৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১:১৬

চলনবিলের ১৬ নদ-নদী শুকিয়ে এখন মরা খাল 

 

আব্দুস ছামাদ খান, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: চলনবিল অঞ্চলের প্রায় ১৬টি নদ-নদী এখন সৌন্দর্য, পূর্ব জৌলুস ও স্বকীয়তা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। দখল, দূষণ ও ভরাটে  প্রধান নদী নন্দকুঁজা, গুমানি, আত্রাইসহ তুলসীগঙ্গা, মির্জা-মামুদ ও খলিসাডাঙ্গা নদী সংকুচিত হয়ে এখন মৃতপ্রায়। ফলে কৃষিজমির সেচকার্য ব্যাহতসহ দেশী মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। বেকার হয়েছে নদীনির্ভর জীবিকা অর্জনকারী মানুষগুলো। নৌকায় মালামাল পরিবহনে ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বর্ষা শেষে চলনবিলের নদী-নালা ও খাল-বিলে পানি থাকে না। তাই বন্ধ হয়ে গেছে নৌ চলাচল। পানি না থাকায় জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। ধান চাষ হচ্ছে এসব মরা নদীতে। অথচ এক সময় এসব নদীতেই বছরজুড়ে পানি থাকত। চলাচল করত ছোট-বড় নৌকা। এসব নদী আর নৌকাকে ঘিরেই চাঁচকৈড়, নাজিরপুর, খুবজীপুর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, আহম্মেদপুর, তাড়াশ, ধামাইচ, নাদোসৈয়দপুর, চাটমোহর, ছাইকোলা, অষ্টমনিষা, মির্জাপুর, ভাঙ্গুড়ায় গড়ে উঠেছিল বড় নৌবন্দর।

চলতো রমরমা ব্যবসা-বাণিজ্য। কালের বিবর্তনে সেসব এখন শুধুই ইতিহাস। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, নদীর পানিতে সেচ সুবিধাসহ ফসলের উৎপাদন খরচ কম হতো। এখন আর নদীর পানি দিয়ে সেচ হয়

না। একসময় নৌকায় করে শত শত মণ ধান, পাট, গম সরিষাসহ চলনবিলের সব কৃষিজাত পণ্য ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করতেন ব্যবসায়ীরা। মোকাম থেকেই নানা পণ্য এনে এঅঞ্চলে পাইকারি দামে বিক্রি করা হতো। নদীপথে কম খরচে সহজলভ্য পরিবহন সুবিধা ভোগ করলেও বর্তমানে পানি না থাকায় আগের মতো ব্যবসা করতে পারছেন না তারা। চলনবিল ও নদীরক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি মজিবর রহমান মজনু জানান, গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় মধ্যপাড়া থেকে চলনালী-কান্দিপাড়া, কান্টাগাড়ী বিল 

হয়ে পাটপাড়া, সোনাবাজু, চাকলেরবিল এবং পশ্চিমের চাপিলা হয়ে নন্দকুঁজা নদীতে মিলিত হয়েছে মির্জা-মামুদ নদ। এই নদীর সংযোগনালা বয়ে গেছে দক্ষিণের সিধুলী হয়ে চরকাদহ, ধারাবারিষা, চামটা বিলে। দখল ও ভরাটে এই নদের স্মৃতিচিহ্নই মুছে গেছে। নদীগুলো রক্ষায় সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপের দাবি জানান তিনি। এ ব্যাপারে নাটোর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ২ হাজার ১৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নাটোরের প্রধান নদী নারদ, বড়াল ও মুসাখাঁ মিলে ১৫৪ কিলোমিটার শাখা নদী পুনর্খননের জন্য পৃথক একটি প্রকল্প ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলেই ছোট-বড় নদীনালা খনন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

https://www.dailysangram.info/post/544732