২৩ জানুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ৯:১৭

৪০০ কোটি টাকা ব্যয়, তবু সড়ক টেকে না

সওজ দায়ী করছে সীমাতিরিক্ত পণ্য নিয়ে যানবাহন চলাচলকে

 

দেশের একটি সড়ক ৯ বছরে সাতবার মেরামত করা হয়েছে। ব্যয় হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এই ৯ বছরে সেই সড়ক দিয়ে বেশির ভাগ সময় মানুষকে চলাচল করতে হয়েছে ভোগান্তি নিয়ে।

কারণ একটাই। সড়কটি যতবার মেরামত করা হয়েছে, ততবারই অল্প সময়ের মধ্যে উঁচু–নিচু হয়ে যাওয়া (রাটিং), খানাখন্দ তৈরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে সড়কটির সর্বশেষ মেরামত শেষ হয়। তবে কয়েক মাস পর থেকেই সড়কটি নষ্ট হয়ে যাওয়া শুরু করে।

সড়কটির অবস্থা এখন একেবারেই খারাপ। সরেজমিনে দেখা গেছে, কোথাও উঁচু–নিচু ঢেউ তৈরি হয়েছে, কোথাও বিটুমিনের আস্তরণ উঠে গেছে, কোথাও তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। শুরু হয়েছে নতুন করে মেরামত, টাকা খরচ। সেই মেরামতের কারণে এক পাশ আটকে দেওয়া হয়েছে। এতে দুই কিলোমিটারের বেশি এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে। মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।

যশোর–নওয়াপাড়া অংশের ৩৮ কিলোমিটার ৯ বছরে ৭ বার মেরামত করা হয়েছে। তবু মানুষের ব্যাপক ভোগান্তি।

বলছি যশোর শহর থেকে নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার অংশের কথা। বাগেরহাটের মোংলা বন্দর থেকে ছোট ছোট জাহাজে পণ্য নওয়াপাড়া বন্দরে আসার পর এই সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। বাণিজ্যিকভাবে সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ।

যানবাহনচালকেরা সড়কটি নিয়ে কী বলছেন, তা শোনা যাক ট্রাকচালক নজরুল ইসলামের মুখে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ বছর ধরে দেখছি রাস্তা ঠিক করছে। ঠিকই হচ্ছে না। পণ্য নিয়ে চলাচল করতে গেলে ট্রাক হেলেদোলে। ধীরে ধীরে অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যশোর থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত সড়কটি একটি উদাহরণ। বাংলাদেশে নতুন সড়ক নির্মাণের পর তা দীর্ঘ সময় না টেকা, মেরামতের পর দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। যশোর–নওয়াপাড়া সড়কটি বারবার মেরামত করতে জনগণের করের টাকা ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ থেকেই যাচ্ছে। বারবার মেরামতে লাভ হয় ঠিকাদারদের। তারা কাজ পায়। তাদের কাছ থেকে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের নানা সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ পুরোনো।

সড়ক নির্মাণের পর সেটা ১০ থেকে ১৫ বছর টেকার কথা। যদি বছর বছর ভারী মেরামতের প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে সড়কে কোনো সমস্যা রয়েছে। সেই কারণ না খুঁজে বারবার ওপরে মেরামত করলে সেটা হবে জনগণের অর্থের নিদারুণ অপচয়।

মো. হাদিউজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক

৯ বছরে ৭ বার মেরামত

সড়ক নির্মাণ ও মেরামতের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। এটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা। সওজ সূত্রে জানা গেছে, যশোর–নওয়াপাড়া সড়কটি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামত ও পুনর্নির্মাণ করা হয়। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত আরও ছয় দফা মেরামত অথবা পুনর্নির্মাণকাজ হয়েছে।

সাত দফার মধ্যে তিন দফার মেরামত ব্যয় কম, আড়াই থেকে ৯ কোটি টাকার মধ্যে। চার দফার ব্যয় বেশি, ১৬ থেকে ১৫৮ কোটি টাকা।

বড় ঠিকাদারি কাজগুলো পেয়েছে তাহের ব্রাদার্স ও মাহবুব ব্রাদার্স (যৌথভাবে প্রায় ১৫৮ কোটি), তমা কনস্ট্রাকশন (প্রায় ১৪৮ কোটি ও ৯ প্রায় কোটি) এবং মোজাহার এন্টারপ্রাইজ ও রিমি নির্মাণ লিমিটেড (যৌথভাবে ৪১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা)।

সওজ সূত্র আরও জানায়, সড়কটি মেরামতে বর্তমান দফার আগে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। দুটি প্যাকেজে মোট ৩২১ কোটি টাকার কাজের দায়িত্ব পায় তমা কনস্ট্রাকশন ও মাহবুব ব্রাদার্স। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। তবে করোনা ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণ দেখিয়ে ছয় মাস সময় বাড়িয়ে নেওয়া হয়। বর্ধিত সময়ের মধ্যে কাজ হয়েছিল। তবে সড়কের খারাপ অবস্থার কারণ দেখিয়ে আরও ২৭ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

‘৩০ টন ধারণক্ষমতার সড়কে যানবাহন চলছে ৫০ থেকে ৬০ টনের। এ কারণে রাস্তা টেকে না।’

মনিরুজ্জামান, তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক

সড়কে চলাচলকারীরা বলছেন, কাজ শেষের কয়েক মাসের মধ্যেই সড়কটি উঁচু–নিচু হয়ে যায়। জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকমে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে সওজ।

গতকাল সোমবার দেখা যায়, যশোর সড়কটি বিভিন্ন জায়গায় উঁচু–নিচু হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিটুমিনের আস্তরণ উঠে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়ার কাজ চলছে।

সওজের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে জানান, নতুন করে দরপত্র ঢেকে ৩৮ কিলোমিটারের মধ্যে ১৬ কিলোমিটার সড়ক ঢালাই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে প্রায় সাড়ে ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কিলোমিটারের কাজ শুরু হয়েছে। ঢালাই শেষ হলে সড়কে যাতায়াতে সমস্যা হবে না বলে তাঁরা আশা করছেন।

সওজ সূত্র বলছে, নতুন দরপত্রে ঢালাইয়ের কাজটি পেয়েছে যৌথভাবে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ ও রিমি নির্মাণ লিমিটেড। ২০২২–২৩ অর্থবছরে সড়ক মেরামতের ৫১ শতাংশ কাজ যে পাঁচটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পেয়েছিল, তার একটি মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির মালিক কাজী মোজাহারুল হকের বাড়ি খুলনায়। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থক স্থানীয় একটি প্রভাবশালী পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ঠিকাদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।

১০ বছর ধরে দেখছি রাস্তা ঠিক করছে। ঠিকই হচ্ছে না। পণ্য নিয়ে চলাচল করতে গেলে ট্রাক হেলেদোলে। ধীরে ধীরে অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়।

ট্রাকচালক নজরুল ইসলাম

কার্পেটিং উঠে সড়কের পাথর বেরিয়ে এসেছে, গর্ত তৈরি হয়েছে অনেক জায়গায়। যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। গতকাল খুলনা-যশোর মহাসড়কের বসুন্দিয়া এলাকায়ছবি: সাদ্দাম হোসেন

এর আগে কাজ পাওয়া তমা কনস্ট্রাকশন আলোচিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তারা সাম্প্রতিককালে বড় অঙ্কের ঠিকাদারি কাজ পাচ্ছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) একটি প্রতিবেদন দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে বলেছিল, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করেনি তমা কনস্ট্রাকশন।

নির্ধারিত মূল্যেও করেনি কাজ। অবশ্য তখন তমা কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেছিলেন, একটি প্রকল্পে ঠিকাদার একা চাইলে প্রকল্পের ব্যয় বাড়াতে পারে না। যশোর–নওয়াপাড়া সড়কে ঠিকাদারি কাজ করা বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও সওজের পরামর্শ অনুযায়ী যশোর–নওয়াপাড়া সড়কের ১৬ কিলোমিটার সড়ক ঢালাই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গোলাম কিবরিয়া, সওজের প্রকৌশলী

দায় চাপানোর চেষ্টা

চালক ও পরিবহন-সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, যশোর–নওয়াপাড়া সড়কটি পুনর্নির্মাণে ৫ ফুট গভীর ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হয়নি। নতুন ইট, বালু ও খোয়া ব্যবহার না করে পুরোনো মালামাল ব্যবহার করায় সড়ক টেকসই হয়নি। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সওজ।

সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া এ বিষয়ে বলেন, সড়ক টেকসই না হওয়ার জন্য শুধু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা সওজকে দায়ী করলে চলবে না। যাঁরা ধারণক্ষমতার চেয়ে ভারী যানবাহন চালান, তাঁরা কিংবা তাঁদের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও দায়ী।

সওজের এই প্রকৌশলীর সুরেই বক্তব্য দিয়েছেন ঠিকাদারদের প্রতিনিধিরা। যেমন তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩০ টন ধারণক্ষমতার সড়কে যানবাহন চলছে ৫০ থেকে ৬০ টনের। এ কারণে রাস্তা টেকে না।’

প্রশ্ন হলো, সড়কে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে যানবাহন চলে কীভাবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সীমার অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে যানবাহন চলাচল ঠেকাতে যশোর–খুলনা মহাসড়কের চেঙ্গুটিয়ায় একটি ওজন নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বা এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করা হয়েছিল ২০২২ সালে। তবে ট্রাকচালক সমিতির আপত্তির মুখে তিন দিনের মাথায় সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

যশোর জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম, এটা সত্য। আমাদের দাবি ছিল, সারা দেশে একযোগে ওয়ে স্কেল (ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র) কার্যকর করতে হবে। শুধু এই এলাকায় এটি চালু হলে ব্যবসায়ীরা নওয়াপাড়া নৌবন্দর ব্যবহার করতে আসবে না।’

রেজাউল আরও বলেন, একই পরিমাণ পণ্য নিয়ে ট্রাক নওয়াপাড়া থেকে বিভিন্ন জেলায় যায়। অন্য কোথাও সড়ক এত বেশি নষ্ট হচ্ছে না। নির্মাণত্রুটির কারণেই যশোর–নওয়াপাড়া সড়কটি বারবার নষ্ট হচ্ছে।

গতকাল দেখা যায়, মহাসড়কের পাশে ওজন নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রটি স্থাপন করা আছে। সেটার ব্যবহার নেই। কেন্দ্রের কার্যালয়টি তালাবদ্ধ।

২০২৩ সালের জুলাইয়ে সওজে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছিল, দেশের বিভিন্ন সড়কে দুই দশকে ১৮টি ওজন নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তখন মাত্র পাঁচটি সচল ছিল। ২০১৯ সালে বিভিন্ন জেলায় ২৮টি ওজন নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র স্থাপনে একটি প্রকল্প নেয় সওজ, যার কাজ এখন চলছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা।

ঢালাই কী যুক্তিতে

সওজের প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও সওজের পরামর্শ অনুযায়ী যশোর–নওয়াপাড়া সড়কের ১৬ কিলোমিটার সড়ক ঢালাই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অবশ্য সওজ ও বুয়েট সূত্র জানিয়েছে, সড়কটি টেকসই করার বিষয়ে মতামত নিতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেটিতে শেষ পর্যন্ত বুয়েটের প্রতিনিধি থাকেননি। বৈঠকের কোনো কার্যবিবরণীতেও তিনি সই করেননি। সওজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, বুয়েটের প্রতিনিধির সঙ্গে মতের মিল ছিল না।

অবশ্য বিষয়টি নিয়ে সওজের প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি আর ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

সড়ক নির্মাণের পর সেটা ১০ থেকে ১৫ বছর টেকার কথা। যদি বছর বছর ভারী মেরামতের প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে সড়কে কোনো সমস্যা রয়েছে। সেই কারণ না খুঁজে বারবার ওপরে মেরামত করলে সেটা হবে জনগণের অর্থের নিদারুণ অপচয়।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান

‘অর্থের নিদারুণ অপচয়’

দেশের সড়ক মেরামতে সওজ বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে। নতুন সড়ক নির্মাণে ব্যয় আরও বেশি। সংস্থাটির হিসাবে, ২০২২–২৩ অর্থবছরে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে তারা বরাদ্দ পেয়েছিল ২৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

সরকার সাম্প্রতিক বাজেটগুলোতে সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগে বেশি বরাদ্দ দিচ্ছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেটে এই খাত পেয়েছে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ, পরিমাণ ৮৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রথম দুটি শিক্ষা ও প্রযুক্তি এবং সুদ পরিশোধ খাত। স্বাস্থ্য পাচ্ছে সড়কের অর্ধেকের কম (৩৮ হাজার কোটি টাকা)।

২০১৮ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) পৃথিবীর ১৩৪টি দেশের সড়ক নিয়ে জরিপ করে। এতে বেহাল সড়কের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দেখানো হয়েছে ১১৩ নম্বরে। বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্ক, ভারত ও পাকিস্তান।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক নির্মাণের পর সেটা ১০ থেকে ১৫ বছর টেকার কথা। যদি বছর বছর ভারী মেরামতের প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে সড়কে কোনো সমস্যা রয়েছে। সেই কারণ না খুঁজে বারবার ওপরে মেরামত করলে সেটা হবে জনগণের অর্থের নিদারুণ অপচয়।

https://www.prothomalo.com/bangladesh/29ul7c80ry