২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৫:২৮

পেকুয়ায় ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে ব্যাংক কর্মকর্তাকে হাতুড়িপেটা

কক্সবাজারের পেকুয়ায় ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে এক ব্যাংক কর্মকার্তাকে হাতুড়িপেটা করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তাকে হাতুড়িপেটা করার পর তার বড় ভাইয়ের বসতঘরে ব্যাপক লুটতরাজ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গুরুতর আহত ওই কর্মকর্তার নাম এস এম ইখতিয়ার উদ্দিন (৪৫)। তাকে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে, ২৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। গুরুতর আহত ব্যাংক কর্মকর্তার নাম এস এম ইখতিয়ার উদ্দিন উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের শরৎঘোনা গ্রামের মৃত আবু সাঈদের ছেলে এবং ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কর্মরত রয়েছেন। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী মোছাম্মৎ রহিমা খানম বাদি হয়ে পেকুয়া থানায় বুধবার সকালে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকে প্রধান আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

পেকুয়া থানায় দায়েরকৃত লিখিত এজাহারে ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী দাবি করেছেন, তার স্বামী ২৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পেকুয়া চৌমুহনী থেকে বাড়ি ফেরার পথে পেকুয়া বাজারস্থ মিয়ার বাড়ি জামে মসজিদের রাস্তার সামনে পৌঁছা মাত্র পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা পেকুয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও একই এলাকার এছারুল হকের ছেলে মাইন উদ্দিন (২৪) এর নেতৃত্বে মো: আক্কাস (২২), এছারুল হক, (৪৭), নেজাম উদ্দিন (২০), মোজাম্মেল হক (৪৩), নেছারুল হক (৪০), আবু বক্কর (২০)সহ আরো অজ্ঞাত ১০-১২ জনের নেতৃত্বে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় তার স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তাকে হাতুড়িপেটা করে গুরুতর আহত করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা মাঈন উদ্দিন তার স্বামীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে বাজারের পথচারী লোকজন এগিয়ে এসে তার স্বামীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এ দিকে ব্যাংক কর্মকর্তাকে হাতুড়িপেটার ১ ঘণ্টা পর ছাত্রলীগ নেতা মাঈন উদ্দিনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক মগনামা শরৎঘোনা গ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তার বড় ভাই ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকের হোছাইনের বসতঘরের দরজা, জানালা ভাঙচুর ও ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে। বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের সংবাদ পেয়ে পেকুয়া থানার এসআই ইব্রাহিম পাশার নেতৃত্বে একদল পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে যায়। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই হামলাকারী ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। পেকুয়া থানার এসআই ইব্রাহিম পাশা জানান, খবর পেয়ে ব্যাংক কর্মকার্তার ভাইয়ের বাড়িতে সরেজমিনে যাই। পুলিশ যাওয়ার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ব্যাংক কর্মকার্তার বড় ভাই ও মগনামা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এস জাকের হোছাইন অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা আমার বসতঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর, বসতঘরে থাকা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, টিভি, কাপড়-চোপড়, আলমিরায় থাকা নগদ তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা ও তিন লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের চার ভরি স্বর্ণালঙ্কার, জমির দলিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায়। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে পেকুয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জায়গাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ব্যাংক কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিনের নেতৃত্বে আমার চাচা মোজাম্মেল হককে মারধর করে মুখের তিনটি দাঁত উপড়ে ফেলেছে । তবে, তার বাড়িঘরে কোনো ধরনের লুটপাট করা হয়নি। আমার এক ফুফাতো ভাই ব্যাংক কর্মকর্তার ভাইয়ের বসতঘরের জানালা ভাঙচুর করেছে বলে ছাত্রলীগ নেতা স্বীকার করেছেন।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: ইলিয়াছ জানান, আহত ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী বাদি হয়ে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। তদন্ত করে মামলা নেয়া হবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/801963