২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার, ২:৩৯

ভূমধ্যসাগরে দুর্ঘটনায় নিহত ৮ জনই বাংলাদেশি

লিবিয়া থেকে নৌকায় সাগরপথে ইউরোপ যাত্রাকালে তিউনিশিয়া উপকূলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ অভিবাসী মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি এবং একজন পাকিস্তানি নাগরিক। এ ছাড়া ওই ঘটনায় ২৭ বাংলাদেশি নাগরিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে নৌকাটি তিউনিশিয়া উপকূলে গেলে মধ্যরাত ৪টা ৩০ মিনিটে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকাটিতে মোট ৫৩ জন ছিল। এদের মধ্যে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন ছিল নৌকার চালক। দুর্ঘটনার পর চালকসহ ৫৩ জনের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন।

বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের ৮ জন, সিরিয়ার ৫ জন, মিশরের ৩ জন ও নৌকাচালক রয়েছেন (মিশরীয় নাগরিক)। ওই ঘটনায় নৌকায় থাকা ৯ জন যাত্রী মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক।

ইতালির ‘মরণযাত্রা’য় নিহত রাজৈরের ৫ যুবক
মাদারীপুর প্রতিনিধি জানায়, অবৈধভাবে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার সময় মাদারীপুরের রাজৈরের ৫ যুবক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। এ খবরে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আদরের সন্তানদের হারিয়ে দিশাহারা পরিবারগুলো। কোনোভাবেই থামছে না তাদের আহাজারি। মরদেহ দেশে আনার দাবি স্বজনদের। এই ঘটনায় দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তারা।

জানা যায়, আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি দেয়ার সময় ভূমধ্যসাগরের তিউনিশিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে ৮ বাংলাদেশি নিহত হয়। মঙ্গলবার তাদের পরিচয় প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই খবরে নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। আদরের সন্ত্তান আর কোনো দিন ঘরে ফিরবে না, এই শোক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। আজাহারিতে ভারী চারপাশের পরিবেশ। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য থেকে জানা যায়, নৌকায় মাঝিসহ ছিলেন ৫৩ জন। এদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি মারা গেছেন। যাদের ৫ জনের বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈরে। নিহতরা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী, একই উপজেলার পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস, ইউসুফ আলীর ছেলে মামুন শেখ, কাজী মিজানুরের ছেলে কাজী সজীব ও কায়সার।

স্বজনরা জানান, গত ১৪ই জানুয়ারি উপজেলার বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। তিউনিশিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে যায়। ব্যাংক ঋণ ও সুদে এনে দালালদের দেয়া টাকা পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। স্বজনদের অভিযোগ, মানবপাচারকারি চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী ইতালি নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের থেকে ১৩-১৫ লাখ টাকা নেয়। পরে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালি পাঠালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই কাজে সহযোগিতা করে মোশারফের ছেলে যুবরাজ কাজী। এমন ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, নিহতদের পরিবার মামলা করলে পুলিশ সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেবে।

https://mzamin.com/news.php?news=98595