২ জানুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৩৩

ফিরে দেখা ২০২৩

৬০ দলের নির্বাচন বর্জন

 

২০২৩ সালের অন্যতম আলোচিত ঘটনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা। তবে আগের দুই সংসদ নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও ভোট ডাকাতির একতরফা নির্বাচনের অভিযোগ তুলে এই তফসিল বর্জন করে রাজপথের সবচেয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ৬০টি সমমনা রাজনৈতিক দল।

এসব রাজনৈতিক দলগুলো তফসিল ঘোষণার পূর্ব থেকেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিল। সেই দাবিতে দীর্ঘদিন বিএনপির নেতৃত্বে তারা দাবি আদায়ে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। বিরোধী দলগুলোর দাবি উপেক্ষা করে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অনড় থাকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলটি।

অন্য দিকে ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দেয় বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা ৬০টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় ও নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে টানা হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করে দলগুলো। যেই কর্মসূচি সর্বশেষ রূপ নেয় অসহযোগ আন্দোলনে।

নির্বাচন বর্জন করা নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত ৬০টি দল হলো : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপি, জাতীয় পার্টি-বিজেপি (পার্থ), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, মুসলিম লীগ। গণতন্ত্র মঞ্চে থাকা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন। ১২ দলীয় জোটে থাকা জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), বাংলাদেশ এলডিপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা (রাশেদ প্রধান), জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি (ফারুক), ইসলামিক ঐক্যজোট, ন্যাপ ভাসানী, ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা (লুৎফর), বিকল্পধারা বাংলাদেশ (নুরুল আমিন বেপারী), গণদল, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি), বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ সাম্যবাদী, ডেমোক্র্যাটিক লীগ, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, পিপলস পার্টি। সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি), গণফোরাম, পিপলস পার্টি (আরেক অংশ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (আরেক অংশ), গণঅধিকার পরিষদ (রেজা), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পাটি, গণ অধিকার পরিষদ (নুর)। বাম গণতান্ত্রিক জোটের বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্কসবাদী), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন। ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চা, গণমুক্তি ইউনিয়ন, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মাহবুব), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাসদ।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার বিএনপিকে ভাঙার এবং বিএনপি জোট থেকে কিছু দলকে লোভ দেখিয়ে প্রহসনের নির্বাচনে নেয়ার চেষ্টা করে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কিছু নিকৃষ্ট লোভী ছাড়া কেউ সরকারের এই হীনকর্মের সঙ্গী হয়নি। সরকার ভুঁইফোড় দলগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনে আনার চেষ্টায় প্রমাণ হয়েছে তারা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে। এই একতরফা নির্বাচন তাদের বাঁচাতে পারবে না, তাদের নির্বাসনে পাঠাবে। যারা লোভে পড়ে সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তারা রাজনীতির আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছেন। সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে তাদের বেইমান হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/803135