২৪ মে ২০১৭, বুধবার, ২:৫৬

তীব্র লোড শেডিংয়ের কারণে জনজীবনে অস্বস্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

বিদ্যুৎ উৎপাদনের মিথ্যা হিসাব দিয়ে সব অর্থ সরকারী দলের দুর্নীতিবাজদের পকেটে যাচ্ছে

সারা দেশে অব্যাহতভাবে তীব্র লোড শেডিংয়ের কারণে জনজীবনে অস্বস্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২৪ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “জৈষ্ঠ্য মাসের এ প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সারা দেশে তীব্র লোড শেডিংয়ের ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে অসহনীয় অস্বস্তি ও দুর্ভোগ।

রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেটসহ সারা দেশেই চলছে প্রচ- তাপদাহ, অন্যদিকে চলছে তীব্র লোড শেডিং। তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ দিনে কিংবা রাতে ঘুমাতে পারছে না। তাছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় বাসা-বাড়ীতেও পানির পাম্পে পানি উঠাতে না পারায় বিদুৎ ও পানি সংকটে জনজীবন অতিষ্ঠ। তাছাড়া কল-কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। কৃষি জমিতে কৃষকগণ পানি সেচ দিতে পারছে না। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। গরমে ডায়রিয়া, আমাশয়, হিটস্ট্রোকসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, সারা দেশে বিদ্যুৎ সংকট চলছে। আগামী এক মাসেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। অর্থাৎ আসন্ন রমজান মাসে লোড শেডিং চলবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রোজাদারদের কষ্টের কোন সীমা থাকবে না।

পিডিবি’র ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্য ও বাস্তব অবস্থার মধ্যে বিরাট পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। তাদের ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্য থেকে দেখা যায় গত ২১ মে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট; উৎপাদন ছিল ৮ হাজার ৮শত ৩০ মেগাওয়াট, ২২ মে চাহিদা ছিল ৭ হাজার ৮ শত ৭৮ মেগাওয়াট; উৎপাদন ছিল ৮ হাজার ২শত ৫৯ মেগাওয়াট, ২৩ মে চাহিদা ছিল ৮ হাজার মেগাওয়াট; উৎপাদন ছিল ৮ হাজার ৬শত ১৫ মেগাওয়াট। পিডিবির দেয়া তথ্য যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে বিদ্যুতের লোড শেডিং হওয়ার কথা নয়। অথচ সারা দেশে তীব্র লোড শেডিং চলছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র ৫/৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। বাকী ১৮/১৯ ঘন্টা লোড শেডিং চলছে। এ থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, পিডিবির দেয়া তথ্যের মধ্যে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশবাসীকে প্রতারিত করছে।

দেশে বর্তমানে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। সরকার প্রতি বছরই বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে প্রচুর অর্থ খরচ করছে এবং সরকার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা প্রচার করছে। দেশবাসীর প্রশ্ন সরকার কাগজে-কলমে এত বিদ্যুৎ উৎপাদন দেখাচ্ছে। অথচ জনগণ বিদ্যুৎ পায়না। তাহলে সরকারের খরচ করা বিপুল অর্থ এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ যায় কোথায়? এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, বাজেটে বরাদ্দকৃত বিপুল অর্থ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় না করে তা সরকারী দলের নেতা-কর্মীদের পকেটেই যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের মিথ্যা হিসাব দিয়ে সব অর্থ সরকারী দলের দুর্নীতিবাজদের পকেটে যাচ্ছে।
বিুদ্যৎ খাতের দুর্নীতি বন্ধ করে জরুরী ভিত্তিতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”