২ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:২৫

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাত হানার সম্ভাব্য আশঙ্কা থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া এবং সম্ভাব্য যেকোন পরিস্থিতির জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকার আহবান

আগামী ৩ মে শুক্রবার বিকালে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাত হানার সম্ভাব্য আশঙ্কা থেকে পরিত্রাণের জন্য নফল নামাজ, তাসবীহ-তাহলীল ও মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারের দোয়া এবং সম্ভাব্য যেকোন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে সরকার, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দেশের বিত্তবান মানুষসহ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীসহ সকল শ্রেণি-পেশার সাধারণ জনগণকে দুর্গত মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ আজ ২ মে এক বিবৃতি দিয়েছেন।

প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন, “দেশের আবহওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আগামী ৩ মে শুক্রবার বিকালে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। আবহাওয়ার এমন অগ্রিম সতর্কবার্তা বাস্তবে রূপ নিলে তাতে উপকূলীয় এলাকায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি ও মারাত্মক মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সকল বিপদ-আপদ, সংকট-দুর্যোগ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কালামে হাকীমে ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, জানমাল ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করব’ (সুরা আল বাকারাহ-আয়াত-১৫৫)। কিন্তু আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মানুষের জন্য মোটেই সহজ সাধ্য নয়। তাই ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’সহ যেকোন সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে ও আল্লাহর পরীক্ষা থেকে নাজাত পেতে আমাদেরকে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারের ধর্ণা দেয়ার কোন বিকল্প নেই।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে পাকে আমাদেরকে সে নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থণা কর।’ (সুরা আল বাকারাহ-আয়াত-৪৫) তিনি ঘূর্ণিঝড় ফণির আঘাত থেকে বাঁচতে মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্য প্রার্থণায় আগামীকাল ৩ মে বাদ জুময়া দেশের সকল মসজিদে ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে নফল নামাজ, তাসবীহ-তাহলীল ও বিশেষ মোনাজাত করতে সারাদেশের সকল স্তরের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, নদী মাতৃক আমাদের এই দেশে আমাদেরকে নানাবিধ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মুখোমুখী হতে হয়। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ও খরার সাথেও আমরা অধিক পরিচিত। তাই আবহাওয়ার পূর্বাভাষ অনুযায়ি ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ যদি আঘাত হানে তবে তৎপরবর্তী পরিস্থিতিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে।

ঘূর্ণিদুর্গতদের নিরাপদ স্থানে সরানোসহ তাদেরকে মানবিক কাজ করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দুর্গত নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য নিতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। নিত্যপ্রয়োজনী খাদ্য সামগ্রী, পানীয় দ্রব্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর অগ্রিম মজুদ রাখতে হবে। এ বিষয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ, যেকোন দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়ানো সরকারের সাংবিধানিক ও নৈতিক দায়িত্ব। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতের আশঙ্কা থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করেন এবং মহান আল্লাহর ফয়সালা যদি তা-ই হয় তবে আঘাত পরবর্তী পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সরকার, দাতা ও সাহায্য সংস্থা এবং সারাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সকল স্তরের নেতাকর্মীসহ সকল শ্রেণি-পেশার জনগণকে দুর্গত মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।”