২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ৯:৪৬

সড়কে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে উত্তাল চুয়েট

সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। চুয়েটের প্রধান ফটকের সামনে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে দ্বিতীয় দিনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা।

সড়ক অবরোধের কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। আটকে পড়েন অসংখ্য যাত্রী। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে ঘোষণা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

শিক্ষার্থীদের উল্লেখখযোগ্য দাবিগুলো হলো-পলাতক চালক ও তার সহযোগীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ব্যবস্থা করা, নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং আহত শিক্ষার্থীর সব চিকিৎসাব্যয় শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষকে গ্রহণ করতে হবে, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ক্যাম্পাসে আধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে শাহ আমানত ও এবি ট্র্যাভেলসসহ সব লোকাল বাস চলাচল বন্ধ করা, রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক নির্মাণ করা, প্রতিটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাগজপত্র ও চালকদের লাইসেন্স নিয়মিত যাচাই করা, ছাত্রকল্যাণ পরিষদকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ছাত্র প্রতিনিধিদল গঠন করা। এসব দাবি লিখিতভাবে না মানা পর্যন্ত চুয়েটের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম (ক্লাস, পরীক্ষা) স্থগিত থাকবে বলে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন। আন্দোলনের পাশাপাশি মঙ্গলবার বেলা ১২টায় নিহত শিক্ষার্থীর গায়েবানা জানাজা ও বেলা ৩টায় শোকসভা এবং দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা।

চুয়েটের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তারাও বেদনাহত। শিক্ষার্থীদের যেসব দাবিতে আন্দোলন করছেন তাদের আন্দোলনের সঙ্গে চুয়েট প্রশাসনও একমত। তবে সমস্যাগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চুয়েট কর্তৃপক্ষ, চুয়েটের ছাত্র প্রতিনিধি, বাস মালিক সমিতি, পুলিশ, রাউজান উপজেলা প্রশাসনসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বৈঠক করেছেন।

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার জিয়ানগরে সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী। দ্রুতগতির শাহ আমানত পরিবহণের একটি বাস শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তওফিক হোসেন। সহপাঠীদের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর এদিন সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চারটি বাস আটক করেন ও পরবর্তীতে তিনটি বাস ভাঙচুর এবং একটি বাসে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ করেন।

https://www.jugantor.com/index.php/todays-paper/last-page/797948