১৯ আগস্ট ২০১৯, সোমবার, ২:২৫

রূপনগর বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা পরিদর্শন করলেন সেক্রেটারি জেনারেল

গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর রূপনগরের চলন্তিকা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। ফলে বস্তির দুই হাজারেরও বেশি ঘর ভষ্মীভূত হয় এবং প্রায় ৫০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। বেশ কিছু সংখ্যক মানুষ আহতও হয়। ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।

এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে দেখতে এবং আশ্রয়হীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। তিনি স্মরণকালের এই ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে আন্তরিকভাবে মর্মামত হন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি গভীর সহমর্মীতা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। সেক্রেটারি জেনারেল দ্রুত অগ্নিনির্বাপনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সংশ্লিষ্টদের অতিদ্রুত পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করার আহবান জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম, রূপনগর থানা আমীর নাসির উদ্দীন, পল্লবী থানা উত্তর আমীর সাইফুল কাদের, দক্ষিণ আমীর আশরাফুল আলম, রূপনগর সেক্রেটারি আবু হানিফ, পল্লবী সেক্রেটারি আবুল কালম পাঠান, জামায়াত নেতা জামাল উদ্দীন, লিয়াকত আলী, সাইফুল ইসলাম, আবুল বাশার ও শাহজাহান দেওয়ান এবং শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি যোবায়ের প্রমূখ।

সেক্রেটারি জেনারেল ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শনকালে সাধারণ মানুষ সহ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের সাথে একান্তে কথা বলেন। তিনি এই বিপদে মনোবল না হারিয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের উপর ভরসা রেখে ও ধৈর্য্যরে সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ক্ষতিগ্রস্থদের পরামর্শ দেন এবং জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের যথাসম্ভব সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। সেক্রেটারি জেনারেল নগরীতে প্রতিনিয়ত এ ধরনের রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও পুনরাবৃত্তি রোধে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এবং নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

এ সময় তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা যেকোন ধরনের দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখতে চাই। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অগ্নিদুর্ঘটনার প্রকোপ যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা সত্যিই রহস্যজনক। বিগত দিনে নিমতলী ও চকবাজার সহ দেশের ভয়াবহতম অগ্নিকান্ডগুলো নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিগুলো ইতিবাচক কোন ফল বয়ে আনেনি। দেশে অগ্নিদুর্ঘটনার প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কোন পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় অতি তুচ্ছ ঘটনায় অবহেলা ও উদাসীনতার কারণেই জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আমাদের দেশের প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে দাবি করা হলেও অগ্নিনির্বাপনে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আমাদের হাতে নেই। তাই যেকোন অগ্নিদুর্ঘটনায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। অগ্নিনির্বাপন সহ যেকোন দুর্যোগে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ও সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ, সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীনদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ সহ সম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে পূনর্বাসন, আহতদের সুচিকিৎসা সহ অর্থিক সাহায্য এবং ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং সংগঠনের নেতাকর্মীদের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের দুর্দশা লাঘবে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসার আহবান জানান।