২৩ জানুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ৯:০০

ভেড়ামারা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩নং ইউনিট বন্ধ হয়ে গেল

 

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার ৬০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩ নম্বর ইউনিটও অবশেষে বন্ধ করে দিলো সরকার। মেয়াদোত্তীর্ণ আর ব্যয় বহুল প্ল্যান্টের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ১ ও ২ ইউনিটটি গত চার বছর আগেই বন্ধ করা হয়েছিল। প্ল্যান্ট বন্ধ এবং ৩ নম্বর ইউনিটটি উৎপাদনে না থাকলেও গত চার বছরে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ফলে ৩ নম্বর ইউনিটটিও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সূত্র জানায়, ১৯৭৬ সালে প্রথম উৎপাদনে আসে ভেড়ামারার ঐতিহ্যবাহী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। সে সময় ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে ১৯৮০ সালে আরো একটি বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এখানে নির্মাণ করা হয়। তখন থেকেই এটি ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্ট হিসেবে পরিচিত। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছাড়াও উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল।

 

কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ, জরাজীর্ণ আর মান্ধাতা আমলের অত্যন্ত ব্যয় বহুল এই প্ল্যান্টটি গত চার বছর আগেই বন্ধ করে দেয় সরকার। অধিক সমস্যায় এ ইউনিটটি বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে, এমন ভাবনাতেই এখনো প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩ নম্বর ইউনিটটি। ঘণ্টায় সাড়ে ছয় হাজার লিটার তেল গ্রাস করে নেয়া এই ইউনিটটি ঘণ্টায় ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। ইউনিটটি ৯১ দিন চালানোর সক্ষমতা নিয়ে ৩৩ লাখ লিটার তেল মজুদ করে রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ থাকলেও কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা এবং অন্যান্য ব্যয় পরিচালনা করতে প্রতি বছরই ব্যয় করতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। বিশ্লেষকরা বলছেন, যে টাকা এখন ব্যয় করা হচ্ছে, সেই টাকা দিয়েই একটি নতুন প্ল্যান্ট পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব। সূত্র জানায়, ২০২০ সালে ১৩ কোটি, ২০২১ সালে ১২ কোটি, ২০২২ সালে সাড়ে ৮ কোটি, ২০২৩ সালে সাড়ে ৬ কোটি টাকাসহ মোট ৪০ কোটি টাকা ইতোমধ্যে ব্যয় হয়ে গেছে।

ভেড়ামারা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক (নির্বাহী প্রকৌশলী) মো: আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, জরাজীর্ণ এই প্ল্যান্টটি চার বছর আগেই ১ ও ২ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। সচল ছিল ৩ নম্বর ইউনিটটি। যা আগামী ২৫ সালে বন্ধের তালিকায় ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ৩ নম্বরটিও দ্রুত বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ৭০ জন কর্মকর্তা এ প্ল্যান্টে কর্মরত থাকলেও তাদেরও বদলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ প্রকৌশলী জানান, এ প্ল্যান্টের অভ্যান্তরে ৮ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট বসানোর কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথমে চার মেগাওয়াট এবং পরে আরো চার মেগাওয়াট মোট ৮ মেগাওয়াটের নতুন প্ল্যান্ট হবে বিদ্যুতের নগরী হিসাবে খ্যাত ভেড়ামারায়।

 

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/808482