২৫ জানুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৩:১৪

স্বপ্নের আকাশে কালো মেঘ

আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে সব ধরনের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হচ্ছে। জুলাইতে জাপানি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি, আর অক্টোবরেই চালু হচ্ছে। বলছিলাম হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বপ্নের তৃতীয় টার্মিনালের কথা। পুরনো দুটো টার্মিনাল বছরে ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দিতে পারে, নতুন টার্মিনালটি চালু হলে তা বেড়ে তিনগুণ হয়ে যাবে। বিমান সংস্থা থেকে আয় দুই থেকে তিনগুণ বাড়বে বলেও প্রাক্কলন করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বিদেশি এয়ারলাইন্স ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ব্যবসায় চাঙ্গাভাব ফিরবে। বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা থাকায় ভ্রমণপিপাসু এবং বিদেশিদের যাত্রী পরিষেবা দিয়ে দেশের ভাবমর্যাদা পাল্টে দেবে। যা দেশের অ্যাভিয়েশন সেক্টরকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। কিন্তু দিনে দিনে এসব স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। কারণ থার্ড টার্মিনাল চালুর দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ততোই স্বপ্নের আকাশে কালো মেঘ ভর করছে।

ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে ধীরগতিতে মুনাফার অর্থ দিচ্ছে। আর টিকিট বিক্রির মুনাফা নিজ দেশে নিতে না পারায় বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে টিকিট বিক্রি বন্ধ করেছে বেশ কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইন্স। এতে প্রায় তিন হাজার ৬০০ স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্টের ব্যবসা দ্রুত লোকসানে পড়েছে। এছাড়া প্রায় ৩০০ এয়ারলাইন্স নিয়ে আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) সংস্থার মাধ্যমে আকাশপথে বিশ্বের ৮৩ শতাংশ যাত্রী পরিবহণ হয়। টিকিট বিক্রি থেকে আয়ের অর্থ দিতে না পারায় গত বছরের জুনে সংস্থাটি বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় ‘সর্বোচ্চ খারাপ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। তালিকার প্রথমে আছে নাইজেরিয়া।

আইএটিএ-তথ্য অনুসারে, গত বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের কাছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর ২১৪ মিলিয়ন ডলার পাওনা ছিল। টিকিটের বিক্রয়লব্ধ অর্থ অনির্দিষ্টকাল বাংলাদেশে আটকে থাকার দরুণ বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো এ অর্থের ‘কস্ট অব ফান্ড’ সমন্বয়ের জন্য টিকিটের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। যা বাড়তি চাপ তৈরি করছে যাত্রীদের ওপর। যে কারণে দেশ থেকে টিকিট কাটলে প্রতি টিকেটে ন্যূনতম ১০০ ডলার অতিরিক্ত ব্যয় হয়। তাই অনেকে ভারত বা অন্য দেশ থেকে বা অনলাইনে টিকিট কাটছে, যাতে বড় অংকের রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

সম্প্রতি রিয়াদে আয়োজিত আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) এয়ার সার্ভিস নেগোসিয়েশন ইভেন্টে বেবিচকের প্রধান ও কয়েকটি দেশের এয়ারলাইন্সসের প্রতিনিধিরা একত্রিত হন। সেখানেও বিদেশি এয়ারলাইন্স ও অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ টিকিট বিক্রির আয়ের অর্থ না পাওয়ার অভিযোগ করেন। তারা জানতে চান, বাংলাদেশে আটকে থাকা অর্থ তারা কবে নাগাদ ফেরত পাবেন। বিষয়টি দেশের ভাবমর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি কর্মকর্তারা। এছাড়া ইত্তেহাদ বাংলাদেশ থেকে তাদের ফ্লাইট পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছে। অনেক এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলার সংকটে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে মুনাফার অর্থ দিতে না পারায় নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এর একটি হলো- স্থানীয় এজেন্টদের কাছে টিকিটের দাম বেড়ে গেছে। বাড়তি অর্থ গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের, বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকরা চাপে পড়েছেন। এছাড়া আয় সঠিকভাবে পাঠাতে না পারায় বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (ওটিএ)-তে চলে গেছে, যাতে মুনাফা দ্রুত পাঠানো সম্ভব হয়। এতে বাংলাদেশের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এয়ার টিকিট ব্যবসা বিদেশি অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টদের হাতে চলে যাবে। পাশাপাশি টিকিট বিদেশে বিক্রি হওয়ায় সরকার বড় অংকের রাজস্ব হারাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ডলার সঙ্কটের দরুণ বিদেশি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংখ্যা কমতে থাকলে প্রবাসী কর্মী পরিবহণে ধীরে ধীরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। এতে শ্রমিক বিদেশে যাওয়া কমে যাবে এবং প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। এ সংকট নিরসনের দ্রুত বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এ সংকট চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকটি এয়ারলাইন্সকে তাদের আয়ের একটি অংশ পাঠানোর সুযোগ দিচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। এ কারণে বেশির ভাগ এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে কম ভাড়ার টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছে। ফলে বাংলাদেশি যাত্রী ও স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এতে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে উল্লেখ করে ওয়াহিদুল আলম বলেন, বাংলাদেশে সেবা দিতে আগ্রহী এয়ারলাইন্সগুলো নিরুৎসাহিত হবে।

বেবিচক প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে কয়েকটি এয়ারলাইন্সসের বিশাল বিনিয়োগ আটকে থাকায় কয়েকটি বিমান সংস্থা ও কয়েকটি দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধানরা অনুরোধ করেছেন, যাতে আমরা তাদের আয় তাদের নিজ দেশে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করি। ইতোমধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেছেন, ডলার সংকটের কারণে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো তাদের আয় দেশে পাঠাতে পারছে না এমন তথ্য তার জানা নেই।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (এটিএবি) সভাপতি এসএন মঞ্জুর মুর্শেদ বলেন, বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো মুনাফা পাঠাতে না পেরে কস্ট অব ফান্ড সমন্বয় করতে গিয়ে বাংলাদেশে কম ভাড়ায় টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে দেশের যাত্রীদের বেশি দামে টিকিট কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এখন যে কোনো স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্টের কাছে ব্যাংকক যাওয়ার টিকিটের দাম প্রায় ২৫ হাজার টাকা। একই টিকিট ওটিএ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারে। মঞ্জুর মুর্শেদ জানান, তারা বারবার বেবিচককে এ সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (এটিএবি) মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল দেশের জন্য স্বপ্নের অবশ্যই। আমি জেনেছি, ইতোমধ্যে ৫/৬টি বিদেশি এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে ব্যবসা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের অ্যাভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিট বিক্রির মুনাফার টাকা পাঠানোর সুযোগ দিতে হবে। না হলে উন্নত মানের টার্মিনাল করে লাভ নেই। তিনি বলেন, মাঝে টার্কিশ এয়ারলাইন্স আগ্রহ হারিয়ে ফ্লাইটের সংখ্যা ১৬ থেকে ২টিতে নামিয়ে এনেছে। মুনাফার টাকা পাঠাতে না পেরে এয়ারলাইন্সগুলো ‘কস্ট অব ফান্ড’ সমন্বয় করতে গিয়ে উচ্চ দামের টিকিটগুলো বাংলাদেশি যাত্রীদের জন্য ওপেন করছে, আর অন্যান্য দেশে কম দামে ওপেন করছে। এতে অনেক সময় ভারত বা অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে টিকিটের দাম দেড় থেকে দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। এ অতিরিক্ত ব্যয় পড়ছে যাত্রীদের ওপর। তাই এ খাতে এয়ারলাইন্সগুলোর মুনাফার টাকা পাঠানোয় বিশেষ গুরুত্ব দিলে বাংলাদেশে ফ্লাইট কমানোর চিন্তা করবে না বা আগ্রহ হারাবে না, আবার টিকিটের দামও বাড়াবে না।

আবদুস সালাম আরেফ দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতিযোগিতা হচ্ছে বিদেশি টু বিদেশি। ফ্লাইটের ১২ থেকে ১৫ শতাংশ দেশীয় এয়ারলাইন্সের। বাকী ৮৫ থেকে ৮৮ শতাংশ বিদেশিদের হাতে। এক্ষেত্রে সিভিল অ্যাভিয়েশনকে দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে বিমান বাংলাদেশের ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি দেশীয় প্রাইভেট এয়ারলাইন্সগুলোরও ক্যাপাসিটি বাড়ানোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিতে হবে।

এটিএবি মহাসচিব বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বাংলাদেশের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এয়ার টিকিট ব্যবসা বিদেশি অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টদের হাতে চলে যাবে। তিনি বলেন, কয়েকটি রুটে টিকিটের দাম; বিশেষত নিউইয়র্ক, কানাডা ও লন্ডনের মতো দূরের পথে টিকিটের দামও ৫০ থেকে ১০০ ডলার বেড়েছে। টিকিট বিদেশে বিক্রি হওয়ায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
বেবিচকের তথ্য অনুসারে, ৩২টি বিদেশি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় ১৬০টি ফ্লাইট পরিচালনা করে। বিদেশি একটি এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা আগে ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে পারতাম এবং একটি নির্ধারিত ব্যাংকের মাধ্যমে আমাদের আয় পাঠাতে পারতাম। কিন্তু এখন ডলারের সংকট সেই পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, আয়ের অর্থ পাঠাতে দেরি হলে লাভের পরিমাণ কমে আসে। কারণ দ্রুত টাকার মূল্য ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যায়।

দেশে প্রায় দু’বছর ধরে ডলার সংকট চলছে। সংকট নিরসনে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও বাজার পরিস্থিতি এখনো অস্বাভাবিক। ডলার সঙ্কটের কারণেই বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো টিকিট বিক্রির মুনাফা নিজ নিজ দেশে পাঠাতে পারছেন না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিকিট বিক্রির আয় ডলার করে পাঠাতে না পারায় বিভিন্ন এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অনেক এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে। ফ্লাইটের সংখ্যা হ্রাস অব্যাহত থাকলে যাত্রী পরিবহণে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অথচ আগামী ৫ এপ্রিল শেষ হবে থার্ড টার্মিনালের শতভাগ কাজ। ৬ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের (এডিসি) কাছ থেকে টার্মিনাল বুঝে নেবে বেবিচক। ইতোমধ্যে থার্ড টার্মিনালের অপারেশনাল রেডিনেস অ্যান্ড এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার সংক্রান্ত প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই মন্ত্রণালয় থেকে এর অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল চালুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আগামী এপ্রিল মাসের ৫ তারিখের মধ্যে থার্ড টার্মিনালের প্রথম পর্বের শতভাগ কাজ শেষ হচ্ছে। পরদিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এডিসি’র কাছ থেকে স্বপ্নের এ থার্ড টার্মিনাল আমরা বুঝে নেব। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে অক্টোবরের শুরুতেই টার্মিনালটি দেশি-বিদেশি বিমান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

চেয়ারম্যান বলেন, গত বছর ৭ অক্টোবর তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি অ্যাভিয়েশন হাব হিসাবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম মাইলফলক। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী নতুন স্থাপনা থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন দৃশ্যমান টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করেন।

বেবিচক সূত্র জানায়, নতুন টার্মিনালে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলোসহ ফ্লোর ও সিলিংয়ে নজরকাড়া প্যাটার্নের যা খুবই দৃষ্টিনন্দন হবে। যাত্রীরা নতুন টার্মিনালে বিশ্বমানের সুবিধা পাবেন। ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়। সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) অবশিষ্ট অর্থায়ন করেছে।
তৃতীয় টার্মিনাল চালু হওয়ার পর ঢাকা বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করছে বেবিচক। এতে বার্ষিক যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্ষমতা হবে ২৪ মিলিয়ন (পুরোনো টার্মিনালসহ), যা এখন আট মিলিয়ন এবং বিমানবন্দরটি প্রতিবছর পাঁচ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডেল করতে পারবে। এখানে ৩৭টি নতুন এয়ারক্রাফ্ট পার্কিং এরিয়া এবং অ্যাপ্রোন এলাকায় সংযোগকারী দুটি ট্যাক্সিওয়ে রয়েছে। তৃতীয় টার্মিনালটি একটি মাল্টিমোডাল পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে সক্ষম হয়। এটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারীত্বের অধীনে একটি জাপানি কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে বলে জানা গেছে।

বিশ্বমানের এ টার্মিনালে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি রাখার সক্ষমতাসহ বহুতল গাড়ি পার্কিং তৈরি করা হয়েছে। এই টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করে রাখা যাবে। এছাড়া তৃতীয় টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হয়েছে। অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট রয়েছে। একটি করিডরের মাধ্যমে পুরোনো দুটি টার্মিনালের সঙ্গে নতুন টার্মিনালকে যুক্ত করা হবে।

https://dailyinqilab.com/national/article/633992