২১ জানুয়ারি ২০২৪, রবিবার, ৪:১৭

কনকনে শীতে স্কুল খোলা রাখায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

 

শৈত্যপ্রবাহে সারাদেশে জবুথবু অবস্থা। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ শীতে কাঁপছে। এতে বেশি কাবু প্রবীণ ও শিশুরা। স্কুল-মাদ্রাসাগামী শিশু-কিশোররা প্রচণ্ড ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কাউকে কাউকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা রাখায় ক্ষুব্ধ অনেক অভিভাবক।

তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তবে অভিভাবক মনে করছেন, শৈতপ্রবাহের কারণে অন্তত সাত দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা উচিত।  

কনকনে শীত ও কুয়াশাঢাকা সকালে সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা। রাজধানীতেও শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে সমস্যায় পড়ছে। গ্রামাঞ্চলে এ সমস্যা আরও বেশি। কারণ ঢাকার তুলনায় গ্রামে শীত বেশি। রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অভিভাবিক সুমনা মুবাশশিরা সমকালকে বলেন, ‘সকালে মেয়েকে নিয়ে যখন স্কুলে যাই, তখন কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারপাশ। সূর্যের দেখা মেলে না। শীতের কারণে রাস্তায় রিকশা থাকে কম। ঠান্ডায় বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ার টেনশন তো আছেই।’

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের অভিভাবক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শীতের কারণে ক্লাস সেভাবে হচ্ছে না, কারণ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ ক্লাস বাদ দিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে; কিন্তু ঠান্ডার কারণে তাতেও সেভাবে সাড়া নেই।’

গতকাল শনিবার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পুরো জানুয়ারি শৈত্যপ্রবাহ চলবে। এ সময় তাপমাত্রা ওঠানামা করবে। আর আগামী কয়েক দিনে শীতের প্রকোপ বাড়বে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও নতুন পাঠ্যবই বিতরণ ও ভর্তি কার্যক্রম চলছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে ছাত্রছাত্রী উপস্থিতি কম। পুরান ঢাকার এক স্কুলশিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শীতের কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কম। যারা আসছে, তাদেরও অনেক কষ্ট হচ্ছে।’ অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে অন্তত সাত দিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার দাবি জানান।  

১৬ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এক নির্দেশনায় প্রথমে তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পরে তা সংশোধন করে ১০ ডিগ্রি করা হয়। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ কয়েকটি জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়।

তবে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও কোথাও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে, কোথাও থাকছে না। অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তহীনতা ও সমন্বয়হীনতায় ভুগছে। আর এতে ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের।
তাই অন্তত সাত দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দেওয়া উচিত।’

এ বিষয়ে মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘সারাদেশে সব স্থানের তাপমাত্রা এক নয়, তাই পরিস্থিতি ভিন্ন। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্থানীয় প্রশাসনই সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’

https://www.samakal.com/bangladesh/article/219059