২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৫:৫৬

কিশোর হলেও তারা ভয়ঙ্কর অপরাধী

চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও নাশকতা থেকে শুরু করে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে হাত পাকাচ্ছে তারা

তারা বয়সে কিশোর, কিন্তু ইতোমধ্যে তাদের নামের পেছনে যোগ হয়েছে বিদঘুটে টাইটেল। একেকজন নেতৃত্ব দিচ্ছে একেক দলের। টপবাজ গ্রুপ, গ্যাংস্টার প্যারাডাইস, বয়েস হাইভোল্টেজ, দে-দৌড়, হ্যাঁচকা টান এবং বুস্টার গ্রুপসহ বিভিন্ন দল তৈরি করে পাড়া-মহল্লায় জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে।

এমনই কিশোর গ্যাংয়ের ৫০ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় র‌্যাব-১০ একাধিক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।

র‌্যাব জানায়, কিশোর গ্যাংয়ের এসব সদস্য রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা এবং পাড়া-মহল্লায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত রয়েছে।
র‌্যাব-১০ এর সহকারী পুলিশ সুপার এম জে সোহেল জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার র‌্যাব-১০ এর একাধিক দল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় একাধিক অভিযান চালায়। এসব অভিযানে টপবাজ গ্রুপের রাব্বি, গ্যাংস্টার প্যারাডাইস গ্রুপের ইউসুফ, বয়েস হাইভোল্টেজ গ্রুপের সাইফুল, দে-দৌড় গ্রুপের মাইদুল, হ্যাচকা টান গ্রুপের শাহাদাৎ ও বুস্টার গ্রুপসহ বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৫০ জনকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি লাঠি, ১৭টি চাকু, ৫টি ছোড়া, ১টি সুইচ গিয়ার চাকু, ১টি ছুরি, ১টি চাপাতি, ১টি চাইনিজ কুড়াল ও ইলেক্ট্রিক শক দেয়ার ১টি মেশিন জব্দ করা হয়।

আটক কিশোররা হলো, শাহাদাত হোসেন, রাজিব হাওলাদার, শাওন দাস, আশরাফুল, ইভান, তাইজুল ইসলাম, আলম হোসেন, সুজাল হোসাইন রিমন, রতন, জুয়েল, রায়হান খান, অদিত খান লিমন, সাইফুল ইসলাম, গোলাম রাব্বি, মাইদুল ইসলাম, ইমরান মোল্লা, নাঈম, হাসান, শাহজাহান, আল আমিন, সিরাজুল ইসলাম, মহসিন রাজা, খলিলুর রহমান মিলন, আবু বক্কর সিদ্দিক, ইউসুফ, রাশেদুল হাসান সাঞ্জু, ইব্রাহীম হাবিব, আহম্মেদ হিরা, সজিব, আবির হোসেন, শাকিব সিকদার, হৃদয়, শান্ত, সাব্বির হোসেন সিয়াম, শাহিন, ইমরান হোসেন রিফাত, সজীব, ফেরদৌস, রাসেল, আরজু, শাকিল, সাগর, আলামিন, বিল্লাল হোসেন, রুমান মিয়া, রাসেল সর্দার, বিপ্লব হোসেন, আসিফ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা র‌্যাবকে জানায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা এবং পাড়া মহল্লায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, অস্ত্র, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এম জে সোহেল আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা। সময়ের সাথে সাথে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও নাশকতা থেকে শুরু করে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে হাত পাকাচ্ছে তারা। দিনে দিনে তারা হিরোইজম প্রকাশ করতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।

গত এক বছরে র‌্যাবের অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রুপের ৩৪৯ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এসব কিশোর গ্যাং নির্মূলে র‌্যাবের অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/815968