২৯ জানুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ১২:০১

শৈত্যপ্রবাহ ছড়ালো ৪৮ জেলায়

ঠাণ্ডা বাতাসে ঘরের বাইরে বের হওয়া যায় না

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে। এতে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও তীব্র আকার ধারণ করেছে শৈত্যপ্রবাহ। রোববার দেশের ৪৮ জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে আগামী কয়েকদিন রাতের তাপমাত্রা বেড়ে শীত ক্রমে কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

দেশের উত্তরাঞ্চলে তীব্র শীত বিরাজ করছে। শীতে সেখানে জনজীবন অনেকটাই স্থবির। শীতের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ফসল উৎপাদনে। বাড়ছে রোগ ব্যাধিও। রোববার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। এটিই চলতি মৌসুমের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা। একদিন আগে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিন ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি এবং সৈয়দপুরে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আব্দুর রহমান খান জানান, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন চলাচল ব্যাহত হতে পারে।

তিনি জানান, কুমিল্লা, সীতাকুণ্ড ও মৌলভীবাজার জেলাসহ রংপুর (৮ জেলা), রাজশাহী (৮ জেলা), ঢাকা (১৩ জেলা), খুলনা (১০ জেলা) ও বরিশাল (৬ জেলা) বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে তা কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে। তবে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এসময় দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলেও জানান আব্দুর রহমান খান।

আজ সোমবারও সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামিকাল মঙ্গলবার সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া বিভাগ আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবার খুলনা বিভাগের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সীমান্ত জেলা হওয়ায় উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জনপদ। তীব্র ঠান্ডায় পেশাজীবি ও শ্রমজীবি মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি পর্যবেক্ষণাগার ও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুড়িগ্রামের হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, গত ৮-১০ বছরে কুড়িগ্রামে এমন পরিস্থিতি দেখিনি। শীতের সঙ্গে প্রচুর ঠান্ডা বাতাস এ বছর শীতের চিত্রটা ভিন্ন। সকাল থেকে খুব কুয়াশা পড়ছে। আমরা বয়স্ক মানুষ, হাটতে চলতে খুব সমস্যা হয়।
ধরলার পাড়ের মোস্তাক মিয়া বলেন, ঠান্ডায় কাজ করা খুব কষ্ট হইছে। হাত পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ইট বালু সিমেন্টের কাজ করি। কাজ না করলে তো আর সংসার চলবে না।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুবল চন্দ্র সরকার জানান, জেলায় থেকে ৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এরকম তাপমাত্রা আরও দুই চারদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

ভিড় বেড়েছে পুরোনো গরম পোশাকের দোকানে :
বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সেই সঙ্গে ভিড় বেড়েছে গরম পোশাকের দোকানে। উচ্চবিত্তরা ঠান্ডা থেকে বাঁচতে গরম কাপড় কিনে শীত নিবারণ করতে পারলেও দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। আবার কেউ ছুটছেন পুরোনো কাপড়ের দোকানে। জয়পুরহাটের রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও ফুটপাত মার্কেটের পুরোনো পোশাকের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ভিড়।

ব্যবসায়ীরা জানান, পুরোনো হলেও এসব কাপড়ের মান ভালো। বিদেশি কাপড় তুলনামূলক কম দামে পাওয়ায় এখন ধনী-গরীব সবাই কিনছেন। তবে নিম্ন আয়ের মানুষই বেশি কিনে থাকেন এসব কাপড়। দোকানগুলোতে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের শীতের পোশাক। এছাড়াও মাথার টুপি, পায়ের মোজা, হাত মোজা, মাফলার, সোয়েটার, ফুলহাতা গেঞ্জির চাহিদাও বেড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে অস্থায়ী পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় লেগেই থাকছে। কম দামে ভালো মানের গরম কাপড় মেলায় এসব দোকানে বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।

দোকানে আসা জহিরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, শীতের পোশাক কিনতে আমি শো রুমগুলোতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে দাম আমার নাগালের বাইরে। তাই আমি রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের পুরোনো কাপড়ের দোকান থেকে একটি জ্যাকেট কিনতে এসেছি।
ভ্যান চালক বিদ্যুত বলেন, আমার তো আর সাধ্য নাই বড় বড় মার্কেট থেকে কাপড় কিনব। ঠান্ডা আসলে এখান থেকে কাপড় কিনি। বাড়ির সবাইকে কিনে দেই। তবে এখানে কম দামে কাপড় পাওয়া গেলেও গতবারের তুলনায় বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে পুরোনো কাপড়।

তমা নামে এক নারী ক্রেতা বলেন, প্রথমবারের মতো পুরাতন কাপড়ের দোকানে এসেছি। এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর কাপড়ও রয়েছে। সুপার মার্কেটগুলোতে নতুন কিনলে লাগতো এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। এখানে সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।

ধামইরহাট উপজেলা থেকে পুরাতন পোশাক কিনতে এসেছেন রবিউল আলম। তিনি বলেন, শীত আসলে জয়পুহাট রেললাইনের মার্কেট থেকে কাপড় কিনি। দোকানগুলোতে ঘুরছি। যে দোকানে কম দাম পাবো, সেখান থেকেই কিনবো। এ বছর দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছে। আগে ১৫০ টাকাতেই ভালো কাপড় কিনেছিলাম কিন্তু এ বছর ৩০০ টাকাতেও পাচ্ছি না।

হকার্স মার্কেটের কাপড় বিক্রেতা বাচ্চু ম-ল বলেন, আমরা ঢাকার বিভিন্ন বাজার থেকে পোশাকের তারতম্য অনুযায়ী বিভিন্ন দরে এ কাপড়গুলো কিনে আনি। ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামে বিক্রি করি। আমার দোকানে সব ধরনের কাপড় পাওয়া যায়। মানুষ চাহিদা মতো তাদের কাপড় কেনে। অনেক গরীব মানুষ আসেন কাপড় কিনতে আমরা এগুলো অনেক কম দামে দিয়ে দেই।

বাবু নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি গরম পোশাকের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি। গত বছর যে সোয়েটার বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, একই সোয়েটার এবার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। একইভাবে জ্যাকেট, ট্রাউজার, কম্বলসহ অন্যান্য গরম পোশাকের দামও বেশি। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে এখন বিক্রি একটু বেড়েছে। তবে একটু দাম বেশি হওয়ায় অনেকে দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন।

তিন সপ্তাহ ধরে জয়পুরহাটে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। অধিকাংশ দিনই সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। টানা ৫০ দিন এ জেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা অব্যাহত থাকায় জন জীবনে স্থবিরতা যেন কাটছেই না। শৈত্য প্রবাহের কারণে সকাল থেকে সাধারণ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। কুল কুল করে বয়ে যাচ্ছে হিমেল হাওয়া। এ রকম আবহাওয়ার কারনে সকাল জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, তবে দাপ্তরিক কাজের জন্য সেখানকার কার্যালয় গুলো খোলা রয়েছে। রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা রেকর্ড করা হয় ৯২ শতাংশ। এদিন সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ।

শৈত্য প্রবাহের কারনে চরম দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ। এদিন সকাল থেকে মানষের কর্ম ক্ষেত্রে স্থবিরতা দিয়েছে। দিন মজুররা কাজ না পেয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের খাবার জোটানোর জন্য কেউই এগিয়ে আসেনি। হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হচ্ছে সব বয়সের মানুষ।

নীলফামারী : চলমান শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে নীলফামারীতে। সেই সাথে উত্তরের হিমেল বাতাশ আর ঘন কুয়াশার কারণে চরম দূর্ভোগে পড়েছে এ জেলার দরিদ্র মানুষজন। ভোররাত থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশাপাত পড়ছে। ঘন কুয়াশার কারণে কাছের জিনিষও দেখা যাচ্ছে না। দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিললেও নেই তেমন উত্তাপ। শীতের তীব্রতার কারণে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে জ্বর,সর্দি ও কাশিসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান রবিবার (২৮/০১/২৪) নীলফামারীর সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান ৫ম দিনের মতো রবিবারও বন্ধ ঘোষনা করা হয়।

গাইবান্ধা: নদ-নদী বেষ্টিত উত্তরের জেলা গাইবান্ধার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সেইসঙ্গে রয়েছে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডা বাতাস। রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় গাইবান্ধা জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীতের কারণে কাহিল অবস্থা শিশু ও বৃদ্ধদের। গ্রামাঞ্চলের মানুষ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালসহ সাত উপজেলার হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

হচ্ছেন। এজন্য শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখাসহ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ সকালে জেলার তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আরও কয়েকদিন এ অবস্থা বিরাজ করতে পারে। উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় তাপমাত্রা কমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ক্রবার গাইবান্ধা জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। চলতি শীত মৌসুমে এটাই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত ২৪ ঘণ্টা আগেও জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সৈয়দপুর (নীলফামারী): নীলফামারীতে উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু জনজীবন। ঘন কুয়াশায়শীতে জবুথবু নীলফামারীর সৈয়দপুরে

জনজীবন, তাপমাত্রা নামল ৬ ডিগ্রীতে
সৈয়দপুরে উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু জনজীবন। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারদিক। শীতের দাপটে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। চলিত মৌসুমে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তাপমাত্রা বিচারে এটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।

এমন অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় রাস্তাঘাট, হাটবাজার, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনালসহ লোকালয়ে মানুষজনের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। সরকারি-বেসরকারি অফিসে চাকরিজীবীরা এলেও কাজকর্মে চলছে স্থবিরতা। জীবিকার তাগিদে নিম্নআয়ের মানুষেরা বের হলেও কাজ না পেয়ে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। রিক্স-ভ্যানচালক, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ঠান্ডা বাতাসে ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়েছে ছিনমূল মানুষদের। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা ও আলুখেত। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে গরু-ছাগল।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে নীলফামারীর তাপমাত্রা ৯ থেকে ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। চলিত মৌসুমে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ রকম তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা কম।

https://www.dailysangram.info/post/547387