২০ জানুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ১:২৬

বিজিএমইএর তথ্য

ইইউতে পোশাক রফতানি কমেছে

 

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানির পরিমাণ ১ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরেছে পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন-বিজিএমইএ।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠনটি বলছে, গত ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমা এ বাজারে ১১৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ১১৫০ কোটি ডলার। বিডিনিউজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান গতকাল শুক্রবার বিকেলে জানান, বিভিন্ন কারণে ইইউর ক্রেতাদের আসলে বায়িং পাওয়ার কমেছে। ২০২২ সালে তাদের ইমপোর্ট অনেক ভালো করেছিল, সে সময়ের কিছু ইনভেন্টরি থেকে গিয়েছিল, স্টক থেকে গিয়েছিল। এসব কারণ মিলে বাংলাদেশ থেকে শুধু না, গার্মেন্টের যারা বড় এক্সপোর্টার, চায়না বলেন, ভিয়েতনাম বলেন- সবার নেগেটিভ গ্রোথ। এটা শুধু যে বাংলাদেশের তা না।

বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরী পোশাক থেকে। আর এসব তৈরী পোশাকের ৪০ শতাংশ যায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশে।

ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথমার্ধে স্পেনে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ফ্রান্সে ২ দশমিক ১৫ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ৯ দশমিক ১১ শতাংশ এবং পোল্যান্ডে ১৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। অন্য দিকে জার্মানিতে ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ, ইতালিতে ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং বেলজিয়ামে ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমেছে।

বাংলাদেশের জন্য বৃহত্তম বাজার জার্মানিতে রফতানি হ্রাসকে ইউরোপে প্রবৃদ্ধি কমার মূল কারণ হিসেবে দেখছেন বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল। গত ছয় মাসে জার্মানিতে ২৮৬ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে, যেখানে আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩৪৫ কোটি ডলার।

চলতি বছরের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির পরিমাণ ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে নেমেছে ৪০৩ কোটি ডলারে, যেখানে আগের বছরে একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল প্রায় ৪২৮ কোটি ডলার।

উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডায় পোশাক রফতানি কমেছে ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। সবশেষ ছয় মাসে সেখানে রফতানি হয়েছে ৭৪ কোটি ডলারের পণ্য, যেখানে আগের বছর এই পরিমাণ ছিল ৭৭ কোটি ডলার। একই সময়ে যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, সেখানে ২৭১ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। আগের বছর এ সময়ে রফতানি হয়েছিল ২৩৯ কোটি ডলার।
এ দিকে ইউরোপের বাজারে খারাপ করলেও আশার আলো দেখিয়েছে অপ্রচলিত বাজার। এ বাজারে পোশাক রফতানির পরিমাণ ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৫৪ কোটি ডলার, যেখানে আগের বছর প্রথমার্ধে এর পরিমাণ ছিল ৪০৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে জাপানে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ২৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ বেড়েছে রফতানি। তবে ভারতে রফতানি কমেছে ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।

মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, অপ্রচলিত বাজার এবং সেখানে আমাদের নতুন প্রোডাক্টে ফোকাস করায় আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। তবে খারাপের মধ্যেও অন্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো করেছি।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, অস্ট্রেলিয়াসহ অপ্রচিলত বাজারগুলোতে আমরা ভালো করেছি। ওভারঅল যেটা আমাদের হয়েছে, আমি বলব যে খারাপের মধ্যে ভালো। এই কারণে যে, ডিমান্ডই কম ছিল, ইমপোর্টই কম হয়েছে; সেই হিসেবে বাংলাদেশ ভালো করেছে। তবে সার্বিকভাবে বছরের প্রথমার্ধে পোশাক রফতানিতে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখেছে বাংলাদেশ। গত ছয় মাসে প্রায় ৪৫৪ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে, যেখানে আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ৪০৪ কোটি টাকা। পোশাক শিল্পের স্বার্থে গ্যাস সঙ্কট নিরসনের পাশাপাশি কাস্টমস ও বন্ড সেবা সহজীকরণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/807741