১৯ জানুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ৪:৪৬

মাঘের শীতে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। একইসাথে কুয়াশাও পড়েছে। এর মধ্যে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গাসহ দক্ষিণের কিছু এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ হয়েছে বৃষ্টি। এই বৃষ্টির মধ্যে অন্তত ১০ জেলায় বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। এই শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কুয়াশার মধ্যে মাঘের শীতে এই বৃষ্টি বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। মাঘের শীতের বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। 

আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, দেশের তাপমাত্রা আরও কমেছে। সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বুধবার দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল বান্দরবান ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রংপুর অঞ্চলের প্রতিটি স্থানেই তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। পুরো বিভাগেই বইছে শৈত্যপ্রবাহ। রংপুরের আট জেলা ছাড়া শৈত্যপ্রবাহের এলাকার মধ্যে আছে কিশোরগঞ্জ ও নওগাঁ।

দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজধানীতেও কমেছে তাপমাত্রা, বেড়েছে শীতের প্রকোপ।  রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

এই শীতের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা, খুলনাসহ দক্ষিণের বেশ কিছু এলাকায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল সকালে ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

দেশে সবচেয়ে বেশি শীত পড়ে জানুয়ারি মাসে। এ নিয়ম মেনেই চলতি জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই শীত পড়তে শুরু করে। শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ, সেই সঙ্গে কুয়াশা। মাঝেমধ্যে কিছু এলাকায় রোদের দেখা মিলেছে। তবে জানুয়ারি মাসে এই কুয়াশাকে একেবারে অস্বাভাবিক বলে মনে করেন না আবহাওয়াবিদেরা। গত বছর দেশে এই মাসে কয়েকটা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে এ বছর এখন পর্যন্ত কোথাও এমনটা হয়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র বলছে, আজ শুক্রবার থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশা অনেকটা কেটে যাবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ার ফলে আজ শুক্রবার থেকে কুয়াশা কাটতে শুরু করবে। তবে বৃষ্টির পর শীতের তীব্রতা শিগগিরই কমবে না। 

রংপুর: উত্তরাঞ্চলে কুয়াশার দাপটের মধ্যেই টানা ১০ দিন পর সূর্যের দেখা মিলেছে। যদিও হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার সঙ্গে বিরাজ করছে ঠান্ডার শিরশির অনুভূতি। তবে দীর্ঘদিন পর সূর্যের দেখা মেলায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন নগরবাসী। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, সারাদেশে শীতের প্রকোপ কমে ২ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়ার পাশাপাশি কোথাও কোথাও বৃষ্টির হয়েছে।

উত্তরাঞ্চলে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে গত ১০দিন দেখা মেলেনি সূর্যের। গত কয়েকদিন ধরেই শীতের প্রকোপ তীব্র আকার ধারণ করে। এতে করে এই অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় হতদরিদ্র মানুষের কাজকর্ম থমকে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) উত্তরাঞ্চলে বিভিন্ন জেলার মধ্যে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রংপুরে ৯ দশমিক ৯, পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৭, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৯, ডিমলায় ৮ দশমিক ২, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৯, গাইবান্ধায় ১১ এবং লালমনিরহাটে ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার কিছুটা পর হঠাৎ করেই রোদের দেখা মিললে অনেকটাই উৎফুল্লতা দেখা গেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যেও দেখা গেছে চাঞ্চল্যতা। স্থানীয় হাট-বাজারে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও বেড়ে যায়। 

তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে ফসলের ক্ষেতে বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে নগরির আশরতপুর এলাকার আলু চাষী মোজাম্মেল আলী বলেন, মাঠভরা আলু বাঁচাতে চড়া দামে বারবার কীটনাশক কিনেও লাভ হয়নি। ঘন কুয়াশার সঙ্গে যুদ্ধ করে এখনো ভরা আলুর মাঠ রক্ষা করে চলেছি। কুয়াশার কারণে লেট ব্লাইট দেখা দিয়েছে। যেহেতু রোদ উঠেছে দেখি কতটুকু সময়াধান করা যায়।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রিয়াজ উদ্দিন জানান, শৈত্য প্রবাহে বিভিন্ন ফসলের তেমন একটা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে কুয়াশা দীর্ঘ মেয়াদী হলে আলুর গাছ লেট ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হবে। এতে গাছের পাতা লালচে বর্ণ ধারণ করবে। পাতা ও ডগায় পচন ধরে গাছগুলো নষ্ট হবে। তবে আলুর রোগ প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কৃষকদের পরিমিত কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসে ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। এ সময় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া সারাদেশে শীতের প্রকোপ কমে ২ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়ার পাশাপাশি কোথাও কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে শীতের তীব্রতার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে চলমান এ শৈত্যপ্রবাহ কমে আসায় রংপুরের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু আছে বলে জানা গেছে।

তীব্র শীতে জবুথবু পাহাড়ি জনজীবন : সারাদেশের মতো পার্বত্য জেলা রাঙামাটির ওপর দিয়েও বয়ে চলেছে শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে পাহাড়ি জনজীবনে। বেশি বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। দিনের অর্ধেকে গিয়ে সূর্যের দেখা মিললেও কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে কাপ্তাই হ্রদ তীরবর্তী পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামসহ জেলা সদরের এলাকাগুলো।

শীতের প্রভাবে প্রায় বিপর্যস্ত পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির সাধারণ মানুষের জনজীবন। বিশেষ করে বিভিন্ন উপজেলা ও পাহাড়ি গ্রাম থেকে পণ্য নিয়ে জেলা সদরের বাজারগুলোতে বিক্রি করতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে যারা কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে পণ্য আনা নেওয়া করেন তাদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জেলা সদর থেকে বিভিন্ন উপজেলায় যেসব ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও লঞ্চ চলাচল করতে কুয়াশার কারণে যাত্রাপথে সময় বেশি ব্যয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌযান চালকরা।

রাঙামাটি থেকে লংগদু উপজেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া এম.এল কবীর লঞ্চের চালক ইসমাইল বলেন, সকাল ৭টায় আমাদের প্রথম লঞ্চটি রাঙামাটি থেকে ছেড়ে যায়। কিন্তু তখন সূর্য উঠে না আর চারপাশে প্রচুর কুয়াশা থাকে। তাই আমাদের পথ দেখতে কষ্ট হয়। কারণ সকালে জেলেরা মাছ ধরার জন্য হ্রদে জাল ফেলে। কিন্তু দেখা না যাওয়ার কারণে অনেক সময় লঞ্চ জালের উপর দিয়ে গেলে জাল ছিড়ে যায়। তাছাড়া কুয়াশার কারণে ছোট নৌকাগুলোও দেখা যায় না। আমরা লাগাতার হর্ণ বাজিয়ে চলাচল করছি।

রাঙামাটি সদরের বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের পাহাড়ি গ্রাম থেকে সবজি নিয়ে শহরের বনরুপা বাজারে বিক্রি করতে এসেছেন সুশোভন দেওয়ান। তিনি বলেন, বনরুপা বাজার সকাল সকাল শুরু হয়। তাই আমাদের ভোরের আলো ফোটার আগেই বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হয়। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে বোট নিয়ে আসতে আমাদের খুব কষ্ট হয়।

তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের উপর। শীতের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেকে, ধ্বস নেমেছে ক্ষুদ্র দোকানীদের ব্যবসায়। শহরের শহীদ মিনার এলাকায় বাদাম বিক্রি করতে আসা ইউসুফ আলী বলেন, যখন থেকে শীতের তীব্রতা বেড়েছে তখন থেকেই আমাদের ব্যবসা খুব খারাপ। কারণ বিকেল হতে হতেই শীত বাড়তে থাকে, তাই কেউ আর বাইরে থাকতে চায় না। একই কথা বলেন ষাটোর্ধ্ব পিঠা বিক্রেতা আজগর মিয়া। তিনি বলেন, যদিও আমি শীতের খাবার পিঠা বিক্রি করি, কিন্তু শীতের কারণেই এখন ব্যবসা একেবারে ঠান্ডা। শীত বেশি বলে মানুষ এখন এদিকে কম আসে আর আমাদের ব্যবসাও কম হয়।

তবে শীতের কারণে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বিদেশি ব্র্যান্ডের পুরাতন শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতে। ফুটপাত এবং অস্থায়ী বিভিন্ন দোকানে শীতের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ক্রেতাদেরও আগ্রহ রয়েছে কমদামী এই শীতবস্ত্রগুলোতে। পুরাতন শীতবস্ত্রের দোকানদার আবু তাহের বলেন, গত শুক্রবার থেকে বেশ ভালোই শীত পড়েছে। তাই বর্তমানে আমাদের বেচা বিক্রিও বেশ ভালো। পুরাতন জ্যাকেট আর সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে বেশি। পাশাপাশি কম্বল ও ব্ল্যানকেটও ভালোই চলছে।

রাঙামাটি আবহাওয়া কার্যালয়ের সিনিয়র অবজারভার ক্য চিনু মারমা জানান, সারাদেশের মত রাঙামাটিতেও খুব ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গত কয়েকদিন সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির ভেতরে আছে এবং আগামী কয়েকদিনও তাপমাত্রা এমনই থাকবে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম থেকে মোস্তাফিজুর রহমান : তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রিতে নামায় জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক শিক্ষিকাগণের দূর্যোগের বিষয়টি চিন্তা করে কুড়িগ্রামের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছেন জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ শামছুল আলম। শৈত্যপ্রবাহের দশমদিনেও সূর্যের আলো নেই প্রচুর পরিমাণ ঠান্ডা আর হিমেল বাতাসে কাহিল কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষ। 

আগের দিন বুধবার প্রায় ২টারপর পশ্চিম গগনে যতসামান্য সূর্যের আলো দেখা গেলেও তাপ না থাকায় তা উষ্ণতা বাড়াতে পারেনি, বরং ঠান্ডা হিমেল বাতাসে যবুথবু সর্বসাধারণের জীবনে নেমে এসেছে দুর্বিষহ অবস্থাঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র জরুরী হয়ে পড়েছে। 

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, চলতি মাসে হাড় কাঁপানো শীতে কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি এবং  রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৬ ডিগ্রি। ৮ জেলায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৯ থেকে ১২ ডিগ্রিতে। আগামী কয়েকদিন রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের আবহাওয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে জানা গেছে। সে সঙ্গে হতে পারে বজ্রসহ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

এদিকে, প্রচ- শীত থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের চেষ্টার কমতি নেই। ছিন্নমূল মানুষ অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তিব্র শীতে শ্রমজীবী মানুষকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

নড়াইল সংবাদদাতা:  কনকনে বাতাসে শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নড়াইলের তিন উপজেলার সাধারণ মানুষের জনজীবন।বিশেষ করে দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষেরা বেকায়দায় পড়েছেন।চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ।বৈরী আবহাওয়ায় গত তিনদিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ায় জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে।দৈনন্দিন আয় রোজগার কমে যাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষগুলো মানবেতর জীবন যাপন করেছেন।াববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সূর্য্যরে আলো পড়েনি জেলার কোথাও।যে কারণে সারাদিন শীতের তীব্রতা ছিল বেশি। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে শীতের তীব্রতা বেড়েছে এ জেলায়।দিন পেরিয়ে রাত এলেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ফোঁটার মতো কুয়াশা ঝরছে। তীব্র হিমেল বাতাসে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষজনের অবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।অনেক দিনমজুর কাজের সন্ধানে সকালে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।প্রচন্ড শীতে আর কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কাজের সন্ধানে ছুটছেন কর্মজীবী মানুষরা। শীত উপেক্ষা যারা বের হচ্ছেন তারা স্বাভাবিক পরিবেশ না থাকায় কর্মবিমূখ অবস্থায় বাড়ি ফিরছেন। শহরের রাস্তাগুলোতে লোকজন চলাচল কম থাকার কারণে রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি, ভ্যান চালকরা যাত্রী না পাওয়ায় আয় কমে গেছে তাদের।বাসের যাত্রীও অর্ধেকে নেমে এসেছে।দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চালাতে হচ্ছে যানবাহনগুলো।কাঁচা তরিতরকারির ব্যবসায়ীরা বলছেন,গত তিনদিন ধরে ক্রেতা ঠিকমত না আসায় কাঁচামাল বিক্রিতে ধস নেমেছে। 

এদিকে রাত ও দিনে তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিন ও রাতে ঠান্ডা প্রায় একরকম অনুভূত হচ্ছে।অসহায়,দু:স্থ ও ছিন্নমূল  মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।শীতের তীব্রতায় মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুরাও ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে।

https://www.dailysangram.info/post/546467