৫ ডিসেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:৩৭

মার্কিন শ্রমনীতি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্ট

উৎকণ্ঠায় ব্যবসায়ী মহল

 

‘আঁধার ঘরের সাপ, সারা ঘরেই সাপ’ প্রবাদের মতো অবস্থা হয়েছে দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বিশেষ করে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় পড়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ‘নতুন শ্রমনীতি’ কার্যকর হলে ‘বাংলাদেশে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা’ শঙ্কা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্টে জিএসপি বাতিল হতে পারে এ আশঙ্কায় ঘুম হারাম হয়ে গেছে। যেসব ব্যবসায়ী মহাসম্মেলন করে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন; তারাই এখন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি কমে যাওয়ায় দর কষাকষি এবং রাজনৈতিক সংকটের সুরাহার তাগিদ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যেই ডলার সংকটের কারণে অক্টোবর-নভেম্বর টানা দুই মাস রফতানিতে ধাক্কা লেগেছে। যুক্তরাষ্ট্রে গার্মেন্টস পণ্য রফতানি কমেছে। এছাড়াও গত পাঁচ বছরে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্টের কারণে জিএসপি বন্ধ হলে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান করা গার্মেন্টস শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলে কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপানও একই নীতি গ্রহণ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রমনীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নির্বাচন ঘিরে বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা খাত মার্কিন নীতির কষাঘাতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা আছে, এমতাবস্থায় নতুন এ শ্রমনীতির বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার আছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও রিজার্ভ সঙ্কটের মধ্যে পুরো বিষয়টি হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে গত ২০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে তাতে রাজনৈতিক কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকার কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছেন না। যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় যেতে বিএনপিসহ অর্ধ শতাধিক দলকে বাইরে রেখেই নির্বাচন করতে যাচ্ছে। ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ সংক্রান্ত জো বাইডেন সরকারের প্রত্যাশা উপেক্ষা করে ‘ডামি প্রার্থী’ দিয়ে নির্বাচনের আয়োজন করেছে। আবার ২৭ দেশ নিয়ে গঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্টে বাংলাদেশকে নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে জিএসপি বাতিল হতে পারে এমন ইংগিত প্রকাশ পেয়েছে। ফলে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। কারণ বাংলাদেশ থেকে যে পণ্য রফতানি হয় তার প্রায় ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে এবং এক-তৃতীয়াংশ ইইউ দেশগুলোতে যায়। এ ছাড়াও যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপানে রফতানি হয় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক। ফলে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিলে গার্মেন্টস শিল্প টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে। ইতোমধ্যেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে আন্দোলন চলছে। সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন শ্রমিকরা মেনে নেয়নি। এ নিয়ে শ্রমিক আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ৩ জন শ্রমিক নিহত হয়েছে। অবশ্য গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, শ্রম আইনের সংশোধন ও বেজা আইনের মাধ্যমে শ্রম অধিকারের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশে। শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রকে এই অগ্রগতি জানানো হবে। এছাড়া শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। নতুন শ্রমনীতি ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শ্রম পরিবেশ আরও উন্নত হোক। বাংলাদেশও এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

ভারত ও চীনে উৎপাদিত রফতানি পণ্যের বাজার বাংলাদেশ। ওই দুই দেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল অংকের অর্থে বাংলাদেশ পণ্য আমদানি করে থাকে। অথচ বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বৃহত্তম বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক ওই সব দেশে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মূদ্রা আয় করে থাকে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ২০ শতাংশের গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২৮৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি; যেটা ছিল মোট রপ্তানির ১৬.৪২ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ে ৩০৭৩.৯ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় এবার ছিল ৬.৭৯ শতাংশ কম। এছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোই কার্যত বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রফতানি বাজার। ওই সব দেশে তৈরি পোশাক রফতানির প্রায় ৩৮ শতাংশ যায়। দেশের রফতানি আয়ে সিংহভাগই নির্ভর করে তৈরি পোশাক খাতের ওপর। রাজনৈতিক কারণে টানা দুই মাস এই খাতে আয় কম হওয়া নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক আয়ে। নভেম্বরে ৪০৫ কোটি ২৫ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরে নভেম্বরে ছিল ৪৩৭ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। এ সময়ে আয় কমেছে ৩২ কোটি ৬৪ লাখ ডলার (৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ)। অক্টোবর মাসেও পোশাক রপ্তানি ১৪ শতাংশ কম ছিল। আয় বেশি কমেছে ওভেন পোশাকের। নভেম্বরে এই ধরনের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৭৩ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ কম। নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৩১ কোটি ২৬ লাখ ডলারের যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ কম। পোশাক রফতানি কমে যাওয়ায় উদ্বেগের কথা জানিয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমইএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফজলুল হক বলেছেন, আমরা শঙ্কিত যে কোনোভাবে যদি আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয় তাহলে আমাদের এ ব্যবসাটা চালানো কঠিন থেকে কঠিনতম পর্যায়ে চলে যাবে। রপ্তানির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে আমাদের ‘অন্নদাতা’। আমরা যদি তাদের কথা না শুনি, মতের বাইরে চলে যাই, তাহলে তারা এরকম বিধিনিষেধ আরোপ করতেই পারে।

রফতানি বাণিজ্যের পাশাপাশি আস্থা সংকট, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও ফ্লোর প্রাইস চালুর কারণে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশি কোম্পানি ও ব্যক্তিদের বিনিয়োগ ২০ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যা ছিল ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। গেল অর্থবছরে যে বিনিয়োগ হয়েছে এর মধ্যে ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার এসেছে বিভিন্ন বন্ডে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, সুশাসনের অভাব, টাকার অবমূল্যায়ন ও ফ্লোর প্রাইস ব্যবস্থা চালুর কারণে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বেশ কয়েকটি রোড-শো করলেও তা কাজে আসেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগ শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠি প্রকাশ হওয়ার পর। গত ২০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মিশন থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ওই চিঠি পাঠানো হয়। শ্রম ইস্যুতে সম্ভাব্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারকে সতর্ক করা সেই চিঠিতে বাংলাদেশ এই শ্রমনীতির অন্যতম লক্ষ্য হতে পারে বলে বলা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে শ্রমিক অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি কতটা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের জন্য? বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে আলোচিত ওই চিঠিটির একটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল রাজনৈতিক প্রসঙ্গ। সেখানে বলা হয়েছে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় মার্কিন এই নীতিতে বাংলাদেশের জন্য শঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের চেষ্টা করতে পারে। অথচ বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো সংকটময় হয়ে উঠছে। বিএনপিকে বাইরে রেখেই ২০১৪ সালের মতো নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করতে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

কী বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক অধিকার নীতিতে? ১৬ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শ্রমনীতি স্মারকে সই করার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বক্তৃতায় উঠে এসেছিল বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। তিনি বলেছিলেন, যারা হুমকি দেয়, ভয় দেখায়, যারা ইউনিয়ন নেতা, শ্রমিক অধিকার রক্ষাকারী বা শ্রমিক সংগঠনকে আক্রমণ করে তাদের আমরা জবাবদিহি করব। নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যে শাস্তি, ভিসা নিষেধাজ্ঞার মতো যতো বিষয় রয়েছে তার সবই ব্যবহার করা হবে। আমরা কল্পনা আক্তারের মতো মানুষদের সাথে থাকতে চাই। কল্পনা আক্তার একজন বাংলাদেশি গার্মেন্টসকর্মী এবং গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকারকর্মী। তিনি বলেছেন যে, তিনি জীবিত রয়েছেন কারণ মার্কিন দূতাবাস তার পক্ষে কাজ করেছে।

মার্কিন এই নতুন শ্রমনীতি নিয়ে প্রথম দিকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যে যারা মহাসম্মেলনে বক্তৃতা করেন তাদের কেউ কেউ মনে করেন, পোশাক খাতে আন্তর্জাতিক বেশির ভাগ আইনকানুন বাংলাদেশের কারখানাগুলোয় বাস্তবায়ন হওয়ায় ওই নীতি নিয়ে খুব বেশি উদ্বেগের কিছু নেই। আবার অনেক ব্যবসায়ীদের মতে, এখনো শ্রম খাতে অনেক অনিয়ম বা অসন্তোষ রয়েছে, যা চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কথা মার্কিন ব্যবসায়ীরা শুনবে না। জো বাইডেন সরকারের প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে সমস্যা হবে না।’ বাস্তবতা হচ্ছে নির্বাচন, সংঘাতময় রাজনীতি এমন নানা ইস্যুতে ইতোমধ্যেই আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের অনেকটা টানাপড়েন শুরু হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে সরকার ‘ডামি প্রার্থী’ দিয়ে পাতানো নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। একদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠেছে। অন্যদিকে বিএনপির প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মীকে গত এক মাসে গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থ শতাধিক নেতাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। হরতাল-অবরোধ চলছে জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের দাবিতে। লাখ লাখ নেতাকর্মী ঘরছাড়া। এতে রাজনৈতিক কারণে মার্কিন বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা বাড়ছে। এর সাথে শ্রমিক অধিকারের বিষয় যুক্ত হয়ে ভয়াবহ ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও এই শ্রমনীতি ব্যবহার করা হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, রাজনৈতিক জায়গাগুলোকে, বিশেষ করে নির্বাচনকেন্দ্রিক যে সমস্ত অনিশ্চয়তা অস্থিরতা রয়েছে সেই জায়গাগুলোকে সরকার কীভাবে অ্যাড্রেস করবে তার ওপরও নির্ভর করতে পারে আমাদের ওপর শ্রমনীতির প্রয়োগ কোন পর্যায়ে হতে পারে। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার মতো কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি যাতে না হয় সেজন্য সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে গতকাল শ্রম অধিকার সংক্রান্ত জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যলোচনায় বিশেষ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় পররাষ্ট্র, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভাশেষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশের কিছু শর্ত ছিল। শ্রম আইন, বেজা আইনে মার্কিন যে চাওয়া ছিল তা অনেকটাই পূরণ করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে তিনবার শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশ কারও দয়ায় নয়, পণ্যের গুণগত মান, আন্তর্জাতিক চাহিদা ও শ্রমিক অধিকার রক্ষা করেই তৈরি পোশাক রফতানি করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের শ্রম আইন ও শ্রম অধিকারের বিষয়গুলো বেশ কিছু পালন হয়েছে। তবে তারা চায় আরও অগ্রগতি হোক।

https://dailyinqilab.com/national/article/621682