৫ নভেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১০:২৬

ওমরাহ পালনরত ব্যক্তির নাম মামলায়

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর অবরোধসহ চলমান আন্দোলনে টঙ্গীতে এক ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে অবস্থানরত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ওই মামলাটি দায়ের করা হলেও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে অভিযোগ আসামি ও স্থানীয়দের। অন্য দিকে গত এক সপ্তাহে খুলনার থানাগুলোতে ১৬টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রায় দুই শ’ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন।

 

খুলনায় ১৬ মামলা, প্রায় দুই শ’ গ্রেফতার
খুলনা ব্যুরো জানায়, ঢাকার ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ থেকে শুরু করে গত এক সপ্তাহে খুলনার থানাগুলোতে পুলিশ ১৬টি মামলা করেছে। এ সময়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রায় দুই শ’ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন জানা গেছে।

মেট্রোপলিটন এলাকায় তিনটি ও জেলায় ১৩টি মামলা হয়েছে। মামলায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী ছাড়া দৈনিক সমকাল পত্রিকার সাংবাদিক শেখ হারুন অর রশীদও রয়েছেন। আটকদের মধ্যে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মাহমুদ আলী, দাকোপ উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুল মান্নান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, জামায়াতের খুলনা নগর শাখার সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম রয়েছেন। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলা ও মহানগরের ৭৫ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে ২০২১ ও ২২ সালের বিভিন্ন মামলায়। অবরোধের সময় ৬৫ জনকে আটক করে নতুন মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে। নতুন দায়েরকৃত ১৫ মামলার সবই বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা হয়েছে। জেলার ফুলতলায় ১, দিঘলিয়ায় ১, বটিয়াঘাটায় ১, তেরোখাদায় ১, পাইকগাছায় ১, কয়রায় ২, রূপসায় ২, দাকোপ ২ ও ডুমুরিয়ায় দুইটি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া মহানগরীর খুলনা সদর থানায় একটি, সোনাডাঙ্গা থানায় একটি ও আড়ংঘাটা থানায় একটি নতুন মামলা করা হয়েছে।

এ দিকে একজন পেশাদার সাংবাদিকের নাম এজাহারে আসায় নিন্দা জানিয়েছেন কয়রা উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।

টঙ্গীতে গাড়ি ভাঙচুর হয়নি, তবুও আসামি ৩০ : আছে ওমরাহ পালনরত ব্যক্তির নামও
গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি জানান, মিছিল ও গাড়ি ভাঙচুরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি, কোনো গাড়ি মালিকের অভিযোগও নেই। তবুও মিছিল ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে ৩০ জনকে আসামি করে গত বৃহস্পতিবার মামলা হয়েছে টঙ্গী পশ্চিম থানায়। মামলায় ১১ জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অথচ মামলার আগেই গ্রেফতারকৃতদের বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয় বলে স্বজনদের অভিযোগ। গ্রেফতারকৃতদের কয়েকজন জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও বাকি আসামিদের বেশির ভাগই কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নন বলে জানা গেছে। আসামিদের একজন টঙ্গীর মুদাফা এলাকার জামায়াত নেতা মকবুল হোসেন সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে গেছেন। অথচ তিনিও গাড়ি ভাঙচুরের সাথে জড়িত বলে এজাহারে পুলিশের দাবি।

এ মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়। যাদের সবাইকে জামায়াত ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উল্লেখ করা বেশির ভাগ আসামিই জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন।

এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ৫২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এই মামলার আসামি মকবুল হোসেন ওমরাহ করতে গিয়েছেন তা আমি জানি। এ ছাড়া অনেকেই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন। আমরা জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় পর্যায়ে রাজনীতি করার কারণে এলাকার সবাইকে চিনি। তাই এসব ক্ষেত্রে আমাদের মতামত নেয়া প্রয়োজন। নইলে দলের বিষয়ে লোকজনের ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং আমাদের ওপর চাপ আসে।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের দায়ের করা এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গী পশ্চিম থানার এসআই শরীফ হোসেন বলেন, ভাঙচুর নয়, ভাঙচুরের প্রস্তুতিকালে আমরা ১১ জনকে লাঠিসোটাসহ হাতেনাতে ধরেছি। ওমরাহ পালনরত ব্যক্তিকেও আসামি করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তদন্তে কাগজপত্র দেখে প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই আসামির নাম বাদ দেয়া হবে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/789152