২৮ অক্টোবর ২০১৭, শনিবার, ৬:৪৬

যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী ২৮ অক্টোবরের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের হত্যাকান্ড বিশ্ব ইতিহাসের নির্মম, নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক ঘটনা। এই হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ধরাবাহিকতা ব্যাহত করা হয়েছে। ফলে স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসীবাদ জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। কিন্তু শহীদানের রক্ত কখনো বৃথা যায় না বরং শহীদদের রক্তের পথ ধরেই আদর্শবাদী আন্দোলনের বিজয় সূচিত হয়। তিনি ২৮ অক্টোবরের শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন, আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারী ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং নিহতদের মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।

তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের শহীদদের স্মরণে ‘আলোচনা সভা ও দোয়া’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরা সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, জামায়াত নেতা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশীদ ও মনিরুজ্জামান শামীম প্রমূখ।

সেলিম উদ্দিন বলেন, সরকার দেশকে নেতৃত্বশূন্য করে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতেই প্রতিশ্রুতিশীল ও প্রজ্ঞাবান জাতীয় নেতাদের বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। সে ধারাবাহিকতায় বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় কর্মপরিসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মুহা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মোহাম্মদ শাহজাহান, সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমীর জাফর সাদেক সহ নেতৃবৃন্দকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে কারাগারে অন্তরীণ রাখা হয়েছে। মূলত এসব ষড়যন্ত্রের সূচনা হয়েছিল ২৮ অক্টোবরের নারকীয় হত্যাকান্ডের মাধ্যমে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এই অপশক্তিকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতনের পথ পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ সহ শীর্ষনেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

তিনি বলেন, দেশে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতন্ত্র ও আধিপত্যবাদী অপশক্তির সম্মিলিত পদচারণা চলছে। এই অপশক্তির ষড়যন্ত্রেই পিলখানা ট্রাজেডির মাধ্যমে দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীকে ধ্বংস ও রাষ্ট্রীয় সীমান্তকে অরক্ষিত করা হয়েছে। শাসক দলের হাতে এখন দেশ ও গণতন্ত্র কোনটাই নিরাপদ নয় । তাই ২৮ অক্টোবর ও ২৫ ফেব্রুয়ারির পিলখানা হত্যাকান্ডে শুধু শোকাহত হলেই চলবে না বরং শোককে শক্তিকে পরিণত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং ন্যায়-ইনসাসভিত্তিক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, সরকার অপশাসন ও দুঃশাসনের কারণেই গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা জনগণের কল্যাণে কাজ না করে নিজেদের ক্ষমতা রক্ষার জন্যই জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকার জনপ্রতিধিত্বশীল নয় বলেই দেশ ও জাতির জন্য তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। একই কারণে তারা রোহিঙ্গাসহ আন্তঃদেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন সমস্যারই সমাধান করতে পারছে না। সরকারের নির্লিপ্ততার কারণেই দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ব্যবসায়ী অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা সে দিকেই অঙ্গলী নির্দেশ করে। তাই দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থেই এই ব্যর্থ এবং জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লগি-বৈঠার তান্ডবে নিহত শহীদদের স্মরণে আজ শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর একটি কনফারেন্স হলে আলোচনা সভা ও দোআ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর (ভারপ্রাপ্ত) ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য এ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।

সভাপতির বক্তব্যে ড. হেলাল বলেন, আজ সেই ভয়াল ২৮ অক্টোবর, এগার বছর আগে ২০০৬ সালের এই দিনে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে জামায়াত-শিবিরের উপরে পরিকল্পিত ভাবে তাণ্ডবলীলা চালায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। প্রকাশ্য দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে সাপের মত পিটিয়ে মানুষকে হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। সেই তান্ডবে ঢাকার রাজপথে ৬ জন সহ সারাদেশ ১৩ জন জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মী শাহাদাৎ বরন করেন এবং আহত হন হাজার হাজার নেতা-কর্মী। সাপের মত পিটিয়ে হত্যা ও মৃত লাশের ওপর নৃত্য ও উল্লাস করার মতো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের কোটি কোটি বিবেকবান মানুষকে হতবাক করে দিয়েছিল। সেদিন জামায়াতকে ধ্বংস করার জন্য নির্দয়, নিষ্ঠুর ও পাশবিক কায়দায় আওয়ামী সন্ত্রাসী ও তার বাম শরীকরা পরিকল্পিত ভাবে যে নরহত্যায় মেতে উঠেছিল তা দেখে কেঁদেছে বাংলাদেশ, কেঁদেছে বিশ্বমানবতা অথচ কাঁপেনি সন্ত্রাসীদের হাত ও বুক।

তিনি আরো বলেন, জামায়াত-বিএনপি জোটের রাজনৈতিক সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়েই আওয়ামীলীগ মুলত এই জঘন্য তাণ্ডবলীলা চালায়। এর মাধ্যমে জামায়াতকে ধ্বংস করে জোটের মনোবল ভেংগে দেওয়ায় তাদের লক্ষ ছিল। কারন বিএনপি ও জামায়াত জোটগত ভাবে পরবর্তী নির্বাচন করলে কোনভাবেই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসতে পারতো না। জোট ভেংগে কেবলমাত্র আলাদাভাবে নির্বাচন করলেই আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন পুরন হত ফলে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষেই জামায়াতকে পরিকল্পিত ভাবে টার্গেট নির্ধারণ করে এই জঘন্য মানবতাবিরোধী ঘটনা সংঘটিত করে আওয়ামী লীগ ও তার নামধারীরা।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে লগি, বৈঠা ও মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যে হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছিল তা দেখে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব সহ সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে অথচ ২৮ অক্টোবরের পৈশাচিকতার বিচার হওয়াতো দূরের কথা, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলাই প্রত্যাহার করে নেয়। তিনি অবিলম্বে এই ঘটনার বিচার দাবী করে বলেন, দেশে সুবিচার নিশ্চিত করার জন্যই এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া উচিত এবং বর্তমান সরকার এতে ব্যর্থ হলে এই বাংলাদেশেই কোনো একদিন এই অন্যায়ের সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।

আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিনের কর্মপরিষদ সদস্য শামসুর রহমান, কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিনের শুরা সদস্য এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন তালুকদার, মুহিব্বুল্লাহ ফরিদ, আবু শাহাদাত মোহাম্মদ আলী সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

এছাড়াও রাজধানীর খিলগাঁও, মতিঝিল, পল্টন থানা, হাজারিবাগ থানা সহ বিভিন্ন থানায় রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর কালো দিবস উপলক্ষ্যে স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম মহানগরী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য আ.জ.ম. ওবায়েদুল্লাহ্ বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টন ময়দানে প্রকাশ্য দিবালোকে আওয়ামী-ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা নিমর্মভাবে মানুষ হত্যার পর মৃত লাশের উপর নৃত্য করার দৃশ্যে দেশে বিদেশে গোটা বিশ্ব বিবেক কেঁদেছে। আজও তার বিচার হয়নি। জামায়াতের জনসভায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ৮জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করে আওয়ামীলীগের লগি-বৈঠাধারী গুন্ডারা। আওয়ামীলীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে সেই পল্টন হত্যাকান্ডের মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। এখনো আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সারাদেশে খুন, গুম ও বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড অব্যাহত রেখেছে। আওয়ামীলীগের লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব এদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে দেবে ইন্শা-আল্লাহ্। তিনি অবিলম্বে পল্টন হত্যায় জড়িত আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত দিবসে ২৭ ও ২৮ অক্টোবর’২০১৭ইং ২০০৬ সালের এ দিনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লগি-বৈঠার হামলায় নিহত জামায়াত-শিবিরের ৮জন নেতা-কর্মী হত্যার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ঢাকার পল্টন হত্যাকান্ডের শহীদ জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,নগর জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ্,নগর কর্মপরিষদ সদস্য এম.ছিদ্দিকুর রহমান ও নগর মজলিশে শূরার সদস্য ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ। দোয়া মাহফিলে মোনাজাত পরিচালনা করেন নগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আ.জ.ম. ওবায়েদুল্লাহ্।

রাজশাহী মহানগরী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আওয়ামী জোট অত্যান্ত পরিকল্পিত ভাবে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াত শিবিরে নেতা-কর্মীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ঢাকার রাজপথে ৬ জনসহ সারাদেশে জোটসরকারের ৫৪ জনকে শহীদ ও হাজার হাজার নেতা কর্মীদের আহত করে ছিল যা ইতিহাসে বিরল।

আওয়ামী জোটের এ নির্মম রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।এই নিশংস হত্যাকান্ডের জন্য আওয়ামী জোটকে একদিন আল্লাহর আদালতে অবস্যই জবাবদিহি করতে হবে।

আজ (২৮-১০-১৭) শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৮ অক্টোবর ২০০৬,শহীদদের স্বরণে আলোচনা সভা ও দোয় মাহফিল এর অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে নগর নেতৃবৃন্দ এ সব কথা বলেন।

এছাড়া মহানগরীর বোয়ালিয়া, রাজপাড়া, শাহ-মখদুম,মতিহার, পবা থানা ও কাটাখালি পৌরসভা, নওহাটা পৌরসভাসহ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে শহীদদের মাগফিরাত ও শাহাদাত কবুলিয়াতের জন্য দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

সিলেট মহানগরী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন- ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে লগি-বৈঠা দিয়ে নিরীহ জামায়াত শিবির নেতাকর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যার বর্বরতা জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছিল। সেদিন তারা শুধু নিরীহ নেতাকর্মীদের পিটিয়ে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। লাশের উপর উঠে নৃত্য করার দৃশ্য বিশ্ববিবেককে নাড়া দিলেও আওয়ামীলীগের বিবেকে ক্ষনিকের জন্যও বাধেনি। আজ পর্যন্ত সেই নৃশংস মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িতদের বিচার না করে আওয়ামীলীগ দেশপ্রেমিক ইসলামী নেতৃত্বকে বিচারের নামে হত্যা করেছে। এই নারকীয় উল্লাসের সাথে জড়িতদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। শহীদদের রক্ত বৃথা যাবেনা, বৃথা যেতে পারেনা। বাংলার সবুজ জমিনের ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বিনির্মানের মাধ্যমে ২৮শে অক্টোবরের লগি-বৈঠার তান্ডবে শাহাদাতবরনকারী শহীদদের রক্তের বদলা নেয়া হবে, ইনশাআল্লাহ।

তিনি শনিবার জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত আহুত দেশব্যাপী দোয়া দিবস কর্মসুচীর অংশ হিসেবে, ভয়াল ও নৃশংস ২৮শে অক্টোবরের নৃশংস লগি-বৈঠার তান্ডবে শাহাদাতবরনকারীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় সিলেট নগর জামায়াত আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। সিলেট মহানগরীর বিমানবন্দর থানা জামায়াতের সেক্রেটারী শফিকুল আলম মফিক-এর পরিচালনায় বাদ আসর অনুষ্ঠিত মাহফিলে ২৮শে অক্টোবরের নির্মমতায় শাহাদাতবরনকারীদের রুহের মাগফেরাত, জাতীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা উত্তর জামায়াতের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মো: ফখরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। মোনাজাত পরিচালনা করেন বিমাবন্দর থানা আমীর মুফতি আলী হায়দার। উপস্থিত ছিলেন- সিলেট সদর থানা জামায়াতের আমীর সুলতান খান ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জৈন উদ্দিন প্রমুখ।

এদিকে মহানগরীর শাহপরান পূর্ব, কোতয়ালী পূর্ব ও দক্ষিণ সুরমা থানা জামায়াতের উদ্যোগে পৃথক পৃথক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। শাহপরান পূর্ব থানা জামায়াতের উদ্যোগে অনুষ্ঠি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর নায়েবে আমীর হাফিজ আব্দুল হাই হারুন। সভাপতিত্ব করেন থানা আমীর শামীম আহমদ ও পরিচালনা করেন জামায়াত নেতা হাফিজ মাহবুবুর রহমান। কোতয়ালী পূর্ব থানা জামায়াতের আমীর হাফিজ মশাহিদ আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী রফিক মজুমদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদ। দক্ষিণ সুরমা থানায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন থানা আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান।

পৃথক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেই সকল মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ২৮শে অক্টোবরের মত নৃশংস হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের আড়াল করেছে। বন্দুকের জোরে ক্ষমতার মসনদ ঠিক রাখতে আওয়ামীলীগ আজো বিভিন্ন কায়দায় ২৮শে অক্টোবের পাশাবিকতাকে লালন করে তাদের ধ্বংস ডেকে আনছে। স্বৈরাচারী সরকার বেশীদিন ঠিকে থাকতে পারবেনা । জনতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে এর সাথে জড়িতদের বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো হবে। অবিলম্বে ২৮ শে অক্টোবরের জঘন্য নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করুন।

এছাড়াও খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, নীলফামারী, দিনাজপুর, ফরিদপুর, যশোরসহ দেশের আরো বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।