১৪ জানুয়ারি ২০২৪, রবিবার, ৩:৫৮

১৩ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ

পৌষের বিদায় বেলায় জেঁকে বসেছে শীত। হাড় কাঁপানো শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশার দাপটও বেড়েছে। আর এর প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এ ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত নানা রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। গত শুক্রবার চার জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহ বয়ে গেলেও গতকাল দেশের ১৩ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এ অবস্থায় আজ রোবাবর সকাল ৯টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘœ ঘটতে পারে। এছাড়া রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের (পঞ্চগড়, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা) ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। গতকাল শনিবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল দিনাজপুরে। একদিন আগে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলী ও চুয়াডাঙ্গায়। সকালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। 

দিনাজপুর: কুয়াশার দাপটে সূর্য উধাও হয়ে গেছে। ১০ জানুয়ারি থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পুরো জেলা। সকাল ১০টা পর্যন্ত যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশাদুজ্জামান জানান, শনিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই চলতি শীত মৌসুমে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড। এর আগে গত ৩ জানুয়ারি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে চলতি পৌষ জুড়ে জেলায় তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছিল। এদিকে কুয়াশার দাপট আর হাড় কাঁপানো কনকনে হিম শীতের প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষদের কাজ করতে হচ্ছে দুর্ভোগের মধ্যে।

নওগাঁ:  উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কনকনে তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া দিনমজুর দরিদ্র অসহায় মানুষ। ক্ষতির মুখে পড়েছে চলতি মৌসুমের ইরি-বোরা বীজতলা। নওগাঁর বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া অফিসে উচ্চ পর্যবেক্ষক কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ বলেন, শনিবার সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার কারণে ইরি-বোরো বীজতলা লাল বর্ণ ধারণসহ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকায় জেলায় লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। শীতে লোকজন ঘর থেকে কম বের হওয়ায় আয় অর্ধেকে নেমেছে খেটে খাওয়া দিনমজুরদের। এর ফলে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। কৃষি শ্রমিকরা কাজ করতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে চলতি মৌসুমের ইরি-বোরো চাষাবাদ। ইরি-বোরো চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, ঘন কুয়াশা দীর্ঘায়িত হলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ইরি বীজ কিনে রোপণ করতে হবে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) খলিলুর রহমান জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর বোরো জমিতে রোপণের জন্য বীজতলা তৈরি করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। ঘন কুয়াশার কারণে কিছু কিছু এলাকায় বীজতলা ক্ষতির মুখে পড়েছে তবে কুয়াশা দীর্ঘায়িত না হলে বীজতলার তেমন কোন ক্ষতি হবে না। তিনি দিনের বেলা বীজতলা ঢেকে রাখা, সন্ধ্যার পর পানিতে ডুবিয়ে রাখা এবং এসব বীজতলায় ইউরিয়া, পটাশ সার ছিটানোর পরামর্শ দেন। একই আলু ও সরিয়া ক্ষেতে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুসারে কীটনাশক স্প্রে, আলুর ক্ষেতে পানি দেওয়ারও পরামর্শ দেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

চুয়াডাঙ্গা: জেলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় জেলা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তীব্র শীতে শহরে মানুষের উপস্থিতি কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে আসছেন না। তবে পেটের তাগিদে দিনমজুর শ্রেণির মানুষদের কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে আসতে হয়েছে। রিকশা ভ্যানচালকরা আশানুরূপ যাত্রী পাননি। দ্বিতীয় দিনের মত জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এখন মাঠে বোরো মৌসুমের কাজ। শীতের কারণে কৃষকরা মাঠে কাজে যেতে পারছেন না বা দেরিতে মাঠে যাচ্ছেন।

লালমনিরহাট: পৌষের শেষে হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় লালমনিরহাটের মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। বিশেষ করে নদী চরাঞ্চল এবং তীরবর্তী লোকালয়ের মানুষ ঠান্ডার প্রকোপে স্থবির হয়ে পড়েছে। রংপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, শনিবার সকাল ৮টায় লালমনিরহাটের তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত ৪ দিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় তীব্র শীতে ভোগান্তি বেড়েছে জনজীবনে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট ও লোকালয়। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে মানুষের।

রংপুর: রংপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর ছাড়াও বিভাগের সৈয়দপুর, তেঁতুলিয়া দিনাজপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। একই সঙ্গে স্থানভেদে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। আরও কমপক্ষে ২ দিন এমন তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে মেঘের আনাগোনার সঙ্গে সঙ্গে হালকা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান এই কর্মকর্তা। জেলায় ভোর আর সন্ধ্যায় গ্রামে গ্রামে জটলা বেঁধে আগুন পোহানোর মাধ্যমে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে অনেকেই। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতা নিতে গিয়ে কোথাও কোথাও ঘটছে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাও। কেউ কেউ শীত নিবারণে গরম পানি ব্যবহার করতে গিয়েও দগ্ধ হচ্ছেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ দিনের ব্যবধানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। দগ্ধ রোগীদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এদের মধ্যে বার্ন ইউনিটে ১৩ জন এবং বাকি ৩২ জনকে সার্জারি, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. শাহ মো. আল মুকিত বলেন, চিকিৎসাধীন বেশির ভাগ রোগীই শীতের তীব্রতা থেকে উষ্ণতা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। প্রতি শীত মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিদগ্ধের এমন ঘটনা ঘটে।

ঠাকুরগাঁও: উত্তরের এই জেলায় অব্যাহত রয়েছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে বেড়েছে ঠান্ডা। আর এই ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে ছিন্নমূল মানুষেরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই চলতি শীত মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তিনি বলেন, ঘন কুয়াশায় ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছে বীজতলা রক্ষার জন্য। অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবনযাত্রা থমকে গেছে। কাজকর্মে গতি কমে যাওয়ায় অনেকের রোজগার কমে গেছে। 

বগুড়া: উত্তরাঞ্চল থেকে ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি অধ্যক্ষ ডা. মিজানুর রহমান, জানান গত সপ্তাহখানেক সূর্যের আলোবিহীন, কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কনকনে শৈত্যপ্রবাহজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলে জনজীবন অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। ৫ থেকে ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস সর্বনি¤œ তাপমাত্রার কারণে কনকনে শীতের তীব্রতায় দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা উপজেলাসমূহের বিভিন্ন জনপদে ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়াজনিত তীব্রশীতের দুর্যোগ- দুর্ভোগের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।  

গত এক সপ্তাহে হাঁড়কাঁপানো শীতে যবুথবু হয়ে পড়েছে বিভিন্ন পেশার মানুষ। বয়স্ক, রোগী সাধারণ ও নি¤œ আয়ের শ্রমজীবী মানুষের কষ্টের সীমা নেই। দিন মজুর, রিকশা- ভ্যান ও অটো-রিকসা চালকেরা তীব্রশীত উপেক্ষা করে জীবন-জীবিকার তাগিদে যানবাহন নিয়ে বের হলেও যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় রোজগার কমে গেছে। যমুনা নদীসহ অন্যান্য নদীর ঘাটে যাত্রীর সংখ্যাও অনেক কমে গেছে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও যানবাহনের হেটলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। হাট-বাজারের মোড়ে, বাসস্ট্যান্ডে, নদীর ঘাটে, রেলস্টেশনে, মসজিদের সামনে শীতের তীব্রতা প্রশমনে ছিন্নমূল মানুষের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরাও দাঁড়িয়ে বা বসে আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নেওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।

খুলনা ব্যুরো : তীব্র শীতে জবুথবু খুলনাঞ্চলের বিভিন্ন জনপথ। কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশাতে সবকিছু জড়সড় হয়ে গেছে। সূর্যটাও যেন দেরি করে উঠছে। আলোতে যেন কোনো তেজ নেই। এতে মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। হঠ্যাৎ করে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাতের তীব্র শীত মানুষের জন্য চরম অসস্তি-ভোগান্তি নিয়ে আসে। কেননা, এর আগে এ বছর এত মাত্রার শীত পড়েনি এ অঞ্চলে। এই শীতে অনেকটাই বিপর্যস্ত জনজীবন, বেশি ভুগছে বয়স্ক ও শিশুরা। প্রচন্ড ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় দিন-মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ নাকাল হয়ে পড়েছেন। কুয়াশার চাদর ভেদ করে দেরিতে সূর্য উদিত হলেও কমছে না শীতের প্রকোপ। শীতবস্ত্রের অভাবে শীতের প্রকোপ থেকে মুক্তি পেতে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এদিকে উষ্ণতার জন্য গরম কাপড়ের কদর বেড়েছে। ভিড় দেখা গেছে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোয়। বিভিন্ন বয়সের মানুষের শীতজনিত নানা রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ফলে হাসপাতালগুলোয় অসুস্থ রোগীর ভিড় বাড়ছে। 

সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা: নীলফামারীর সৈয়দপুরে গতকাল শনিবার তাপমাত্রা নেমেছে ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। ফলে কনকনে ঠান্ডায় জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমানবন্দরে কোন ফ্লাইট ওঠানামা করতে পারেনি। বেলা ১২ টা পর্যন্ত বেসরকারি তিনটি ফ্লাইটের ঢাকাগামী দুই শতাধিক যাত্রী আটকা পড়েছে। 

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন বলেন, আজ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা গত দিনের চেয়ে তাপমাত্রা কিছুটা কম। গতকাল ছিল ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বেলা সাড়ে ১১ টায় রানওয়ে এলাকায় দৃষ্টিসীমা ছিল মাত্র ১০০ মিটার।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ম্যানেজার সুপ্লব কুমার ঘোষ জানান, ইউএস-বাংলার দুইটি এবং নভো এয়ারের একটি ফ্লাইট ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেনি। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময়সূচি ছিল। আকাশে ঘন কুয়াশা কেটে গেলে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হবে।

https://www.dailysangram.info/post/545991