কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর রাজশাহীতেও বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী।

আজ সকালে জামায়াতের রাজশাহী মহানগরী শাখার উদ্যোগে চাঁপাই-রাজশাহী মহাসড়কের ডিংগাডোবা এলাকায় এই মিছিল বের হয়ে। এসময় এক সমাবেশে জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি ঘরোয়া বৈঠক থেকে অধ্যাপক মজিবুর রহমানকে কোন প্রকার মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করায় উচ্চ আদালত জামিন মুঞ্জর করেন। জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় রাজশাহীর এসপির নির্দেশে পুনরায় তাকে গ্রেফতার করা হয়- যা অমানবিক ও গণতন্ত্রের পরিপন্থী। মিছিল মিটিং করা এদেশের প্রত্যেক নাগরিক ও দলের গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকারকে হরণ করে সরকার জামায়াতের প্রতি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে। আসলে সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ এই সরকার দিশেহারা হয়ে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে ফেরাতে বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হত্যা, নির্যাতন, গ্রেফতার-অভিযান চালাচ্ছে। তারা পুলিশ বাহিনীকে দলীয় কর্মীর মত ব্যবহার করছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার জামায়াতের অগ্রযাত্রায় ভীত হয়ে জুলুম-নিপীড়ন ও গ্রেফতার অভিযানের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাব-মর্যাদা ক্ষুণ্ণ ও তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য মিথ্যা মামলার নাটক সাজিয়ে মিডিয়ায় প্রচার করছে। জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে কারাগারে রেখে নির্যাতন করছে। নেতৃবৃন্দ অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবি জানান এবং সরকার ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল সদস্যকে সংযত, গণতান্ত্রিক ও সভ্য আচরণের আহ্বান জানান। 

 এছাড়াও ঢাকা জেলা উত্তর, বরিশাল, কুমিল্লা, নারায়াণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর  নরসিংদী, পাবনা, নীলফামারী, দিনাজপুর, মানিকগঞ্জ, যশোর, বগুড়া, সুনামগঞ্জ, মৌলবীবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, চাদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের আরো বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালন করেছে জামায়াত।