৮ জানুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ৬:৪৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বিভিন্ন অভিযোগে ৩৭ প্রার্থীর ভোট বর্জন

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে নৌকায় সিল * ভয় দেখিয়ে রাতেই এজেন্টদের কাছ থেকে রেজাল্টশিটে স্বাক্ষর গ্রহণ

 

জালভোট, কারচুপি, এজেন্টদের মারধর, কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া এবং পুলিশের গুলিসহ নির্বাচনি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বিভিন্ন আসনে জাতীয় পার্টিসহ দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো ৩৭ প্রার্থীর বর্জনের খবর-

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) : এ আসনের প্রায় সব কেন্দ্রে নৌকায় সিল মারছে বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর শিকদার লোটন। তার নিজ এলাকায় রামচন্দ্রদী কেন্দ্রে নৌকার এজেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তিনি। এ সময় বাদানুবাদের একপর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে গুলি ছুড়লে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এসব কারণে রোববার ভোটের দিন সকাল ১০টায় তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) : ভোট কারচুপি, ভোটারদের বাধা, এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নির্বাচনি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার আহাম্মদ (ঈগল) ও আবুল হোসেন দীপু (ট্রাক)। সকাল ১১টার দিকে তারা এ ঘোষণা দেন। প্রশাসনের সহযোগিতায় নৌকায় সিল মারার অভিযোগও করেন তারা।

বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) : স্বতন্ত্র প্রার্থী এম আর জামিল হোসাইন (ঈগল) দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন দিয়ে ভোট বর্জন করেছেন। তিনি বলেন, মোরেলগঞ্জের পঞ্চাকরণ ইউনিয়নের সব কেন্দ্র থেকে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকার এজেন্টরা ব্যালটে সিল মেরেছে। এছাড়া রাত থেকে একজন কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভয় দেখিয়ে রাতেই আমার এজেন্টের কাছে রেজাল্ট সিটে স্বাক্ষর নিয়েছে। এসব অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমি ভোট বর্জন করেছি।

ভোলা-৩ : এ আসনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) মেজর (অব.) জসিম উদ্দিন। দুপুর ১২টায় নিজের ফেসবুকে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, অনিয়মের কারণে আমি সরে গেলাম।

সিলেট-২ : এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী (এহিয়া) ও আরও তিন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার দুপুর ২টায় তারা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। দেওকলস ইউনিয়নের ফতেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরীর সমর্থকরা জোর করে নৌকা প্রতীকে টেবিলকাস্টিং করে ভোট দেওয়ার অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন এহিয়া। ভোট বর্জনকারী অপর তিনজন হলেন এমপি ও গণফোরামের সূর্য প্রতীকের প্রার্থী মোকাব্বির খান, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুর রব মল্লিক ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথের মেয়র মুহিবুর রহমান। তাদের সবারই অভিযোগ, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে টেবিলকাস্টিং করছেন।

টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) : ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু এদিন দুপুর দেড়টায় নির্বাচন বর্জন করেন। গোপালপুরের ঝাওয়াইল নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, নৌকার কর্মীরা তার কর্মীদের ব্যাপক মারধর করেছেন। এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেননি। জাল ভোট দিয়েছেন। তারা হামলা চালিয়ে ঈগলের অনেক কর্মীকে আহত করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) : দিনের মধ্যভাগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী সার্জেন্ট (অব.) মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, মধুপুরের সব ভোটকেন্দ্রে আমার লোকদের ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা বের করে দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো ভোট নিয়ে নিচ্ছেন। তাই আমি এ প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করলাম।

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) : এদিন দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমন। তিনি বলেন, সকাল থেকে যে কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছি ভোটার উপস্থিতি ছিল শূন্যের কোঠায়। অথচ ব্যালট বাক্স অর্ধেকের বেশি ভরা। আমার এজেন্টদের ভয় দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। এ আর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার ও আমার গাড়ির ওপর বোমা হামলা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) : এজেন্ট ও প্রার্থীকে হত্যার হুমকি, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া, প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বাধা প্রদান এবং প্রশাসনের অসহযোগিতার প্রতিবাদে ভোট বর্জন করেছেন এ আসনের বিএনএম প্রার্থী মাওলনা আব্দুল মতিন।

কুড়িগ্রাম-৪ : জাতীয় পার্টির প্রার্থী একেএম সাইফুর রহমান বাবলু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন। ভোটের দিন দুপুরে এ ঘোষণা দেন তারা।

সাইফুর রহমান বলেন, সকাল থেকেই শুরু হয় জাল ভোট। আমার ফোনে বিভিন্ন জায়গা থেকে ভোটে অনিয়মের খবর আসে। আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঢাকা থেকে আনা ছাত্রলীগের ছেলেদের দিয়ে আমার নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে যান। দুপুরের পর জাল ভোট দেওয়া শুরু করেন তারা।

পাবনা-৪ : ঈগল মার্কার প্রার্থী পাঞ্জাব বিশ্বাস বিকালে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, কেন্দ্র দখল, টেবিল সিল, এজেন্ট বের করে দেওয়া, ভোট দানে বাধাসহ নানা অনিয়ম ও কারচুপি করা হয়েছে। আটঘরিয়ার বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকায় সিল মারা হচ্ছে বলে আমি প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ পুলিশ প্রশাসনে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি।

নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) : স্বতন্ত্র প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার বেলা সাড়ে ৩টায় তার দক্ষিণপাড়ার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সকাল থেকেই দুর্গাপুরের কাকরাকান্দা, নলজোড়া, আড়াপাড়া, কুমুদগঞ্জসহ কলমাকান্দার সিধলী, পাইলট স্কুল, লেঙ্গরাসহ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। জাল ভোট দেওয়ার কারণে আমি নির্বাচন বর্জন করলাম।

মুন্সীগঞ্জ-২ : বেলা ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা। এ সময় তিনি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে লৌহজংয়ের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, তিনি যেসব কেন্দ্রে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন সেখানে গিয়ে তাদের উপস্থিত পেয়েছি। এখন তিনি এসব অভিযোগ কেন করছেন আমি সেটি বুঝতে পারছি না। ভোট বর্জনের বিষয়টি আমাদের লিখিতভাবে তিনি জানাননি।

ঠাকুরগাঁও-১ : জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজাউর রাজী (লাঙ্গল) দুপুরে নির্বাচন বর্জন করেছেন। তিনি বলেন, বেলা ১১টার পর মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্রে নৌকার সমর্থকদের তাণ্ডব শুরু হয়। ওই কেন্দ্রে ভোট কক্ষে প্রকাশ্যে ৪০ থেকে ৫০ জন নৌকা প্রতীকে গণহারে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করলেও তারা পদক্ষেপ নেয়নি।

নড়াইল-২ : রোববার দুপুর দেড়টার দিকে নড়াইল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সাবেক এমপি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান ভোট বর্জন করেছেন। তিনি বলেন, দুপুরে আওয়ামী লীগের লোকজন চারিখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করে তাণ্ডব চালিয়ে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢোকানোর চেষ্টা চালায়। আমাদের লোকজনের বাধায় এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এ অনিয়ম সাময়িক বন্ধ থাকলেও পরে আবার তা শুরু হয়। একই ধরনের কারচুপি ও অনিয়ম তারাশি, সলুয়া, দুর্গাপুর, বোড়ামারা, লোহাগড়ার আর.এল পাশা ভোটকেন্দ্রসহ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে সংঘটিত হয়েছে।

যশোর-১ (শার্শা) : বিভিন্ন কেন্দ্রে বোমা হামলা, গুলি, ছুরিকাঘাতসহ ৫৫টি কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন।

এ বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আবরাউল হাসান মজুমদার বলেন, আমাদের না জানিয়ে তিনি ভোট বর্জন করেছেন। কোথায় কোথায় তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে সেটা তিনি আমাদের এখনও জানাননি।

কক্সবাজার-১ : স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি জাফর আলম রোববার দুপুর ৩টায় নিজের ফেসবুক পেজে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ফেবুকে লাইভ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বিশেষ গ্রুপের লোকজন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ট্রাকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে হাতঘডি মার্কায় সিল মারার সুযোগ করে দিচ্ছে। তাই আমি এ ভোট বর্জন করলাম।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) : বেলা ২টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের কার্যালয়ে এসে ভোট স্থগিত চেয়ে আবেদন দেওয়ার পর চলমান ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন এ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ।

তিনি বলেন, এ আসনে ১৬৭টি কেন্দ্রের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নেতৃত্বে ১৩০টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে। বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়। আবেদনে ভোট স্থগিত করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) : কারচুপি ও কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল বশর।

লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ভুট্টো বেলা ১টার দিকে উখিয়ায় তার নিজ অফিসে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল বশর দাবি করেন, কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি, জাল ভোট, এজেন্ট বের করে দেওয়া ও নজিরবিহীন অনিয়ম, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষপাত করে আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উখিয়ার ইউএনও তানভির হোসেন জানান, কোন প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে কেউ লিখিত বা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানাননি। ভোট ডাকাতি বা অনিয়মের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) : জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফুলপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এনায়েত হোসেন মন্ডল দুপুরে নির্বাচন বর্জন করেছেন। তিনি জানান, ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে আমাদের এজেন্ট বের করে দিয়ে ব্যালটে নৌকায় সিল মারা হয়েছে। প্রশাসনকে জানিয়েও সুফল পাইনি। এ নির্বাচন মানি না।

ফেনী-৩ : ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজি রহিম উল্লাহ কেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন। তিনি রোববার বিকাল তিনটায় সোনাগাজী হাজী রহিম উল্লাহ শপিং কমপ্লেক্সের নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, দুই উপজেলায় ১৪৪টি ভোটকেন্দ্রেই তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের সহযোগিতায় জাল ভোট দেওয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) : বেলা ৩টায় নৌকার সমর্থকরা সব কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এমএম শাহীন। একই অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্তী একেএম শফি আহমদ সলমানও ভোট বর্জন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এমএম শাহীন বলেন, আগে থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে কুলাউড়ায় জড়ো করে রাখা হয়। বিষয়টি রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছেও নির্বাচন বর্জনের বিষয়টি লিখিত আকারে জানিয়েছি।

একেএম শফি আহমদ সলমান বলেন, এটি ভোট ডাকাতির নির্বাচন। কুলাউড়ায় বগিরাগত এনে একযোগে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে।

কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) : সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এমপির প্রার্থীর কর্মীরা কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় ভোট দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান। রোববার বেলা ১২টায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি এ আসনে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান যুগান্তরকে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী (ফুলকপি) মিজানুর রহমানের লিখিত অভিযোগটি নির্বাচন কমিশনারের কাছে পাঠানো হবে।

খুলনা-১ : তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করেন, সারা দিন ভোটারের উপস্থিতির হার হতে পারে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ শতাংশ। তবে বটিয়াঘাটার আমতলা গঙ্গারামপুর কেন্দ্রে ৬০ শতাংশ দেখানো হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে ভোটে বড় ধরনের কারচুপি হয়েছে। এ কারণে তিনি নির্বাচন বর্জন করেছেন।

খুলনা-৩ : স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান সাথী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার দেখানোতে কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ৭নং ওয়ার্ডেও কাশিপুরের একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা হয়। এছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

কুমিল্লা-১০ : জাতীয় পার্টির প্রার্থী জোনাকী হুমায়ুন বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে একতরফা সিল মারার অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন। বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোণষা দিয়ে তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে ভোট বর্জনের বিষয়টি জানিয়েছি।

সিলেট-৪ : তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার দুপুর ১টায় তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা একেকজন ২০, ৫০ ও ১০০টি ভোট দিচ্ছেন। আমার এজেন্টদের বের করে দিচ্ছেন।

পাবনা-২ : নানা অনিয়ম, কারচুপি ও এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগে বিএনএম-এর প্রার্থী (নোঙ্গর) কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী ভোট বর্জন করেছেন। বিকাল ৪টার দিকে তিনি লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসকের (রিটার্নিং অফিসার) অফিসে জমা দেন।

এ আসনে কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী (সোনালী আঁশ) আবুল কালাম আজাদ।

পাবনা-৫ : ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী কমরেড জাকির হোসেন বিকাল ৩টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। সন্ধ্যায় তিনি যুগান্তরকে বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করে বুঝতে পারেন, এখানে আগেই বিজয়ী নির্ধারিত হয়ে গেছে। এজন্য তিনি এ ভোট বর্জন করেছেন।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/760551