২২ জানুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ১২:৪৫

রাজধানীতে কেটেছে কুয়াশা শীতের তীব্রতা কমেনি

দেশের ছয় জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও আগের দিনের মতোই রয়ে গেছে। তবে রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়েছে। গতকাল রোববার অবশ্য সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশে কুয়াশা অনেকটা কেটে গেছে। দেখা গেছে রোদের মুখ। তবে কমছে না শীতের তীব্রতা। সন্ধ্যা নামলেই বাড়তে থাকে কনকনে ঠাণ্ডা।  

চলতি জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই বেড়েছে শীত। এর মধ্যে কয়েক দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে বিভিন্ন স্থানে। তবে এখন পর্যন্ত তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়নি। এ মাসে সাধারণত কুয়াশা পড়ে এবং তা দিনের একটা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশা ছিল কয়েক দিন ধরে। গত শুক্রবার থেকে অবশ্য কুয়াশা কমে এসেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেছে- কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা চলতে পারে আজ সোমবার পর্যন্ত। দেশের উত্তর ও উত্তর–পূর্বাঞ্চলের রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তা বাড়তে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

গতকাল দেশের তিন স্থানে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সেই জায়গাগুলো হলো পাবনার ঈশ্বরদী, নওগাঁর বদলগাছী এবং রাজশাহী। এ তিন স্থানে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে তবুও খোলা বিদ্যালয়  

তীব্র শীতে নওগাঁর জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে, তাপমাত্রা নেমে গেছে ১০ ডিগ্রির নিচে। তবুও খোলা রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়! যদিও কোনো জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে গেলে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। গতকাল রোববার নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে এটি সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। 

গত এক সপ্তাহ ধরে এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। মাঘের হাড়কাঁপানো শীতে চরম বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পথঘাট। দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। তীব্র শীতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অধিকাংশ স্কুলে কমেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হলেও ছুটি না হওয়ায় বেশ ক্ষুব্ধ কোমলমতি শিশুদের অভিভাবকরা।

শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। গত এক সপ্তাহের তীব্র শীতে সে প্রায়ই সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। কনকনে ঠান্ডায় সকালে স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। আজ পার্শ্ববর্তী রাজশাহী ও জয়পুরহাট জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির কম হওয়ায় স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছে। সেই হিসেবে নওগাঁতেও স্কুল ছুটি রাখা উচিত ছিল। এখানে শিক্ষা কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে।

শহরের চকপ্রাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আফরিন জান্নাত বলেন, আমার ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ছে। শীতের তীব্রতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো নিয়ে ভয় কাজ করছে। তাই আজকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেখে স্কুলেই পাঠাইনি। 

নওগাঁ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, জেলায় ভোরবেলা তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলেও সকাল ১০টার পর তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির বেশি ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়ছে। তাই স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় অবস্থান করায় সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসের খোঁজ নিতে পারিনি। 

পরে আমার অফিসের অন্য কর্মকর্তারা সকাল ১০টার পরে জেনেছেন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ততক্ষণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পৌঁছে গেছে। তাই ছুটি ঘোষণা করা হয়নি। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সোমবার জেলার সবকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

https://www.dailysangram.info/post/546746