২০ জানুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ১:১০

চট্টগ্রামে সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধআরো প্রকট হচ্ছে গ্যাস সংকট

দিন দিন আরো প্রকট হচ্ছে গ্যাস সংকট। রান্নার গ্যাস ছাড়াও সিএনজি, শিল্পকারখানা এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে দেশে তীব্র গ্যাস সংকট চলছে । গ্যাস সংকটের পুরোপুরি কবে সমাধান হবে তার কোন উত্তর নেই কারো কাছে। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার বানিজ্যিক কেন্দ্র চট্রগ্রামে বন্ধ হয়েছে গ্যাস সরবরাহ। ফলে সেখানে বেড়েছে চরম দুর্ভোগ। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্যাস সংকটের কারণে নিজস্ব জ্বালানির উৎপাদন কমেছে আর আমদানিনির্ভরতা বেড়েছে।

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ, শিল্প, সার গৃহস্থালি ও সিএনজিসহ সাতটি সেক্টরে মোট চাহিদা দাঁড়াবে ৩ হাজার ৭১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। পেট্রোবাংলার হিসাবেই বর্তমানে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাসের ঘাটতি আছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গ্যাসের ঘাটতি আরো বেশি - যা দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের মতো।

জানা গেছে, বাংলাদেশে গ্যাস সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে। পেট্রোবাংলার হিসাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাসের চাহিদাই হবে এবার দেড় হাজার মিলিয়ন ঘটফুটের মতো। তবে উৎপাদন সক্ষমতা অনুযায়ী গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সার্বিক চাহিদা হলো ২ হাজার ২৪০ এমএমসিএফডি। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা হচ্ছে সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ এমএমসিএফডি গ্যাস। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে গ্যাসের যে চাহিদা রয়েছে সেটির বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ৪০ শতাংশের মতো। সরকারি হিসাবে এ বছর গরমে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা হতে পারে ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের মতো। এ বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল, গ্যাস ও বিপুল পরিমাণ কয়লা প্রয়োজন হবে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমদানিসহ জ্বালানির জন্য ব্যয় করতে হয়েছে ৬১ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।

প্রাথমিক জ্বালানির অভাবে ২০২২ সালে ব্যাপক লোডশেডিং করতে হয়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এলএনজি, কয়লা ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জ্বালানি আমদানির জন্য অতিরিক্ত ১৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছিল বলে জানিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। এক পর্যায়ে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি গ্যাস আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি চাহিদা পূরণ করতে ডলারের ওপর ব্যাপক চাপ পড়ছে। বর্তমান সংকটের কারণে এ বছর জ্বালানি সংকট পূরণ আরো চ্যালেঞ্জিং হবে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

গ্যাস সংকটের কারনে চরম দুর্ভোগ বেড়েছে সারা দেশের মানুষের। শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতে উৎপাদনে ধস নেমেছে। 

ঢাকার মিরপুরের  গৃহিণী রেশমা বেগম  জানান , ভোর ৫টা বাজে উইঠা দেখি যে একটু পানিও গরম করতে পারি না। সারাদিন তো গ্যাস আসেই না। সকাল বেলা নাস্তা বানাইতে পারি না ছেলে অফিসে যায়। ছেলের বাপ ডায়েবেটিসের রোগী, তারে নাস্তা বানায় খাওয়াইতে পারি না। অনেক কষ্ট হয়,’ গ্যাস সংকটের কারণে কষ্টের কথাগুলো এভাবেই বর্ণনা করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে বছরে এখন গ্যাসের চাহিদা এক টিসিএফের কাছাকাছি। সেই হিসাবে এই গ্যাস দিয়ে ১০ বছরের মতো চলতে পারে। গ্যাসের মজুদ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন অনুসন্ধান ও উত্তোলন বৃদ্ধি করা। পেট্রোবাংলা অতীতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেও সেটি থেকে সরে এসেছে। গ্যাস যে দেশে নাই এটা তো পেট্রোবাংলা ২০০৭ সাল থেকেই জানে। ২০১০ সালে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যেসব পরিকল্পনা ছিল সেগুলো সব ঝেড়ে ফেলা হয়েছে এবং পুরোটাই এলএনজি গ্যাস পরিকল্পনায় চলে গেছে ২০১২-১৩ সাল থেকে। 

জানা গেছে, এই মুহূর্তে দেশের ২২টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক উত্তোলন হচ্ছে কমবেশি ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাস। আর ৫০০ এমএমসিএফডি এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এলএনজি আমদানির সক্ষমতা অনুযায়ী দৈনিক সর্বোচ্চ ৮০০ থেকে ৯৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি সম্ভব। এখনকার চাহিদা পূরণে আমদানি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই, তবে দীর্ঘমেয়াদে সমাধানের জন্য সাগরে ও স্থলভাগে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুসন্ধান বাড়ানোটাই হবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের সর্বোত্তম উপায়। ‘যথেষ্ট পরিমাণ অনুসন্ধান করতে হবে। কূপ খনন করে যেতে হবে। দশটা কূপ খনন করে যদি তিনটাতেও পান তাহলেও কিন্তু ভালো। এই কাজটা না করলে এই গ্যাস সংকট থেকে কখনোই উত্তরণ ঘটাতে পারবো না। স্থলভাগেও জরুরি ভিত্তিতে বাপেক্স এবং এর সাথে বিদেশী কোম্পানিকে এনগেজ করতে হবে। সামগ্রিকভাবে আমাদের অনুসন্ধান কাজকে আরো জোরালো করতে হবে।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ না থাকা এবং আমদানিনির্ভরতা বৃদ্ধির কারণেই সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কয়লানির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা হয়েছে কিন্তু নিজস্ব কয়লা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম বলেছেন, ‘দিনে দিনে আমাদের উৎপাদন কমে আসছে। উৎপাদন বাড়ানোর একটা চেষ্টা হয়েছিল তাতে কিছু জায়গায় উৎপাদন বেড়েছে কিন্তু অন্য জায়গায় কমে গিয়ে নিট উৎপাদন কমে গেছে। ‘আমদানির ক্ষেত্রেও আমরা দেখতে পাচ্ছি একটা স্থবিরতা আছে। এই মুহূর্তে কোনো স্বল্পকালীন সমাধান নাই। এই জ্বালানি সংকট যেটা সেটা ডলারের সংকট না কাটলে স্বল্পকালীন কোনো সমাধান নাই। 

ম. তামিম বলেন, গত বছর তেল-গ্যাস-কয়লা সব মিলিয়ে ১৩-১৫ বিলিয়ন ডলার লেগেছে। এবছর জ্বালানির দাম একই থাকলে প্রতি মাসে ১.২ বিলিয়ন ডলার লাগবে। অর্থাৎ এক বছরে ১৮ বিলিয়ন লাগতে পারে। এ বিষয়টি প্রচ- চাপ সৃষ্টি করবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের তো শুধু জ্বালানি আমদানি করলেই হবে না। শিল্প-কারখানা চালাতে গেলে কাঁচামাল টোটাল আমদানির যে চাপ সেটা তো আছেই। সেখানে জ্বালানি অতিরিক্ত চাপ চলে এসেছে কারণ আমাদের জ্বালানি পুরো পরিকল্পনাটাই আমদানিনির্ভর হয়েছে।

অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, বর্তমানে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করতেই সরকার হিমশিম খাচ্ছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী জ্বালানি আমদানি ব্যয় মেটানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম জানান, সমস্যার পেছনে প্রধানত বাংলাদেশে স্থলভাগ ও সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান তৎপরতায় ঘাটতি রয়েছে ।  তিনি বলেন, সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ক্ষেত্রে ভারত ও মিয়ানমার ভালোভাবে করলেও বাংলাদেশের সমুদ্রে গ্যাস উত্তোলন হয়নি, অনুসন্ধানও হয়নি। গ্যাসের সংকট সহসা কাটবে না বলে তিনি মনে করেন।‘দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি আমরা ওইভাবে দেখছি না। বরং মনে হচ্ছে যে এটা যে কমতির দিকে যাচ্ছে সেটাকে উঠিয়ে নিয়ে আসার পর্যাপ্ত অনুসন্ধান এবং কূপ খননের কাজগুলো যতটা দরকার ততটা হচ্ছে না,’ বলেন তিনি।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জ্বালানি সংকট সমাধানের জন্য সরকার বহুমুখী জ্বালানি ব্যবহার করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে জোর তৎপরতা আছে। এ বছরই সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। এছাড়া পরিবেশ ও কৃষিজমি রক্ষা করে নিজস্ব কয়লা উত্তোলনের জন্যেও পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের স্ট্রাকচার যেগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের আরো ড্রিলিং করতে হবে এবং তার জন্য অর্থযোগানও দিতে হবে। অর্থটাও কিন্তু একটা বড় বিষয়। এবার ৪৬টা কূপ খনন করবো দুই বছরে। আরো ১০০ কূপ খনন করবো ২০২৫ সালের মধ্যে। তাতে আমি আশাবাদী যে দুই বছরের মধ্যে আমরা আরো ৫০০ মিলিয়ন যোগ করবো। কিন্তু ডিমান্ড তো আরো বেশি। দেড় হাজার এমএমসিএফ। গ্যাস অনুসন্ধান ও জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয় আশ্বাস দিচ্ছে ২০২৬ সাল থেকে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাৎক্ষণিক সংকট মেটাতে জ্বালানি আমদানি করা ছাড়া উপায় নেই তবে সেটিও নির্ভর করছে ডলারের মজুদ, বিশ্ববাজারে দাম এবং দেশের আর্থিক সক্ষমতার ওপর।

চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে আবাসিক ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাস সরবরাহ আকস্মিকভাবে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে গ্যাসবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সরবরাহে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মানুষের ঘরে চুলা জ্বলছে না। বন্ধ রয়েছে রান্না-বান্না। চুলোয় গ্যাস না থাকায় ওইদিন সকাল থেকে দুপুর অব্দি খাবার হোটেলে লাইন ধরেছেন নগরবাসীরা। খাবার হোটেলগুলোতেও পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। এতে সার কারখানা কাফকো ও সিইউএফএল, শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ গ্যাসনির্ভর সব শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ফের গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে কবে, নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ। এক প্রকার খাবার সংকটেই পড়ে গেছে চট্টগ্রামের মানুষ।

কর্ণফুলী গ্যাসের কর্মকর্তারা জানান, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ তদারকি করে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড। গ্যাসের সরবরাহের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করে আমদানিকৃত এলএনজির ওপর। 

তারা বলছে, কক্সবাজারের মহেশখালীতে সাগরের তলদেশের সঞ্চালন পাইপলাইনের (কনভার্টারের) মাধ্যমে এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ হয়। দুটি কনভার্টারের মধ্যে একটি গত নবেম্বর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল। একটি পাইপলাইন দিয়েই এতদিন সরবরাহ চলছিল। 

বৃহস্পতিবার রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া কনভার্টারটি কমিশনিং করা হয়েছে। পাশাপাশি অপর কনভার্টারটি রি-কমিশনিং করা হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। কিন্তু মধ্যরাত থেকে নতুন কমিশনিং হওয়া কনভার্টারের জেনারেটর বিকল হয়ে গেছে। এজন্য পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

গ্যাস নেই ৬৮টি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনেও। এছাড়া চট্টগ্রামে ইস্পাত, সিমেন্ট, শিপ ব্রেকিং, ঢেউটিন, গার্মেন্টসের মতো শিল্প খাতে কয়েক হাজার বাণিজ্যিক এবং ৬ লাখেরও বেশি আবাসিক গ্রাহকের সংযোগ ও গ্যাস সরবাহ নেই।

চট্টগ্রামে আগে গ্যাস সংকট হলে সিলেট এবং কুমিল্লা অঞ্চলের গ্যাস আনা হতো আশুগঞ্জ বাখরাবাদ পাইপলাইন দিয়ে। কিন্তু এলএনজি আমদানি শুরু করার পর আশুগঞ্জ বাখরাবাদ পাইপ লাইনকে বাল্ব লাগিয়ে ওয়ান-ওয়ে করে ফেলা হয়। ফলে চট্টগ্রাম থেকে গ্যাস শুধু নেওয়া যায়, আনা যায় না।

গ্যাস সংকট থাকায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ছুটির দিনে কর্মজীবী মানুষেরা বাসায় থাকেন। ফলে রান্না বন্ধ থাকায় খাবার সংকটে পড়েতে হয়েছে তাদের। সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে মানুষকে ভিড় করতে দেখা গেছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সকালের নাস্তা বা দুপুরের খাবার সংগ্রহ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। সড়কের টং দোকানগুলোতেও ছিল ভিড়। ছুটির দিনে অনেক বেকারি বন্ধ থাকায় পাউরুটি পাওয়া যাচ্ছিল না দোকানগুলোতে।

গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় গ্যাসচালিত গণপরিবহনের সংকট দেখা দিয়েছে নগরীতে। বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গাড়ি চালকরা বলছেন, দীর্ঘ লাইন ধরে তারা স্বল্প গ্যাস নিয়েছেন। গাড়ি গ্যাস ফুরিয়ে গেলেও পুরো দিনের ভাড়া দিতে হবে। দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু এখন গ্যাসের সরবরাহ ২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। এলএনজি আমদানি করতে হয় স্পট মার্কেট (খোলাবাজার) থেকে। ডলার সংকটের কারণে এই মুহূর্তে এলএনজি আমদানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম। কিন্তু এখন এলএনজি টার্মিনালে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান তারা।

https://www.dailysangram.info/post/546565