১৪ জানুয়ারি ২০২৪, রবিবার, ৩:৫৭

নির্বাচনে ‘কারচুপি’ হওয়ার কথা বলছেন খোদ আ’লীগ নেতা ও নৌকার প্রার্থীরা

 

* প্রশাসনের ছত্রছায়ায় কারচুপি করা হয়েছে : হাসানুল হক ইনু

* হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে আসতে পারেনি : ফজলে হোসেন বাদশা

* সূক্ষ্ম কারচুপি ও ষড়যন্ত্রের কারণে হেরেছি : আবদুস সোবহান গোলাপ

* ফলাফলে ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও বেআইনি কার্যকলাপ হয়েছে : ধীরেন্দ্র নাথ (শম্ভু)

* ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে : আবদুল কাহার আকন্দ

* ২৭% ভোটার উপস্থিতি দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ৫৫% হওয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে : ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক

গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে ‘কারচুপি’, ‘জালভোট’ ও ব্যাপক ‘অনিয়ম’ হওয়ার কথা বলছেন খোদ সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতা ও নৌকার প্রার্থীরা। নির্বাচনের পর থেকে এযাবৎ প্রায় প্রতিদিনিই কেউ না কেউ এই দাবি ও অভিযোগ তুলে চলেছেন। অভিযোগকারী এসব পরাজিত প্রার্থীরা হয় নৌকা প্রতীকের অথবা আ’লীগের কোনো না কোনো পর্যায়ের পদবিধারী।

এসব অভিযোগ সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রকাশ করা হয়েছে অথবা নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং অফিসারের নিকট অভিযোগ আকারে প্রদান করা হয়েছে। যদিও এসব পরাজিত প্রার্থী নিজ নিজ আসনে এই কারচুপি ও অনিয়মের কথা বলছেন, কিন্তু এর ফলে সামগ্রিক নির্বাচনের উপরেই গড় অভিযোগ এসে পড়ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। 

এই নির্বাচনে ‘কারচুপি’ হওয়ার দাবি করেছেন এমন উল্লেখযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ১৪ দলের গুরুত্বপূর্ণ শরিক জাসদ সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আরেক প্রধান শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক নৌকার প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক সরকারের অতি বিশ^স্ত ব্যক্তি আবদুল কাহার আকন্দ, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বরগুনা-১ আসন থেকে পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সংসদীয় কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ (শম্ভু), দলের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কৃষক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলন প্রমুখ। এর মধ্যে মোটা দাগে হাসানুল হক ইনুর অভিযোগ, ‘প্রশাসনের ছত্রছায়ায় কারচুপি করা হয়েছে’। ফজলে হোসেন বাদশার দাবি, ‘হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে ভোটাররা নির্বিঘেœ কেন্দ্রে আসতে পারেনি’। আবদুস সোবহান গোলাপের অভিযোগ, ‘সূক্ষ্ম কারচুপি ও ষড়যন্ত্রের কারণে হেরেছি’। ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর অভিযোগ, ‘নির্বাচনের ফলাফলে ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও বেআইনি কার্যকলাপ হয়েছে’। 

আবদুল কাহার আকন্দ দাবি করেছেন, ‘ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে’। ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক প্রশ্ন তুলেছেন, ‘২৭% ভোটার উপস্থিতি দুই ঘন্টার ব্যবধানে ৫৫% হওয়া নিয়ে’।

এপর্যন্ত যেসব আসনে নির্বাচনে জাল ভোট, অনিয়ম ও কারচুপি হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র দেয়া হলো।

কুষ্টিয়া-২ : নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৪ দলের প্রভাবশালী নেতা ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু পরাজিত হন আ’লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের ছত্রছায়ায় কারচুপি করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মস্তান বাহিনী ভোটের সাত দিন আগে থেকে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, সেটা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। ভোটের দিন ১৬১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৮টি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট প্রদান লক্ষ্য করা গেছে, যা কারচুপির মাধ্যমে করা হয়েছে। 

রাজশাহী-২ : নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হওয়া প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা ইসির কাছে অভিযোগ করেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সর্বোচ্চ ব্যক্তির নির্দেশে সব ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুবিধাভোগীর কার্ড আটকে রেখে কাঁচি প্রতীকে ভোট দিতে চাপ প্রদান করেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করার পর নির্বাচনের আগের রাতে ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজাম-উল আজিমকে এসব তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী আটক করেও নিয়ে যায়।

যদিও আর সব ওয়ার্ডে সেই একই প্রক্রিয়া চলমান থাকে। ক্রমাগত হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে ভোটের দিন ভোটাররা নির্ভয়ে ও নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেননি। কিশোরগঞ্জ-২ : নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক আবদুল কাহার আকন্দ ভোটে অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি এই নির্বাচন মেনে নেইনি। এই আসনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে।’ ফরিদপুর-১ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কৃষক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আরিফুর রহমান দোলন দাবি করেন, ভোটের শেষ ঘণ্টায় অর্ধ শতাধিক কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম ও নৌকার পক্ষে জাল ভোটের খবর আসতে থাকে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সহায়তায় এসব কেন্দ্রে অভোটার দিয়ে ভোট প্রদান, কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেয়া, ব্যাপক জাল ভোট প্রদান, মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীদের ভোট নেয়ার অভিযোগ করেন। পাবনা-৩ : স্বতন্ত্র প্রার্থী চাটমোহর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবং জেলা আ’লীগের নির্বাহী সদস্য আব্দুল হামিদ লিখিত অভিযোগে বলেন, নৌকার সমর্থকরা তার এজেন্টদের জোর করে বের করে দিয়ে জাল ভোট দিয়েছে, অবাধে ভোট কেটে নিয়েছে। ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারের সহযোগিতায় এসব অনিয়ম করা হয়েছে। ব্যালট পেপার নিয়ে জোর করে সিল মেরেছে নৌকার লোকজন। অনেক কেন্দ্রের ভোটারদের তুলনায় ভোট বেশি কাটা হয়েছে। ব্যালটের মুড়ি বই অংশ পরীক্ষা করলে দেখা গেছে সেখানে ভোটারদের কোনো নম্বর বা স্বাক্ষর নেই। কুমিল্লা-১১ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আ’লীগ নেতা মিজানুর রহমানের অভিযোগ, সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে নৌকার প্রার্থীর লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে তার এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একাধিকবার অভিযোগ করেও তার কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। প্রশাসন নৌকার পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করে। চট্টগ্রাম-১ : স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আ’লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন তার এজেন্টদের বের করে দেয়া এবং কেন্দ্র দখল করে সিল মারার অভিযোগ করেন। চট্টগ্রাম-৫ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের অভিযোগ করেন। চট্টগ্রাম-৮ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর আ’লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বিজয় কুমার চৌধুরীও অনুরূপ অভিযোগ করেন। জামালপুর-৫ : স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু জামালপুর জেলা আ’লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে তার পোলিং এজেন্টদের মারধর করে সব কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়া ও প্রকাশ্যে সিল মারাসহ ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ করেন। কক্সবাজার-১ : স্বতন্ত্র প্রার্থী, চকরিয়া উপজেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি ও সদ্য সাবেক এমপি জাফর আলম অভিযোগ করেন, ‘একটি বিশেষ সংস্থার লোকজন কেন্দ্র দখল করে তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে হাত ঘড়ি প্রতীকে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করেন।’ কক্সবাজার-৩ : স্বতন্ত্র প্রার্থী হাইকোর্টের আওয়ামী আইনজীবী ফোরামের নেতা ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ তার আসনে নৌকার লোকেরা কেন্দ্র দখল করে ব্যালেট পেপারে জোরপূর্বক সিল মারার অভিযোগ করেন। কক্সবাজার-৪ : স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি নুরুল বশর অভিযোগ করেন, উখিয়া টেকনাফের বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক সিল মেরেছে নৌকার কর্মী সমর্থকরা। ঝিনাইদহ-১ : স্বতন্ত্র প্রার্থী আ’লীগ নেতা নজরুল ইসলাম নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল, ভয়ভীতি দেখিয়ে এজেন্টদের বের করে দেয়া, জোরপূর্বক ভোট কেটে নেয়াসহ নানা অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আ’লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও প্রার্থীর সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। বরগুনা-১ : নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ (শম্ভু) অভিযোগ করেন, বেআইনিভাবে ভোট গণনা, ফলাফল বিবরণী প্রস্তুত ও একত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় নৌকা প্রতীকের উপস্থিত এজেন্টদের জোর আপত্তি উপেক্ষা করা হয়েছে। আইনসংগতভাবে প্রস্তুত না করায় ফলাফলে ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও বেআইনি কার্যকলাপ হয়েছে বলে দাবি করেন ধীরেন্দ্র দেবনাথ। কুষ্টিয়া-৩ : স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ারের অভিযোগ ‘ভোট কারচুপির’ ও হামলা-সহিংসতার। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে এই নির্বাচন বাতিলের দাবি করেন।

রাজবাড়ী-২ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, ভোট গ্রহণের তিন দিন আগে থেকেই নৌকার কর্মী-সমর্থক ও বহিরাগত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গভীর রাতে নির্বাচনী এলাকার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে তার সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পুরো এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ও বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে। এতে নির্বাচনের দিন তার কর্মী-সমর্থকেরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। অভিযোগে আরো বলা হয়, নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা বল প্রয়োগ করে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সহায়তায় প্রায় সব কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেন। এমনকি ভোট গণনার সময়ও তার পোলিং এজেন্টদের বুথে থাকতে দেয়া হয়নি। ফরিদপুর-২ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগরকান্দা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া দাবি করেন, ‘অধিকাংশ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ২০০-৩০০ ব্যালটে নৌকায় সিল মেরে আগেই বাক্সে ভরে রেখে দিয়েছিলেন এবং আমার ঈগলের ভোটের ওপর নৌকা লিখে বান্ডিল করেছেন। আমার চোখের সামনে ভোট কেটে নিয়েছে। প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে। অনবরত জাল ভোট দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে বারবার বললেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’ রাজশাহী-১ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আ’লীগ নেতা গোলাম রাব্বানি অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় প্রিজাইডিং অফিসাররা ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করেছে। তিনি এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। রাজশাহী-৪ : স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আ’লীগ সভাপতি সদ্যবিদায়ী এমপি এনামুল হক লিখিত আবেদনে অভিযোগ করেন, ১২২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪০টি কেন্দ্রে পুলিশ তার এজেন্টকে থাকতে দেয়নি। বাধার কারণে তার সমর্থকরা ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে পারেনি। এছাড়াও বেলা ২টা পর্যন্ত যেখানে ২৭ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি ছিল, কিন্তু দুই ঘন্টার ব্যবধানে সেটি কী করে ৫৫ শতাংশ হয়ে গেল এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি। রাজশাহী-৫ : পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান ভোটে অনিয়ম ও নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার অভিযোগ করে ভোটারের আঙুলের ছাপ ও স্বাক্ষর মিলিয়ে ভোট পুনর্গণনা দাবি জানান। ভোটের পর একের পর এক কর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাটের কথা জানাতে গিয়ে এ সময় কেঁদে ফেলেন তিনি। রাজশাহী-৬ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আ’লীগ নেতা রাহেনুল হক রায়হান অভিযোগ করেন, নির্বাচনের দিন বেলা ১২টার পর থেকে প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে এবং নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে। ফলে ভোটে ব্যাপক অনিয়ম হয়। পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারসহ সবার আচরণ ছিল পক্ষপাতমূলক। বিভিন্ন কেন্দ্র বন্ধ রেখে তারা কাজ করছিল। তাদের প্রশ্ন করলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। নাটোর-১ : আ’লীগের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম  সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে দাবি করেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী ওই ইউপির চেয়ারম্যান কেন্দ্রের ভেতরে অবস্থান নিয়ে ভোটারদের ঈগল প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করেন। প্রিসাজডিং কর্মকর্তা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিলে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান। তখন তারা তাকে আটক করলেও ভোট গ্রহণ শেষে ছেড়ে দেয়।

https://www.dailysangram.info/post/545988