১১ ডিসেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৩:৪৫

সরকার শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করেছে

শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার স্বপ্নের ইসলামী সমাজ গড়ার আহবান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার স্বপ্নের ইসলামী সমাজ গড়ার আন্দোলনকে দৃঢ়তার সাথে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আজ ১১ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমান কর্তৃত্ববাদী জালেম সরকার ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১ মিনিটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করেছে। যেভাবে তার বিচার করা হয়েছে তা দেশে-বিদেশে সর্বত্রই বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ। ঐ বিচার কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি।

তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নির্দোষ। শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামীর নেতা হওয়ার কারণেই তাকে পরিকল্পিতভাবে সাজানো মিথ্যা অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মীরপুরের যে ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল সেই অভিযোগের অন্যতম সাক্ষী ছিলেন মোমেনা বেগম। আসল মোমেনা বেগম আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি।

সরকার জনৈক মহিলাকে ভূয়া মোমেনা বেগম সাজিয়ে তাকে দিয়ে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করিয়েছে। মোমেনা বেগম যে একজন ভূয়া সাক্ষী তা শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার আইনজীবীগণ আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। কিন্তু আদালত তা আমলে না নিয়ে ভূয়া মোমেনা বেগমের মিথ্যা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়ার পর সরকারের পৃষ্ঠপোষতকতায় শাহবাগে স্থাপিত তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের অন্যায় দাবি মেনে নিয়ে সরকার আইন সংশোধন করে এবং সংশোধিত আইনের ভিত্তিতে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে আপীল দায়ের করে। মাননীয় আপীল বিভাগ আবদুল কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। বিচারিক আদালতের দণ্ড বর্ধিত করে উচ্চ আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন। সাধারণতঃ বিচারিক আদালতের প্রদত্ত দণ্ড আপীলে কমানো হয়। অথবা একই দণ্ড বহাল রাখা হয়। কিন্তু আবদুল কাদের মোল্লাকে সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সত্যিকার অর্থে তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

আপীল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে জনাব আবদুল কাদের মোল্লা রিভিউ আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দিয়ে রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই তড়িঘড়ি করে তাকে ফাঁসি দেয়া হয়। কি কারণে উচ্চ আদালত তার রিভিউ আবেদন খারিজ করল তা তিনি জেনে যেতে পারেননি। তাকে ফাঁসি দেয়ার প্রায় দেড় বছর পর তার রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এসব ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তিনি ন্যায় বিচার পাননি।

শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা তাকে ফাঁসি দেয়ার পূর্বে বলে গিয়েছেন যে, ‘সরকার আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিচ্ছে। আমার শরীরের প্রতি ফোটা রক্ত এ দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে অনুপ্রাণিত করবে।’ ইসলামী আন্দোলনে তার অবদানের কথা আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং তার শাহাদাত কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। সেই সাথে তিনি ইসলামী সমাজ গড়ার যে স্বপ্ন দেখতেন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি জামায়াতের সকল নেতা-কর্মী, সুধী, সমর্থক ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”