১৭ নভেম্বর ২০২৩, শুক্রবার, ৩:৪৯

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পোশাক রপ্তানি কমেছে

 

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় দুই বাজার হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত ৪ মাসে এই বড় দুই বাজারের মধ্যে ইইউতে রপ্তানি বেড়েছে ৪ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে নতুন বাজারেও রপ্তানি বেড়েছে ১৭ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩ শতাংশ। কানাডায়ও রপ্তানি প্রায় দেড় শতাংশ কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় রপ্তানি কমলেও চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় আছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। 

বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। সে সময় প্রবৃদ্ধি ছিল ১০.২৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।

এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫.৯৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ১ হাজার ৩৯৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল।

রোববার বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান সংবাদ সম্মেলনে পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমেছে ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে প্রথম ৮ মাসে ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি কমেছে ১৪ শতাংশ। পোশাক রপ্তানি পরিস্থিতি নিয়ে ফারুক হাসান বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল নভেম্বর থেকে ক্রয়াদেশ বাড়বে। তবে মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ক্রয়াদেশ আসার গতি শ্লথ হয়েছে। 

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে বাংলাদেশ থেকে ইইউ’র দেশগুলোতে ৭০৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৬৭৯ কোটি ডলারের পোশাক। সেই হিসেবে রপ্তানি বেড়েছে ৩.৯৯ শতাংশ। গত চার মাসে ইইউ’র ২৭ দেশের মধ্যে ১২টিতে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমেছে। বাকি ১৫টিতে বেড়েছে। ইইউ’র দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও পোল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি হয়। ইইউ’র এই শীর্ষ ৬ গন্তব্যের মধ্যে শুধু জার্মানিতে রপ্তানি কমেছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে ২৫৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৩ শতাংশ কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে নতুন বাজারে ২ হাজার ৮৬৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। নতুন বাজারের মধ্যে ভারত ছাড়া জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। 

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের ৫৬ শতাংশের গন্তব্যের শীর্ষ পাঁচ দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন ও ফ্রান্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে এই ৫ দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে। 

জার্মানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ৬৬৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ১১ শতাংশ কম। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়েছে ১৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ১৪.৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত ৪ মাসে স্পেন ও ফ্রান্সের বাজারে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে যথাক্রমে ১৩১ ও ১৮১ কোটি ডলার। এর মধ্যে স্পেনে ১৭ শতাংশ ও ফ্রান্সে রপ্তানি বেড়েছে আড়াই শতাংশ।

বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএ’র মুখপাত্র মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরের মধ্যে অপ্রচলিত বাজারে আমাদের পোশাক রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের মধ্যে ২.৪৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ১৭.০১ শতাংশ বেড়ে ২.৮৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়াতে রপ্তানি যথাক্রমে ২৩.০৩ শতাংশ, ৪৫.৪৪ শতাংশ এবং ২৯.৮৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে ভারতে আমাদের পোশাক রপ্তানি ১২.৮ শতাংশ কমেছে।

https://mzamin.com/news.php?news=83894