৯ মার্চ ২০১৯, শনিবার, ১২:১৩

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার বক্তব্যে প্রমাণ হয় দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়

বিগত ৩০ ডিসেম্বরের ব্যালট ডাকাতির প্রহসনের নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করে দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে জাতীয় সংসদের নতুন নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ৯ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা গত ৮ মার্চ আগারগাঁও-এ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রদত্ত এক বক্তব্যে স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ৩০ ডিসেম্বর নয়, ২৯ ডিসেম্বর রাতেই ব্যালট পেপার কেটে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। তার বক্তব্যে প্রমাণ হয়, ৩০ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিচালনায় ভোটারবিহীন নির্বাচনের নাটক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার এ বক্তব্য প্রদানের পরে ৩০ ডিসেম্বরের কথিত নির্বাচন রাজনৈতিক, সাংবিধানিক, আইনগত ও নৈতিক বৈধতা হারিয়েছে। তিনি সাক্ষ্য দিলেন যে, দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেছেন, ‘কারা আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে, এ জন্য কারা দায়ী, কাদের কী করা প্রয়োজন, সেই শিক্ষা দেয়ার ক্ষমতা, যোগ্যতা নির্বাচন কমিশনের নেই। কী কারণে এগুলো হচ্ছে তা বলারও কোন সুযোগ নেই।’ এই কথা বলার পর বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ গোটা নির্বাচন কমিশনেরই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে চলে যাওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশনের কোন দায়িত্বে অধিষ্ঠিত থাকার নৈতিক ও সাংবিধানিক কোন অধিকারই তাদের নেই। তাদের ষোলকলা ব্যর্থতার কথা তারা স্বীকার করে নিয়েছেন।

এই বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ৩০ ডিসেম্বরে ব্যালট ডাকাতির নির্বাচনের দায়-দায়িত্ব তিনি বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকারের উপর চাপালেন। এ থেকে দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, দেশে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসন চলছে। যেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারও মুখ খুলে কথা বলতে পারছেন না। আজকে জাতির সামনে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, এই সরকারে অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা আদৌ সম্ভব নয়।

৩০ ডিসেম্বর জালিয়াতি, ভোটকেন্দ্র দখল, ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রহসন হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর সকালে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করার আগেই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে বিরোধী দলীয় জোটের প্রার্থীদের এজেন্টদেরকে জোর করে বের করে দিয়ে প্রার্থীদের মারপিট করে আহত করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২৯ ডিসেম্বর রাতে ও ৩০ ডিসেম্বর সকালে এক নিকৃষ্টতম ব্যালট ডাকাতির নির্বাচনের নাটক করা হয়েছে। এই নির্বাচন সকল বিরোধী দলীয় জোট, দল এবং জনগণ ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই নির্বাচনের কোন ধরনের বৈধতা নেই।

অতএব, অবিলম্বে দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে তার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন পুনরায় গঠন করে তাদের অধীনে জাতীয় সংসদের নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার কার্যক্রম শুরু করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় দেশ গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে।”