১১ এপ্রিল বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, লেখক, গবেষক ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের তৃতীয় শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ.ন.ম শামসুল ইসলাম আজ ১০ এপ্রিল’১৮ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দলীয় লোকদের দ্বারা সাক্ষ্য দেওয়ায়ে জনাব মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। তার এই দণ্ডের বিরুদ্ধে দেশ এবং বিদেশ থেকে ব্যাপক প্রতিবাদ জানানো হয়। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা তার মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের আহবান জানায়। সরকার তা অগ্রাহ্য করে ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল রাত ১০টা ৩০ মিনিটে তাঁকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে।
জনাব মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ছাত্র জীবন থেকেই ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। তিনি বৃহত্তর আন্দোলনে তথা জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ছিলেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনার পাশাপাশি লেখক, সাংবাদিক ও গবেষক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গিয়েছেন। তিনি অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত গ্রন্থ ও প্রবন্ধসমূহ যুগযুগ ধরে ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ও দেশের জনগণের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে।
গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার অবদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তিনি জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত অন্যায়, অসত্য ও মিথ্যার বিরুদ্ধে আপোষহীন ছিলেন। তিনি সরকারের ষড়যন্ত্রের নিকট মাথা নত করেননি। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেন, “প্রাণের মালিক আল্লাহ। সুতরাং তিনি ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করার প্রশ্নই আসে না।” শাহাদাতের পূর্ব মুহূর্তে তিনি ইসলামী আন্দোলনের কর্মী, দেশ ও জনগণের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখে গিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করে গিয়েছেন, তিনিসহ ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের রক্তে রঞ্জিত এ দেশে একদিন ইসলামী আন্দোলন বিজয় লাভ করবে ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেছেন, সরকারের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলায় তাদেরকে হত্যা করার চক্রান্ত একদিন জনগণের সামনে উন্মোচিত হবে। সেদিন জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আরও সোচ্চার হবে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে সরকারের পতন হবে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আমি তার শাহাদাত কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং দেশবাসীকে তার রেখে যাওয়া আন্দোলনে শরীক হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।”