৩০ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১:৩৮

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করার নির্দেশ প্রদানে বিস্ময় প্রকাশ

সরকার কাকে খুশি করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনের এ অন্যায় নির্দেশ দিয়েছে তা দেশবাসী জানতে চায়

সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে যে, বাংলাদেশ সরকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ ১লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ পালন করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। এতে বিস্ময় প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আজ ৩০ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “শতকরা নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বংলা নববর্ষ পালনের নির্দেশ চাপিয়ে দিতে পারেন না। যে দেশের সংবিধানে বিস্মিল্লাহির রাহ্মানির রাহীম ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল আছে সে দেশে এ ধরনের নির্দেশ প্রদান সংবিধান বিরোধী ও বেআইনী। সরকার কাকে খুশি করার জন্য এ অন্যায় নির্দেশ প্রদান করেছেন তা দেশবাসী জানতে চায়।

বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনিস্টিটিউটের উদ্যোগে ১লা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রবর্তন করা হয়েছে। মঙ্গল শোভযাত্রায় পুতুল, হাতি, কুমির ও ঘোড়াসহ জীব-জানোয়ারের মুখোশ পরে বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্যসহকারে যুবক-যুবতীরা হাত ধরে পথ প্রদক্ষিণ করার যে রীতি চালু করা হয়েছে তা ইসলাম ধর্ম কখনো অনুমোদন করে না। দেশের ওলামায়ে কেরাম ইতোমধ্যেই অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, মঙ্গল শোভাযাত্রা ইসলাম সম্মত নয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা মুসলিম সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না। এটা বিজাতীয় সংস্কৃতি। এক ধর্মের বিধান অন্য ধর্মের মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়। এক ধর্মের বিধান ও অন্য ধর্মের মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়াটা স্বৈরাচারী সরকারের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।

সকল মঙ্গল ও কল্যাণের মালিক মহান আল্লাহ তায়ালা। মঙ্গল কিভাবে চাইতে হয় তাও আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করেছেন। মানুষের তাক্বদির মহান আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত। তা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের বিভিন্নস্থানে বর্ণনা করেছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে সূরা ক্বাদর মুসলমানদের হেদায়েতের জন্য উপহার দিয়েছেন। ব্যক্তি ও জাতির মঙ্গল এবং কল্যাণের জন্য মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সূরা-কা¡দরে রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতসমূহে লাইলাতুল ক্বাদর তালাশ করতে এবং ব্যক্তি ও জাতির মঙ্গল এবং কল্যাণের জন্য দোয়া করতে বলেছেন। এ ছাড়াও মানুষ প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের শেষে দুনিয়া ও আখিরাতের মঙ্গলের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করে থাকে। কুরআন-হাদীসের হুকুম বাদ দিয়ে ১লা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে কখনো জাতির কল্যাণ হতে পারে না। বরং এতে যুবক-যুবতীদের ঈমান ও নৈতিক চরিত্র ধ্বংস হয়। আমাদের নিজস্ব শিক্ষা-সংস্কৃতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তাই ১লা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে জাতির উপর বিজাতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশের ওলামায়ে কেরাম এবং পীর-মাশায়েখসহ সকল দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”