ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সে দেশের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসনের বিলোপ ঘটিয়ে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে কেন্দ্র শাসিত দুটি আলাদা অঞ্চল সৃষ্টি করার যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব মকবুল আহমাদ আজ ৬ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সে দেশের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসনের বিলোপ ঘটিয়ে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে কেন্দ্র শাসিত দুটি আলাদা অঞ্চল সৃষ্টি করার যে ঘোষণা প্রদান করেছে তাতে আমি গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছি। ভারত সরকারের মুসলিম জাতিসত্তা বিরোধী এ ঘোষণায় গোটা বিশ্বের মুসলমানসহ সকল শান্তিকামী মানুষ উদ্বিগ্ন, উৎকন্ঠিত ও মর্মাহত। তারা এ ঘোষণার মাধ্যমে উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক হীন স্বার্থই সংরক্ষণ করতে চায়।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু-কাশ্মীরের জনসংখ্যাগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বদলে দিয়ে জোরপূর্বক তাদেরকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধিনস্ত রাখার হীন উদ্দেশ্যেই ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিখ-িত করে কেন্দ্র শাসিত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নামে ২টি অঞ্চল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘোষণার মাধ্যমে ভারত সরকার সেদেশের দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্যকে ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে। সেখানকার জনগণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেই ভারত সরকার ইতোমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের দু’জন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীসহ অনেক নেতাকেই গ্রেফতার করে সেখানে ১৪৪ ধারা জারী করেছে। ভারত সরকারের এ বলপ্রয়োগের সিদ্ধান্ত অন্যায়, অমানবিক এবং আন্তর্জাতিক রীতি-নীতির পরিপন্থী।
ভারত সরকার ১৯৪৭ সাল থেকেই জম্মু-কাশ্মীরের সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের মতামত উপেক্ষা করে সামরিক শক্তির জোরে জম্মু-কাশ্মীরকে দখল করে রেখেছে। জম্মু-কাশ্মীরের মুসলমানদের স্বাধীনতার প্রশ্নে জাতিসংঘে ১৯৪৮ সালে কাশ্মিরে গণভোটের সিদ্ধান্তকারী প্রস্তাব গৃহিত হয়। ভারত সে প্রস্তাবে সম্মতি প্রদান করে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষা করেনি। বরং জম্মু-কাশ্মীরের মুসলমানদের পাশবিক শক্তির জোরে দমন করে রাখার জন্য ভারত সরকার দীর্ঘ ৭২ বছর যাবত গণহত্যা, জুলুম-নির্যাতন-অত্যাচার চালাচ্ছে। ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালিয়ে তাদের সেদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীরের মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া বিশ্বের সকল মুসলিম রাষ্ট্রসহ শান্তি-কামী বিশ্ববাসীর দায়িত্ব।
তাই জম্মু-কাশ্মীরের মুসলমানদের ভারত সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও গণহত্যা থেকে রক্ষা করার স্বার্থে দ্রুত এগিয়ে আসার জন্য বিশেষভাবে সকল মুসলিম রাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসিসহ সকল মানবাধিকার সংস্থা এবং শান্তিকামী রাষ্ট্রের প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”